ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের কাজে সাফল্য পেয়েছে ইরান। ছবি: সংগৃহীত।
দ্রুতগতিতে পরমাণু বোমা বানানোর প্রয়োজনীয় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ইরান। ভূগর্ভস্থ পরমাণু কেন্দ্রে এ কাজে নির্ণায়ক সাফল্য পেয়েছে তারা। বুধবার এমনই জানানো হয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্টে।
পশ্চিম এশিয়া জুড়ে অশান্তির আবহে ইরানের এই উদ্যোগে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। ভিয়েনায় রাষ্ট্রপুঞ্জের সংগঠন আইএইএ (আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা)-র রিপোর্টে জানানো হয়েছে, চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইরান প্রায় ২৭৫ কিলোগ্রাম ৬০ শতাংশ পরিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম তৈরির কাজে সফল হয়েছে।
এর আগে গত নভেম্বরের রিপোর্টে বলা হয়েছিল, তেহরানের হাতে সাড়ে ৯২ কিলোগ্রাম ৬০ শতাংশ পরিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী, বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে ইরানের ২০ শতাংশের বেশি পরিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদনে ছাড় রয়েছে। তার বেশি সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন নিষেধ। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরেই সে কাজ করেছে তারা। আমেরিকা-সহ কয়েকটি পশ্চিমি দেশ এবং ইজ়রায়েল মনে করে ইরানের পরমাণু বিদ্যুৎ কর্মসূচির আসল উদ্দেশ্য পরমাণু অস্ত্র তৈরি করা।
যদিও এর আগে আইএইএ-কে ইরান জানিয়েছে, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্যই ৬০ শতাংশ পরিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন করা হচ্ছে। সাধারণ ভাবে পরমাণু বোমা তৈরি করতে গেলে ৯০ শতাংশ পরিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম প্রয়োজন। এখনও তেহরান সেই দক্ষতা অর্জন করতে পারেনি বলেই আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মত। তবে ৪২ কিলোগ্রাম ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম ব্যবহার করে কম ক্ষমতাসম্পন্ন পরমাণু বোমা বানানো সম্ভব।
তা ছাড়া পশ্চিম এশিয়ার কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, পরমাণু সেন্ট্রিফিউজ (যা অস্ত্র নির্মাণের কাজে ব্যবহৃত হতে পারে) তৈরির কাজেও সাফল্য পেয়েছে ইরান। এর আগে নাতান্জ-এ পরমাণু জ্বালানি উৎপাদন কেন্দ্রেও চুক্তি ভেঙে অতিরিক্ত সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদনের অভিযোগ উঠেছিল ইরানের বিরুদ্ধে। তারা যাতে গোপনে পরমাণু বোমা বানানোর প্রস্তুতি চালিয়ে যেতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তিতে সই করিয়েছিল আমেরিকা এবং রাশিয়া। এমনকি, ইরান থেকে সমস্ত মজুত তেজস্ক্রিয় ইউরেনিয়াম আইসোটোপ নিয়ে চলে যাওয়া হয়েছিল। সাম্প্রতিক সময়েও একাধিকবার ইরানের পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিমান হামলা চালিয়েছে ইজ়রায়েল।