পরমাণু হামলার প্রস্তুতি দেখছেন পুতিন। ছবি: রয়টার্স।
ইউক্রেন যুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের প্রয়োজন হবে না বলে জানালেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। মস্কোয় আন্তর্জাতিক কূটনীতি বিশেষজ্ঞদের একটি সভায় তিনি বলেন, ‘‘ইউক্রেন যুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের কোনও পরিকল্পনা আমাদের নেই। আমি মনে করি, তার প্রয়োজনও হবে না।’’
ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে বুধবার থেকে পরমাণু হামলার মহড়া শুরু করেছে রুশ সেনা। সে দেশের পরমাণু অস্ত্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত বাহিনী ‘নিউক্লিয়ার স্ট্র্যাটেজিক ফোর্স’-এর সেই মহড়া পর্যবেক্ষণও করেছেন পুতিন। রাশিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থা আরআইএ প্রকাশিত ছবিতে টেলিভিশনের পর্দায় রুশ প্রেসিডেন্টকে পরমাণু যুদ্ধের প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণ করতে দেখা গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পুতিনের মন্তব্য ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছেন কূটনীতিবিদদের একাংশ। তাঁদের মতে, আন্তর্জাতিক চাপের মুখেই পরমাণু হামলার বিষয়ে সুর নরম করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।
ওই আলোচনাসভায় আমেরিকা এবং তার সহযোগী দেশগুলিকেও নিশানা করেন পুতিন। তিনি বলেন, ‘‘ইউক্রেনকে ঘিরে আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দেশগুলি নোংরা এবং বিপজ্জনক খেলা খেলছে।’’ নিরপেক্ষ দেশগুলিকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে উস্কে দেওয়ার জন্যই বার বার পরমাণু হামলার আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে জানিয়ে পুতিনের মন্তব্য, ‘‘আমরা কিন্তু এক বারও পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের কথা বলিনি।’’
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পুতিনের ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ঘোষণার পর প্রথম বার রুশ ‘নিউক্লিয়ার স্ট্র্যাটেজিক ফোর্স’-এর মহড়া হয়েছে। এর আগে স্থল এবং ডুবোজাহাজ থেকে পরমাণু অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা করেছে রুশ ফৌজ। আমেরিকার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট নেটো এবং ইউক্রেনের উপর চাপ বাড়াতে পুতিন কৃষ্ণসাগরের গভীরে পরমাণু বোমা পরীক্ষা করতে পারেন বলে সম্প্রতি কয়েকটি পশ্চিমী সংবাদমাধ্যম দাবি করেছিল। বুধবারের পর সেই সম্ভাবনা আরও প্রবল হল বলে সামরিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন।
জ়াপোরিজিয়া, খেরসন-সহ কিছু এলাকায় গত ১০ অক্টোবর থেকে নতুন করে হামলা শুরু করেছে রুশ সেনা। সামরিক লক্ষ্যবস্তুর পাশাপাশি নির্বিচারে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাতেও ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলির দেওয়া অস্ত্রের সাহায্যে সেই হামলা প্রতিরোধের চেষ্টা চালাচ্ছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির অনুগত বাহিনী। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া পরমাণু হামলা চালাতে পারে বলে সম্প্রতি আমেরিকা, ব্রিটেনের মতো কয়েকটি দেশ আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ বিষয়ে মস্কোকে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন।