—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
শনিবার ভোরে দু’দফায় ইরানে হামলা চালিয়েছে অন্তত ১০০টি ইজ়রায়েলি যুদ্ধবিমান। সঙ্গে ছিল হানাদার ড্রোনও। শনিবার ভোরে রাজধানী তেহরান-সহ ইরানের তিন স্থানে হামলা চালায় ইজ়রায়েলি বাহিনী। তার পোশাকি নাম ‘অপারেশন ডেজ় অফ রিপেনট্যান্স’ (বাংলা তর্জমায়, ‘অনুতাপের অভিযানের দিন’)।
ইজ়রায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)-এর দাবি, গত ১ অক্টোবরের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাব দিতে ইরানের ‘নির্দিষ্ট সামরিক লক্ষ্যে’ বিমান হামলা চালানো হয়েছে। পশ্চিমি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এই হামলায় পঞ্চম প্রজন্মের এফ-৩৫ লাইটনিং-২ মাল্টিরোল ফাইটার জেটের পাশাপাশি মাটিতে লক্ষ্যবস্তুতে হামলার উপযোগী এফ-১৫আই র্যাম ‘গ্রাউন্ড অ্যাটাক জেট’ ব্যবহার করা হয়েছে হামলায়।
পাশাপাশি ইরানের বায়ুসেনার সম্ভাব্য প্রত্যাঘাতের মোকাবিলার উদ্দেশ্যে হামলাকারী বিমানবহরের সঙ্গী হয়েছিল এফ-১৬আই সুফা এয়ার ডিফেন্স জেট। সেই সঙ্গে ছিল হানাদার ড্রোন ‘হেরন’-এর নতুন সংস্করণ। হাজার কিলোমিটারেরও বেশি দূরত্ব উড়ে এসে ইরান ফৌজের রাডার-নজরদারি এড়িয়ে তেহরান, কারাজ়স সিরাজ শহরের পাশাপাশি ইলাম এবং কুর্জ়েস্তান প্রদেশে অন্তত ২০টি লক্ষ্যে আঘাত হানে তারা। উচ্চ প্রযুক্তির জ্যামার ব্যবহার করে রাডার নজরদারিকে ফাঁকি দিয়ে তিন দফায় হামলা চালানো হয়।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর ইজ়রায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত হয়েছিলেন লেবাননের সশস্ত্র শিয়া বাহিনী হিজ়বুল্লার প্রধান হাসান নাসরাল্লা। তার জবাবে গত ১ অক্টোবর ইজ়রায়েলি ভূখণ্ডে প্রায় ২০০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সাহায্যে হামলা চালিয়েছিল ইরান সেনার ‘রেভোলিউশনারি গার্ডস অ্যারোস্পেস ফোর্স’। মূলত তাদেরই ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন ঘাঁটিগুলিকে শনিবার নিশানা করেছিল আইডিএফ। যদিও ইরানের দাবি, ‘সামান্য কিছু ক্ষয়ক্ষতি’ হলেও তাদের সামরিক পরিকাঠামো অক্ষত। সেই সঙ্গে ইরান সরকারের নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম তাসনিমের হুঁশিয়ারি— ‘‘আমরা সমানুপাতিক প্রতিশোধ নেব।’’ ইজ়রায়েলি হামলায় দুই সেনার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে তেহরান।
এই আবহে ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার সরাসরি হুমকি দিয়ে বলেছে, ‘‘কোনও রকম অসংযত পদক্ষেপের পরিণতি হবে ভয়ঙ্কর।’’ প্রসঙ্গত, শনিবারের হামলার সময় ইজ়রায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সদর দফতরে একটি ভূগর্ভস্থ কক্ষে (বাঙ্কার) ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যালান্ট। তাঁরা হামলার ‘লাইভ টেলিকাস্ট’ দেখছিলেন। ইজ়রায়েল সেনার মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাঘারি ইরানকে হুঁশিয়ারি বলেন, ‘‘ভবিষ্যতে আবার কোনও ভুল করলে এ ভাবেই তার জবাব দেওয়া হবে।’’