ইমরান খান। — ফাইল চিত্র।
জেলে বন্দি করে রেখে প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিচারকে ‘বেআইনি’ বলে চিহ্নিত করল ইসলামাবাদ হাই কোর্ট। মঙ্গলবার ইমরান আইনজীবী নাঈম পানজুথা বলেন, ‘‘কারাগারে ইমরানের বিচার বেআইনি ঘোষণা করেছে ইসলামাবাদ হাই কোর্ট।’’
রওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলে তাঁকে বন্দি রেখে ‘গোপন রাষ্ট্রীয় তথ্য ফাঁসের’ মামলায় বিচার নিয়ে পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন দফতরের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আবেদন করেছিলেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর চেয়ারম্যান ইমরান। সেই মামলার শুনানিতেই মঙ্গলবার এই মন্তব্য করেছে ইসলামাবাদ হাই কোর্ট।
অক্টোবরের গোড়ায় ইমরান এবং তাঁর দলের নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশির বিরুদ্ধে ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট’ (ওএসএ)-এ মামলার শুনানি শুরু হয়েছে জেল আদালতে। ওই মামলায় দোষী প্রমাণিত হলে পাক আইন অনুযায়ী ফাঁসির সাজাও হতে পারে। ওএসএ মামলায় অভিযুক্ত হওয়ায় আগামী জানুয়ারিতে পাক জাতীয় আইনসভার নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না ইমরান।
অভিযোগ, ২০২২ সালের গোড়ায় ওয়াশিংটনে নিযুক্ত পাক রাষ্ট্রদূত একটি গোপন নথি ইসলামাবাদে পাঠিয়েছিলেন। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান এবং তাঁর তিন সহযোগী সেই গোপন নথি ফাঁস করেছিলেন। যদিও ইমরানের অভিযোগ, তিনি পাক সেনার একাংশ এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ শিবিরের চক্রান্তের শিকার।
গত অগস্টে তোশাখানা মামলায় ইমরানের তিন বছরের জেলের সাজায় স্থগিতাদেশ দিয়েছিল ইসলামাবাদ হাই কোর্ট। তাঁর জামিনের আবেদনও মঞ্জুর করা হয়েছিল। কিন্তু ওএসএ-তে অভিযুক্ত হওয়ায় অটক জেল থেকে প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী মুক্তি পাননি। তোশাখানা দুর্নীতির অভিযোগের সূত্রপাত গত বছর ইমরান ক্ষমতা হারানোর পরে। দুবাইয়ের এক ব্যবসায়ী দাবি করেন, বিদেশ থেকে ইমরানের উপহার পাওয়া ঘড়ি তিনি ২০ লক্ষ ডলারে কিনে নিয়েছিলেন। ওই ব্যবসায়ী জানান, ২০১৯ সালে যখন ইমরানের দল পাকিস্তানের শাসনক্ষমতায় ছিল, তখন সৌদি আরবের রাজা মহম্মদ বিন সলমন তাঁকে ওই বহুমূল্য ঘড়ি উপহার দিয়েছিলেন।
গত ৫ অগস্ট ইসলামাবাদের বিশেষ আদালত তোশাখানা মামলায় ইমরানকে দোষী সাব্যস্ত করে তিন বছরের জেলের শাস্তি ঘোষণার পরই গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়েছিল তাঁকে। এর পর পাক আইন মেনে সে দেশের নির্বাচন কমিশন পিটিআই-এর চেয়ারম্যান ইমরানের পাঁচ বছর ভোটে লড়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও ইসলামাবাদ হাই কোর্ট নিম্ন আদালতের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দিয়ে ইমরানের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছিল।