ইমরান খান। — ফাইল চিত্র।
ভোট নিয়ে অনিশ্চয়তার আবহেই আদালতের লড়াইয়ে বড় জয় পেল প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। দলের নির্বাচনী প্রতীক ‘ব্যাট’ কেড়ে নেওয়ার বিষয়ে ‘ইলেকশন কমিশন অব পাকিস্তান’ (ইসিপি) যে পদক্ষেপ করেছিল, বৃহস্পতিবার পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্ট তা খারিজ করে দিয়েছে। এ বিষয়ে পেশোয়ার হাই কোর্টের রায়ও বাতিল করা হয়েছে।
শীর্ষ আদালতের এই রায়ের ফলে পাক পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ‘ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি’ এবং প্রাদেশিক আইনসভাগুলির আসন্ন নির্বাচনে ‘ব্যাট’ প্রতীকেই লড়তে পারবেন পিটিআই প্রার্থীরা। প্রসঙ্গত, গত অগস্টে ইসলামাবাদের বিশেষ আদালত তোশাখানা মামলায় তিন বছরের জেলের সাজা ঘোষণার পরেই ইমরানের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এর পর ইসলামাবাদ হাই কোর্ট সেই সাজায় স্থগিতাদেশ দিয়ে ইমরানের জামিন মঞ্জুর করেছিল। কিন্তু রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য ফাঁসের অভিযোগে ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট’ (ওএসএ)-এ মামলা চলায় তিনি মুক্তি পাননি।
এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনী প্রতীক ‘ব্যাট’ বজায় রাখতে গত নভেম্বরে পিটিআইয়ের সাংগঠনিক নির্বাচন সেরে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিল পাক নির্বাচন কমিশন। এর পর ডিসেম্বরের গোড়ায় পিটিআই-এর নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন ইমরান ঘনিষ্ঠ নেতা গোহর আলি খান। পাশাপাশি পিটিআইয়ের সাংগঠনিক বৈঠকে সেক্রেটারি জেনারেল হিসাবে নির্বাচিত হন ওমর আয়ুব খান। ১৯৯৬ সালে পিটিআই তৈরির পরে এই প্রথম বার ইমরানের পরিবর্তে অন্য কাউকে নির্বাচিত করা হয় দলীয় চেয়ারম্যান হিসাবে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন জানায়, পিটিআইয়ের সাংগঠনিক বিধি মেনে ইমরানের উত্তরসূরি নির্বাচন হয়নি। ফলে প্রতীক কেড়ে নেওয়া হবে।
কমিশনের ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে পেশোয়ার হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পিটিআই নেতৃত্ব। ২৬ ডিসেম্বর কমিশনের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিলেও ৩ জানুয়ারি তা প্রত্যাহার করেছে হাই কোর্ট। এর পরে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন পিটিআই নেতৃত্ব। প্রসঙ্গত, আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পাক পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ‘ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি’ এবং প্রাদেশিক আইনসভাগুলির নির্বাচন। শেষ হয়েছে মনোনয়ন পর্বও। কিন্তু গত ৫ জানুয়ারি পাক পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সেনেটে ‘প্রবল শৈত্যপ্রবাহ এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি’র কারণে ভোট পিছিয়ে দেওয়ার বিষয়ে সর্বসম্মত প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। ফলে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।