মহাত্মা গান্ধী (বাঁ দিকে), কেমাল কিলিচদারোগ্লু (ডান দিকে)। — ফাইল ছবি।
তুরস্কের প্রেসিডেন্টকে শক্ত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে বিরোধীদের সম্মিলিত প্রার্থী হলেন কেমাল কিলিচদারোগ্লু। তিনি ‘তুরস্কের গান্ধী’ নামে অধিক পরিচিত। কেমাল তুরস্কের প্রধান ধর্মনিরপেক্ষ দল ‘রিপাবলিকান পিপলস পার্টি’ বা সিএইচপির নেতা। মতাদর্শগত ভাবে কেমালের দল মধ্য-বামপন্থায় বিশ্বাসী। আসন্ন মে মাসের ভোটে রিচেপ তায়িপ এর্ডোয়ান হারাতে বদ্ধপরিকর বিরোধীরা।
এর্ডোয়ানের দু’দশকের কর্তৃত্ববাদী শাসনের অবসান চায় তুরস্কের বিরোধী জোট। তাই ধর্মনিরপেক্ষ দলের নেতা কেমালকেই সামনে তুলে ধরা হয়েছে। সম্প্রতি তুরস্কের ছ’টি বিরোধী দলের জোট সর্বসম্মত ভাবে কেমালের নাম ঘোষণা করে। তার পরেই দেশে ‘মৌলিক’ পরিবর্তনের আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছেন নাগরিকদের একটি অংশ। কেমাল নিজেও জানিয়েছেন, জিতলে তাঁর প্রধান লক্ষ্য হবে সকলের সম্মতি নিয়ে সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্যে দেশের সরকার চালানো। যাতে তুরস্ক তার হৃতগৌরব পুনরুদ্ধারে সফল হয়।
জ্বালাময়ী ভাষণের জন্য পরিচিত অতি দক্ষিণপন্থী নেতা এর্ডোয়ানের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ভাবে কেমালের চেয়ে যোগ্য প্রার্থী তুরস্কে নেই। এমনটাই দাবি বিরোধী জোটের। কেমাল সে দেশে পরিচিত ভারতের জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর নামে। তাঁকে তুরস্কের গান্ধী বলেই লোকে চেনেন। গান্ধীর মতোই জাতীয়তাবাদের রাজনীতির কারিগর কেমালের সামনে কিন্তু কঠিন লড়াই।
আগামী ১৪ মে তুরস্কে প্রেসিডেন্ট এবং পার্লামেন্ট নির্বাচন হবে। সেই ভোটেই এর্ডোয়ানকে উৎখাত করার পণ নিয়ে জোট বাঁধে ৬টি বিরোধী দল। তারা সর্বসম্মত প্রার্থী হিসাবে তুলে ধরে তুরস্কের গান্ধী কেমালকে। তাঁর দল সিএইচপির প্রতিষ্ঠাতা আধুনিক তুরস্কের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব মোস্তফা কেমাল আতাতুর্ক। যদিও দীর্ঘদিন সিএইচপি ক্ষমতার বাইরে রয়েছে।
৭৪ বছরের প্রবীণ কেমাল বামপন্থী ধাঁচের অর্থনীতিবিদ হিসাবেও সমাধিক পরিচিত। ছিলেন উচ্চপদস্থ আমলা। ২০০২ সালে প্রথম বার তিনি পার্লামেন্টে নির্বাচিত হন। ২০১০ সাল থেকেই সিএইচপির নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন তুরস্কের গান্ধী। অত্যন্ত পরিশ্রমী এবং মৃদুভাষী কেমালকে তাঁর স্বভাবের জন্যই তুরস্কের গান্ধী নামে অভিহিত করা হয়।