২০০৮ সালে মুম্বইয়ের তাজ হোটেলে পাক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-তইবার হামলা। — ফাইল চিত্র।
মুম্বইয়ে ২৬/১১ হামলার দেড় দশক পরে পাক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-তইবাকে ‘সন্ত্রাসবাদী সংগঠন’ ঘোষণা করল ইজ়রায়েল। ঘটনাচক্রে, প্যালেস্টাইনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধে গাজ়ার সেনা অভিযানের ৪৬ দিনের মাথায়। আগামী রবিবারের মুম্বই হামলার বর্ষপূর্তির পাঁচ দিন আগে।
ইজ়রায়েলি বিদেশ মন্ত্রকের তরফে মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘ভারতের তরফে কোনও অনুরোধ না এলেও লস্কর-ই-তইবাকে আনুষ্ঠানিক ভাবে ‘সন্ত্রাসবাদী সংগঠন’ হিসাবে ঘোষণার বিষয়ে সমস্ত সরকারি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে।”
গত ৭ অক্টোবর গাজ়া থেকে ইজ়রায়েলি ভূখণ্ডে হামাসের হামলার পরেই কড়া ভাষায় নিন্দা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ফোনে বলেছিলেন, “এই কঠিন সময়ে ভারতবাসী দৃঢ় ভাবে ইজ়রায়েলের পাশে রয়েছে। ভারত দ্ব্যর্থহীন ভাষায় সমস্ত ধরনের সন্ত্রাসবাদের নিন্দা করছে।’’ কিন্তু এখনও পর্যন্ত হামাসকে ‘সন্ত্রাসবাদী সংগঠনে’র তালিকাভুক্ত করে ‘নিষিদ্ধ’ ঘোষণা করেনি নয়াদিল্লি।
লস্করকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ ঘোষণায় তেল আভিভের ‘সময়’ নির্বাচনে তাই কূটনৈতিক কৌশল দেখছে বিদেশ মন্ত্রকের একটি অংশ। ওই অংশের মতে, গত সাত দশকের ‘নিরপেক্ষ’ (আদতে কিছুটা প্যালেস্টাইন-ঘেঁষা) বিদেশনীতি থেকে মোদী জমানায় অনেকটা সরে এলেও এখনও পুরোপুরি ইজ়রায়েলের পাশে দাঁড়ায়নি নয়াদিল্লি। বরং রাষ্ট্রপুঞ্জে সাম্প্রতিক ভোটাভুটিতেও গাজ়ায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব সমর্থন করেছেন ভারতের প্রতিনিধি।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, এই পরিস্থিতিতে তাই ২০০৮ সালে মুম্বইয়ে হামলাকারী পাক সংগঠনকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ তালিকাভুক্ত করে নয়াদিল্লিকে ‘বার্তা’ দিতে চেয়েছে নেতানিয়াহু সরকার। প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে ইজ়রায়েল সফরের সময় থেকেই মোদীর সঙ্গে নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। প্রকাশ্যে মোদীকে ‘দোস্ত’ বলেও সম্বোধন করেছেন ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী। বলেছেন ‘বিপ্লবী নেতা’ও! ২০১৮-য় নেতানিয়াহুর ভারত সফরের সময় যৌথ বিবৃতিতে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের’ অঙ্গীকার করেছিল নয়াদিল্লি এবং তেল আভিভ। যদিও তখন হামাস বা লস্করকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলে চিহ্নিত করেননি মোদী এবং নেতানিয়াহু সরকার!