আমেরিকার ৪৬তম প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা মহলে বিভিন্ন দায়িত্বে রয়েছেন বহু ভারতীয় বংশোদ্ভূত। আসুন, দেখে নিই কোন কোন ভারতীয় বংশোদ্ভূতের সাহায্যে এগিয়ে চলবে বাইডেন-হ্যারিস সরকার।
আমেরিকার প্রেসিডেন্টের পার্সোনেল অফিসে ডেপুটি ডিরেক্টর হিসেবে মনোনীত হয়েছেন গৌতম রাঘবন। ভারতের জন্মগ্রহণ করলেও গৌতমের শৈশব কেটেছে আমেরিকার সিয়াটলে। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পরে তিনি জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি থেকে পলিটিক্যাল ম্যানেজমেন্টে স্নাতকোত্তর করেন। এর আগে বাইডেন ফাউন্ডেশনে তিনি উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত আইশা শাহের নাম ইতিমধ্যেই আলোচিত। তাঁর পরিবার কাশ্মীর থেকে আমেরিকায় গিয়ে থিতু হয়েছিল। নর্থ ক্যারোলিনার ডেভিডসন কলেজ থেকে তিনি স্নাতক হয়েছিলেন। হোয়াইট হাউসের ডিজিটাল স্ট্র্যাটেজির অফিসে তিনি দায়িত্ব পেয়েছেন পার্টনারশিপ ম্যানেজারের।
সনিয়া আগরওয়াল গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেয়েছেন হোয়াইট হাউসের ডোমেস্টিক ক্লাইমেট পলিসি বিভাগে। এর আগে তিনি আমেরিকার তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের ক্ষেত্রেও দীর্ঘ দিন কাজ করেছেন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত সোনিয়ার জন্ম ও বেড়ে ওঠা আমেরিকার ওহায়ো শহরে। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি স্নাতক হন।
গরিমা বর্মাকে পছন্দ করেছেন জিল বাইডেন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই তরুণী কাজ করবেন আমেরিকার ফার্স্ট লেডির ডিজিটাল ডিরেক্টর হিসেবে। তিনি এর আগে কাজ করেছেন আমেরিকার বিনোদন দুনিয়ায়। প্যারামাউন্ট পিকচার্স এবং ওয়াল্ট ডিজনি কম্পানির এবিসি নেটওয়ার্কে দীর্ঘ দিন কর্মরত ছিলেন তিনি।
ভারতে জন্মগ্রহণ করলেও গরিমা বড় হয়েছেন আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া শহরে। জো বাইডেন-কমলা হ্যারিসের প্রচারাভিযানে তিনি কাজ করেছিলেন কনটেন্ট স্ট্র্যাটেজিস্ট এবং অডিয়েন্স ডেভেলপার হিসেবে।
শান্তি কালাথিল কাজ করবেন মানবাধিকার বিভাগে। লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্স এবং ক্যালিফর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী শান্তি এর আগে হংকংয়ে এশিয়ান ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল-এর সাংবাদিক ছিলেন।
গুজরাতের বেদান্ত পটেলকে বাইডেন মনোনীত করেছেন সহকারী প্রেস সচিব হিসেবে। বাইডেনের প্রচার অভিযানে তিনি অংশ নিয়েছিলেন। তাঁর জন্ম গুজরাতে। বড় হয়েছেন ক্যালিফোর্নিয়ায়। তিনি ক্যালিফোর্নিয়া রিভারসাইড এবং ফ্লোরিডা ইউনিভার্সিটির প্রাক্তন ছাত্র।
জো বাইডেন এবং কমলা হ্যারিসের নির্বাচনী প্রচারের সময় সাব্রিনা সিংহ ছিলেন কমলার প্রচার সচিব। তাঁকেই বাইডেন পছন্দ করেছেন হোয়াইট হাউের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারির পদে।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত উজরা জেয়া দীর্ঘ দিন ধরেই আমেরিকার কূটনীতিক মহলে পরিচিত নাম। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকার সময়েও তিনি হোয়াইট হাউসে উচ্চপদে ছিলেন। কিন্তু ট্রাম্পের বর্ণবিদ্বেষী আচরণের অভিযোগে চাকরি থেকে ইস্তফা দেন। নতুন সরকারে উজরা কাজ করবেন গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার বিভাগের সচিব হিসেবে।
সমীরা ফজিলি ছিলেন ওবামা প্রশাসনের সিনিয়র নীতি উপদেষ্টা। এ বার বাইডেন জমানায় তাঁকে দেখা যাবে আমেরিকার ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের ডেপুটি ডিরেক্টর পদে।
বঙ্গতনয়া সুমনা গুহকে দেখা যাবে বাইডেন-হ্যারিসের সরকারে দক্ষিণ এশিয়া সংক্রান্ত বিদেশনীতি বিভাগে। এর আগেও তিনি এই বিষয়ে কাজ করেছেন বাইডেন-হ্যারিসের প্রচার পর্বে।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত নেহা গুপ্তকে দেখা যাবে হোয়াইট হাউসের অ্যাসোসিয়েট কাউন্সিল পদে।
বাইডেনের শাসনপর্বে হোয়াইট হাউসে প্রযুক্তি ও জাতীয় নিরাপত্তা বিভাগে সিনিয়র ডিরেক্টরের দায়িত্ব পেয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত তরুণ ছাবড়া।
হোয়াইট হাউসে বাইডেন-হ্যারিস প্রশাসনের ডেপুটি অ্যাসোসিয়েট কাউন্সেল-এর দায়িত্ব পেয়েছেন রীমা শাহ।
হোয়াইট হাউসের কোভিড রেসপন্স টিমের উপদেষ্টা পদে থাকবেন বিদুর শর্মা। ওবামা প্রশাসনেও তিনি কর্মরত ছিলেন স্বাস্থ্যনীতি উপদেষ্টা পদে।
ভারতীয় অভিবাসী নীরা টন্ডনকে বাইডেন মনোনীত করেছেন বাজেট চিফ পদে। হোয়াইট হাউসের ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বাজেট বিভাগে ভারতীয় বংশোদ্ভূত হিসেবে নীরাই প্রথম দায়িত্ব পেয়েছেন।
আইনজীবী মালা আদিগার শিকড় ছড়িয়ে আছে কর্নাটকের উদুপি জেলার কাক্কুঞ্জে জেলায়। তিনি নিযুক্ত হয়েছেন আমেরিকার ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেনের পলিসি ডিরেক্টর পদে।
আমেরিকার ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণের পরে বাইডেন প্রথম যে বক্তৃতাটি দিলেন, সেটি লিখে দিয়েছেন বিনয় রেড্ডি। বিনয়ের আদি বাড়ি তেলঙ্গনার পথিরেড্ডিপেতা গ্রামে। তাঁর জন্ম অবশ্য ওহায়োতে। মায়ামি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ওহায়ো স্টেট ইউনিভার্সিটির এই প্রাক্তন ছাত্র দীর্ঘদিন ধরেই বাইডেনের ভাষণ লেখকের কাজ করছেন। উপদেষ্টার পাশাপাশি তিনি নিযুক্ত হয়েছেন ভাষণলেখা বিভাগের অধিকর্তা হিসেবেও।
ওবামা প্রশাসনে দীর্ঘ দিন আমেরিকার সার্জেন জেনারেল পদে কর্মরত ছিলেন বিবেক মূর্তি। বাইডেনের কোভিড-১৯ টাস্ক ফোর্সের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকবেন বিবেক। জন্মসূত্রে তাঁর পরিবার আদতে কর্নাটকের।
ওবামা প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন বনিতা গুপ্ত। তাঁকে বাইডেন জমানায় দেখা যাবে অ্যাসোসিয়েট অ্যাটর্নি জেনারেল পদে।
ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের ডেপুটি ডিরেক্টরের দায়িত্ব পেয়েছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী ভরত রামমূর্তি।