প্রবল বৃষ্টিতে নেপালে বেড়ে উঠেছে নদীর জলস্তর। ছবি: রয়টার্স।
প্রবল বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে নেপালে। মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১১২ জনের। এখনও বহু মানুষ নিখোঁজ। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন। উদ্ধারকাজে নেমেছে দেশের বিপর্যয় মোকাবিলা দল। তবে বৃষ্টি না থামায় নদীগুলির জলস্তর বেড়েই চলেছে। থেকে থেকে হড়পা বান পরিস্থিতি আরও প্রতিকূল করে তুলছে। বাসিন্দারা অনেকে বলছেন, এই ধরনের বিপর্যয় আগে কখনও দেখেননি।
নেপাল পুলিশের তরফে শনিবার জানানো হয়েছে, অন্তত ৬৪ জনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। তবে বৃষ্টির কারণে বাধা পাচ্ছে উদ্ধারকাজ। নদীর জলস্তর যে ভাবে বাড়ছে, তাতে মৃতের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। শুক্রবার থেকে বহু জায়গায় ধস নেমেছে। রাস্তার উপর দিয়ে বইছে নদী। অনেক এলাকার সঙ্গে ইতিমধ্যে যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। নেপাল প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, শুক্রবার থেকে পর পর বেশ কয়েকটি নদীতে হড়পা বান এসেছে। যার ফলে পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। নেপাল পুলিশের মুখপাত্র ডন বাহাদুর কর্কি সংবাদ সংস্থা এএফপিকে শনিবার বলেছেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত ৩৬ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালে তাঁদের চিকিৎসা চলছে। অন্তত ২০০টি হড়পা বান এবং ধসের ঘটনা ঘটেছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। অনেকগুলি বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।’’
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর পরিস্থিতিও খারাপ। রাজধানীর আশপাশে থাকা প্রায় সব ক’টি নদীই দু’কূল ছাপিয়ে গিয়েছে। তীব্র স্রোতে নদীগুলি রাস্তার উপর দিয়েই বইছে। উঁচু জায়গায় আপাতত আশ্রয় নিয়েছেন সাধারণ মানুষ।
নেপালের জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর তিন হাজার কর্মী উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছেন। জলমগ্ন রাস্তায় নৌকা করে ঘুরছেন তাঁরা। হেলিকপ্টারের মাধ্যমেই প্রত্যন্ত এবং বিচ্ছিন্ন এলাকাগুলিতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে ত্রাণ।
অনেক পর্যটকও আটকে পড়েছেন নেপালে। শুক্রবার বিকেল থেকে কাঠমান্ডু বিমাবন্দরে সমস্ত ঘরোয়া উড়ান বাতিল করা হয়েছে। মোট ১৫০টি বিমান বাতিল হয়েছে এখনও পর্যন্ত। পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরে নেপালে বৃষ্টি সংক্রান্ত বিপর্যয়ে অন্তত ২০০ জনের মৃত্যু হয়েছে।