আড়াআড়ি ভাবে ফাটল ধরেছে তুরস্কের শহরে। ছবি: রয়টার্স।
ভূমিকম্পের জেরে তুরস্কের একটি শহর প্রায় দু’ভাগ হয়ে গিয়েছে। শহরের বুকে বিশাল বড় ফাটল ধরেছে। রাস্তা, মাঠ, পাহাড় এবং জঙ্গল বরাবর সেই ফাটল ধরা পড়েছে ড্রোন ক্যামেরায়। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল গাজিয়ানটেপের পার্শ্ববর্তী প্রদেশ কাহরামানমারাসের ছোট শহর তেভেকেলিতে ভূমিকম্পের জেরে বিশাল ফাটল ধরেছে। দেখে মনে হবে, মাঝখান থেকে কেউ যেন চাপ দিয়ে শহরটিকে আড়াআড়ি ভাবে ভেঙে ফেলেছে।
তেকেভেলির পাশেই ছোট্ট একটি গ্রাম তেপেহান। সেই গ্রামেও বিশাল ফাটল ধরেছে। গ্রামবাসীরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। ফাটল বরাবর গাছাপালা, বিদ্যুতের খুঁটি, রাস্তার ব্যারিকেড সব উপড়ে গিয়েছে। তেপেহানের এক বাসিন্দা মেহমেট তেমজিখান জানিয়েছেন, এখনও আতঙ্কে ঘুমোতে পারছেন না গ্রামবাসীরা। ভূমিকম্পের জেরে গ্রামটিতেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
তেমজিখানের কথায়, “সোমবার ভোরে প্রবল একটা ঝাঁকুনিতে ঘুম ভেঙে গিয়েছিল। বাইরে বেরিয়ে দেখি সব লোকজন আতঙ্কে ছোটাছুটি করছেন। সকলে মিলে রাস্তায় বেরিয়ে অপেক্ষা করছিলাম। বেশ কয়েকটি বাড়ি চোখের সামনে ধসে গেল। আতঙ্ক আরও ঘিরে ধরেছিল। একটা সময় মনে হচ্ছিল আর বাঁচব না।”
This drone footage shows cracks slicing across fields, roads, streams and hillsides, caused by the devastative earthquake that killed thousands of people in Turkey https://t.co/8HFqm8DMVY pic.twitter.com/Ax7jry7Xl6
— Reuters (@Reuters) February 10, 2023
কম্পনের জেরে তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তেও বিশাল ফাটল ধরেছে। ইউরোপিয়ান আর্থ-অবজার্ভিং স্যাটেলাইট সেন্টিনেল-১-এ এই ফাটলের দৃশ্য ধরা পড়েছে। ভূমধ্যসাগরের উত্তর-পূর্ব প্রান্ত বরাবর সেই ফাটলের দৈর্ঘ্য ৩০০ কিলোমিটার। সেন্টার ফর দ্য অবজারভেশন অ্যান্ড মডেলিং অফ আর্থকোয়েকস, ভলক্যানোস অ্যান্ড টেকটনিকস (কমেট)-এর অধ্যাপক টিম রাইট জানিয়েছেন, ভয়ানক তীব্রতার ভূমিকম্পে এই ধরনের ফাটল ধরে।
তুরস্ক এবং সিরিয়ার ভূমিকম্পে ইতিমধ্যেই মৃত্যুর সংখ্যা ২৪ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। এই মৃত্যুমিছিল কোথায় গিয়ে থামবে কেউ জানে না। ধ্বংসস্তূপের নীচে এখনও বহু মানুষ চাপা পড়ে রয়েছেন বলে আশঙ্কা করছেন প্রশাসন। কম্পনের পর প্রায় ৬ দিন কেটে গিয়েছে, ধ্বংসস্তূপ থেকে শুধু লাশ বেরোচ্ছে।