US Presidential Debate

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে ব্যক্তিগত আক্রমণ, বিতর্কসভায় ‘গোলাবর্ষণ’ কমলা ও ট্রাম্পের

আমেরিকায় ভোটের আর আট সপ্তাহ বাকি। ট্রাম্প না কমলা— কে হবেন পরবর্তী প্রেসিডেন্ট? সে নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। শুরু হয়ে গিয়েছে তোড়জোড়ও। দীর্ঘ নির্বাচনী প্রচারের পর এই প্রথম মুখোমুখি বিতর্কসভায় অংশ নিলেন তাঁরা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:২৭
(বাঁ দিকে) ডোনাল্ড ট্রাম্প। কমলা হ্যারিস (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) ডোনাল্ড ট্রাম্প। কমলা হ্যারিস (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

সভার শুরুতে একে অপরের সঙ্গে হাত মেলালেন। তার পর শুরু হল দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মুখোমুখি বিতর্ক। গর্ভপাত, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, অর্থনীতি থেকে আবাসন সংকট— বাদ গেল না কিছুই! এ ভাবেই মঙ্গলবার গভীর রাতে পেনসিলভেনিয়ায় এবিসি নিউজ় আয়োজিত মুখোমুখি বিতর্কসভায় (প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেট) প্রথম বার ডেমোক্র্যাট-প্রার্থী কমলা হ্যারিসের মুখোমুখি হলেন রিপাবলিকান-প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প।

Advertisement

অর্থনীতির প্রসঙ্গ উঠতেই মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠার গল্প ভাগ করে নেন কমলা। তিনি জানান, প্রেসিডেন্ট হলে পারিবারিক এবং ক্ষুদ্র ব্যবসাগুলিকে সাহায্য করবেন। এর পর ট্রাম্পকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘আর উনি প্রেসিডেন্ট হলে কোটিপতিদের এবং বড় বড় কর্পোরেশনগুলিকে কর ছাড় দেওয়া হবে!’’ বেকার সমস্যা, কোভিডকালীন অচল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা থেকে শুরু করে অর্থনীতির বেহাল দশার জন্য প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকেই দায়ী করেন কমলা। দাবি করেন, ট্রাম্পের তৈরি করে যাওয়া ‘আবর্জনার স্তূপ’ সাফ করতে বাইডেন সরকারকে বহু কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতেই ব্যক্তিগত আক্রমণের দিকে ঝোঁকেন ট্রাম্প। কমলাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘‘উনি মার্ক্সবাদী। ওঁর বাবাও মার্ক্সবাদী ছিলেন। ডেমোক্র্যাটরা গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর!’’ পাশাপাশি, প্রেসি়ডেন্ট হলে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামিয়ে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী। ব্যক্তিগত আক্রমণে অবশ্য বিচলিত হননি কমলা। হাসিমুখেই শুনেছেন সব ‘অভিযোগ’। রাশিয়া নিয়ে ট্রাম্পকে ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর হুঁশিয়ারি, ‘‘পুতিন আপনাকে গ্রাস করবে’’।

প্রসঙ্গত, আমেরিকায় ভোটের আর আট সপ্তাহ বাকি। ট্রাম্প না কমলা— কে হবেন পরবর্তী প্রেসিডেন্ট? সে নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। শুরু হয়ে গিয়েছে তোড়জোড়ও। কিন্তু দীর্ঘ নির্বাচনী প্রচারের পর এই প্রথম মুখোমুখি বিতর্কসভায় অংশ নিলেন তাঁরা। সভার শুরুতে হেসে করমর্দনও করলেন! এর সঙ্গে সঙ্গেই অবসান হল প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কসভায় একে অপরকে হাত মিলিয়ে সম্ভাষণ না করার দীর্ঘ আট বছরের ধারার। এর আগে গত জুন মাসে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ট্রাম্পের প্রথম রাউন্ডের ‘প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেট’ হয়েছিল। সভার শুরুতে নিয়ম মতোই কেউ কারো সঙ্গে হাত মেলাননি। বিতর্ক শুরুর পরেও প্রতিপক্ষকে নাজেহাল করে ছাড়েন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট তথা আসন্ন নির্বাচনের রিপাবলিকান প্রার্থী। ফলস্বরূপ জনমত সমীক্ষাগুলিতেও এগিয়ে যান ট্রাম্প। এর অব্যবহিত পরেই ডেমোক্র্যাট জাতীয় সম্মেলনে বাইডেনের স্থানে প্রার্থী হিসাবে মনোনীত করা হয় কমলা হ্যারিসকে।

তার পর থেকে অবশ্য অনেকটাই বদলেছে আমেরিকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি। জনমত সমীক্ষা থেকে সংগৃহীত আর্থিক অনুদানের অঙ্ক, সবেতেই ট্রাম্পকে পিছনে ফেলে দিয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা। রাজনীতিকেরা বলছেন, আগামী ৫ নভেম্বরের নির্বাচন পর্যন্ত এই প্রবণতা বজায় থাকলেই আমেরিকার ইতিহাসে প্রথমবারের জন্য হোয়াইট হাউসে জায়গা করে নেবেন কোনও অশ্বেতাঙ্গ মহিলা।

আরও পড়ুন
Advertisement