Iran Hijab Law

হিজাব আইন অমান্যকারী প্রতিবাদীদের জন্য এ বার বিশেষ মনোচিকিৎসাকেন্দ্র তৈরি করছে ইরান সরকার

হিজাব আইন যাঁরা মানবেন না, সেই সমস্ত মহিলার মনোচিকিৎসার বন্দোবস্ত করতে চলেছে ইরান। সে দেশের সংবাদমাধ্যমকে এমনটাই জানিয়েছেন ইরানের নারী এবং পরিবার সংক্রান্ত বিভাগের প্রধান।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২৪ ১৩:১৪
তেহরানে ইসলামিক আজ়াদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অন্তর্বাস পরে প্রতিবাদ তরুণীর।

তেহরানে ইসলামিক আজ়াদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অন্তর্বাস পরে প্রতিবাদ তরুণীর। —ফাইল চিত্র।

বাধ্যতামূলক হিজাব আইন যাঁরা মানবেন না, সেই সমস্ত মহিলার মনোচিকিৎসার বন্দোবস্ত করতে চলেছে ইরান। এমনকি এই চিকিৎসার জন্য বিশেষ ক্লিনিকও খোলা হচ্ছে। সে দেশের সংবাদমাধ্যমকে এমনটাই জানিয়েছেন ইরানের নারী এবং পরিবার সংক্রান্ত বিভাগের প্রধান মেহরি তালেবি দারেস্তানি। ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর প্রতিবেদন অনুসারে, দারেস্তানি ইরানের সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, যাঁরা হিজাব পরতে চান না, ক্লিনিকগুলিতে তাঁদের ‘বিজ্ঞানসম্মত এবং মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসা’ করা হবে।

Advertisement

ইরান এবং বিশ্বের মানবাধিকার সংগঠনগুলি অবশ্য ইরান প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে। হিজাব-বিরোধী অবস্থানকে ইরানের গোঁড়া ধর্মীয় শাসন মনোরোগ হিসাবে দেখছে কি না, সেই প্রশ্নও উঠছে। মানবাধিকার কর্মীদের দাবি, চিকিৎসার নামে হিজাব-বিরোধী মহিলাদের ভয় পাওয়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ব্রিটেনে কর্মরত ইরানের সাংবাদিক সিমা সাবেত এই সিদ্ধান্তকে ‘ভয়ঙ্কর’ বলে বর্ণনা করেছেন।

ইরানে মহিলাদের পোশাকের ক্ষেত্রে কড়া ফতোয়া রয়েছে। সে দেশে মহিলাদের আবশ্যিক ভাবে মাথা ঢেকে রাখতে হয় হিজাব পরে। রাস্তায় বার হলে সব সময় ঢিলেঢালা পোশাক পরার নিয়ম। ইরানের প্রাক্তন ধর্মগুরু আয়াতোল্লা খোমেইনির পর বর্তমান ধর্মগুরু আয়াতোল্লা আলি খামেনেইও এই ফতোয়া জারি রেখেছেন। তা ভাঙলে কড়া শাস্তির বিধানও রয়েছে সে দেশে।

সম্প্রতি এই পোশাক-ফতোয়ার প্রতিবাদে ইরানের রাজধানী তেহরানে ইসলামিক আজ়াদ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া আহু দারইয়াই প্রকাশ্যে অন্তর্বাস পরে হেঁটেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে নিয়ে গিয়েছিল ইরানের পুলিশ। পরে প্রশাসন থেকে জানানো হয়, তরুণী মানসিক ভাবে সুস্থ নন। তাঁকে এক মানসিক রোগের চিকিৎসাকেন্দ্রে রাখা হয়েছে বলে একাধিক সংবাদমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে।

২০২২ সালে ইরানি তরুণী মাহসা আমিনিকেও হিজাব না পরার ‘অপরাধে’ তুলে নিয়ে গিয়েছিল ইরানের নীতিপুলিশ। ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। মাহসার মৃত্যুর পর গোটা ইরানে যখন প্রতিবাদের ঝড় বয়ে গিয়েছিল, সেই সময়ে গ্রেফতার করা হয়েছিল প্রতিবাদী এক কুর্দিশ র‌্যাপারকে। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় তেহরানের আমিনাবাদ মনোস্বাস্থ্যকেন্দ্রে। গত মাসে সেখান থেকে ছাড়া পেয়েছেন তিনি। অভিযোগ, স্বীকারোক্তি আদায়ের দাবিতে মানসিক হাসপাতালের ভিতরে অকথ্য অত্যাচার করা হয় ওই র‌্যাপারের উপর।

Advertisement
আরও পড়ুন