WB Tab Scam

ট্যাব-কাণ্ডে এ বার মালদহ থেকেই গ্রেফতার ব্যাঙ্কের গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের মালিক! বাজেয়াপ্ত নথি

ট্যাব-কাণ্ডে আগেই মালদহ থেকে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। অন্য দিকে, উত্তর দিনাজপুর থেকে গ্রেফতার করা হয় তিন জনকে। এই ঘটনায় সিট গঠন করে তদন্তে নেমেছে কলকাতা পুলিশও।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বৈষ্ণবনগর শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২৪ ১১:৫০
ট্যাব-কাণ্ডে মালদহ থেকে গ্রেফতার আরও এক জন।

ট্যাব-কাণ্ডে মালদহ থেকে গ্রেফতার আরও এক জন। —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

ট্যাব-কাণ্ডে আরও এক জনকে গ্রেফতার করল পূর্ব বর্ধমান জেলার পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে বৈষ্ণবনগরের চকসেহেরদী গ্রাম থেকে সুব্রত বসাক নামের এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ওই যুবক একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের মালিক। অভিযুক্তের বাড়ি থেকে ল্যাপটপ এবং বেশ কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ট্যাব প্রতারণাকাণ্ডে শুক্রবার পর্যন্ত শুধু মালদহ থেকেই ৬ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

Advertisement

ট্যাবের টাকা হাতানোর জন্য মঙ্গলবার প্রথমে এক জনকে, পরে চার জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ধৃত চার জনের সকলেই বৈষ্ণবনগরের বাসিন্দা। ধৃতেরা হলেন রকি শেখ, পিন্টু শেখ, শ্রবণ সরকার এবং জামাল শেখ। তাঁদের মধ্যে রকি এবং পিন্টু চকসেহেরদী গ্রামেরই বাসিন্দা। বাকিরা কৃষ্ণপুর এলাকায় থাকেন। পুলিশ জানায়, ধৃত সকলেরই সাইবার ক্যাফে আছে। সেই সাইবার ক্যাফেতে বসেই প্রতারণাচক্র চালাতেন তাঁরা। বুধবার ট্যাব-কাণ্ডে আরও এক জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে শ্রবণ কালিয়াচক তিন নম্বর ব্লকের তৃণমূল এসসি সেলের ব্লক সভাপতি জিতেন্দ্রনাথ সরকারের পুত্র। শ্রবণের দোকান থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয় ল্যাপটপ, হার্ডডিক্স এবং পেনড্রাইভ।

পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্ট ‘হ্যাক’ করে টাকা তোলার অভিযোগে মঙ্গলবার গ্রেফতার হন বৈষ্ণবনগরেরই বাসিন্দা হাসেম আলি। ওই দিনই একই অভিযোগে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর থেকে ধরা পড়েন আশারুল হোসেন। তিনি রামগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা। অপর দুই ধৃতের নাম সাদ্দিক হোসেন ও মোবারক হোসেন। তাঁরা দু’জনেই চোপড়া থানার দাসপাড়া এলাকার বাসিন্দা। পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্ট ‘হ্যাক’ করে তাঁরাই ট্যাব কেনার টাকা হাতিয়েছেন বলে অভিযোগ।

রাজ্য সরকার ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের অধীনে ট্যাব কেনার জন্য একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের এককালীন ১০ হাজার টাকা দেয়। সেই টাকা সরাসরি ঢোকে পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। অভিযোগ, এক হাজারেরও বেশি পড়ুয়ার টাকা অ্যাকাউন্টে ঢোকেনি। কোথাও কোথাও আবার অভিযোগ, এক জনের টাকা চলে গিয়েছে অন্য জনের অ্যাকাউন্টে। এ ছাড়াও, ‘হ্যাক’ করে ট্যাবের টাকা পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে হাতানোর অভিযোগ উঠেছে। সবচেয়ে বেশি অভিযোগ উঠেছে পূর্ব বর্ধমান থেকে। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে ধরপাকড় শুরু করেছে পুলিশ।

এখনও পর্যন্ত রাজ্যের অন্তত ১৫টি জেলা জড়িয়েছে ট্যাব কেলেঙ্কারিতে। পড়ুয়াদের জন্য রাজ্যের বরাদ্দ লক্ষ লক্ষ টাকা পৌঁছে গিয়েছে সাইবার অপরাধীদের হাতে। তা প্রকাশ্যে আসার পর কলকাতায় একাধিক অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তার তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ট্যাব জালিয়াতিচক্রের আঁতুড়ঘর উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া এবং তার আশপাশের এলাকা। শুধু তা-ই নয়, গোটা চক্রের মাথা এক জন বলেই আপাতত মনে করছেন লালবাজারের তদন্তকারীরা।

Advertisement
আরও পড়ুন