নজরদার বেলুন দিয়ে ভারতেও নজরদারি চালায় চিন! দাবি রিপোর্টে। ছবি: রয়টার্স।
শুধু আমেরিকা কিংবা লাতিন আমেরিকার কলম্বিয়াতেই নয়, ভারতেও নজরদারি চালিয়েছিল চিনের নজরদার বেলুন। আমেরিকার ‘দি ওয়াশিংটন পোস্ট’ সংবাদপত্রের তরফে গত মঙ্গলবার এই চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনা হয়েছে। এই রিপোর্ট সামনে আসার পর সতর্ক আমেরিকার বাইডেন প্রশাসনও। সাদা বেলুন ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে নামিয়ে আনা নিয়ে চিনের সঙ্গে স্নায়ুযুদ্ধের আবহেই ‘বন্ধু’ দেশগুলিকে চিনের ‘অভিসন্ধি’ নিয়ে সতর্ক করতে চাইছে আমেরিকা।
সংবাদপত্রটির তরফে প্রকাশিত রিপোর্টটিতে বলা হয়েছে, বেলুন উড়িয়ে অন্যান্য দেশে নজরদারি চালানোর ঘটনা নতুন নয়। বেশ কয়েকবছর ধরেই ভারত, জাপান, ভিয়েতনাম, তাইওয়ানের মতো দেশে এই নজরদারির কাজ চালিয়ে গিয়েছে চিন। চিনের বেশ কয়েকজন সেনা আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলেই এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে বলে দাবি করেছে সংবাদপত্রটি। তবে ওই আধিকারিকদের নাম প্রকাশ্যে আনা হয়নি।
আমেরিকার প্রতিরক্ষা বিভাগের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক রিপোর্টটিকে উদ্ধৃত করে দাবি করেছেন, নজরদার বেলুনগুলি চিনের সেনাবাহিনীর অন্তর্ভুক্ত। চিন এই কাজ করে অন্য দেশগুলির সার্বভৌমত্বকে লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। আমেরিকার আকাশসীমায় ঢুকে পড়া চিনের সাদা বেলুনটিকে ক্ষেপণাস্ত্রর মাধ্যমে নামিয়ে আনার পর সেটির ভিতরে কী কী পাওয়া গিয়েছে, তার রিপোর্ট ভারত-সহ ৪০টি দেশের হাতে তুলে দিয়েছে আমেরিকা।
সোমবার আমেরিকার সহকারী প্রতিরক্ষা সচিব ওয়েন্ডি শেরম্যান ওয়াশিংটনে অবস্থিত ৪০টি দেশের দূতাবাসে এই রিপোর্ট পাঠিয়ে দেন এবং চিনের ‘প্রকৃত উদ্দেশ্য’ নিয়ে বন্ধু দেশগুলিকে সাবধান করে দেন। আমেরিকার তরফে বলা হচ্ছে, চিনের কৌশলগত স্বার্থ আছে, এমন এলাকার উপরেই নজরদারি চালাচ্ছে চিন। আমেরিকার ‘স্পর্শকাতর’ সামরিক কেন্দ্রগুলির উপর নজরদারি চালাচ্ছে চিনের বেলুন, এমটাই দাবি করেছিল আমেরিকার প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন। বেজিং সেই দাবি অস্বীকার করলেও গত শনিবার সন্দেহজনক বেলুনটিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে নামায় আমেরিকা। অতলান্তিক মহাসাগরে বেলুনটির ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারের কাজও শুরু করে তারা।
বৃহস্পতিবারই পেন্টাগন দাবি করেছিল, বেলুনের মাধ্যমে ‘গুপ্তচরবৃত্তি’ চালাচ্ছে বেজিং। আমেরিকার সামরিক কার্যকলাপের উপর বেলুনের মাধ্যমে নজর রাখা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পেন্টাগনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জানান, বেলুনটির ‘উপযুক্ত ব্যবস্থা’ করা হবে।
চিনের তরফে অবশ্য নজরদারির যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা জানায়, আবহাওয়া সংক্রান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং বৈজ্ঞানিক কারণে বেলুনটি ব্যবহার করা হচ্ছে। চিনের বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, এই বেলুনটি হাওয়ার গতির সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রাখতে না পেরে আমেরিকার আকাশে ঢুকে পড়ে। এই ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করে বেজিং। তারা এ-ও জানায়, এই ভুল যাতে দ্বিতীয় বার না হয় সেই চেষ্টা করা হবে। এর পাশাপাশি, বেলুন নামানোয় অতিসক্রিয়তা দেখানোর জন্য আমেরিকার বিরুদ্ধে ‘উপযুক্ত পদক্ষেপ’ করার হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখে তারা।