Myanmar Conflict

বাংলাদেশের পর এ বার ভারত সীমান্ত! মায়ানমারে আরাকান আর্মির দখলে মণিপুর ঘেঁষা চিন প্রদেশ

মণিপুর লাগোয়া চিন প্রদেশে মায়ানমারের কুকি জনগোষ্ঠীর (যাঁরা সে দেশে কুকি-চিন নামে পরিচিত) বসবাস। ফলে নতুন করে সীমান্ত পেরিয়ে মণিপুরে অনুপ্রবেশ বৃদ্ধির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৮:৩৭
মায়ানমারে তৎপরতা বিদ্রোহী বাহিনীর।

মায়ানমারে তৎপরতা বিদ্রোহী বাহিনীর। ছবি: সমাজমাধ্যম থেকে নেওয়া।

বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইনের পরে এ বার মণিপুর লাগোয়া চিন প্রদেশের দখল নিল মায়ানমারের বিদ্রোহীরা! এই অংশেই মায়ানমারের কুকি জনগোষ্ঠীর (যাঁরা সে দেশে কুকি-চিন নামে পরিচিত) বসবাস। ফলে নতুন করে সীমান্ত পেরিয়ে মণিপুরে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

Advertisement

মায়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী আউং সান সু চির সমর্থক স্বঘোষিত সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’ নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইরাবতী’ জানিয়েছে, চিন প্রদেশের ৮৫ শতাংশই বিদ্রোহী জোটের দখলে। সামরিক জুন্টা সরকারের বাহিনীকে হটিয়ে তাইল্যান্ড এবং চিনের সীমান্তবর্তী এলাকার বড় অংশ কয়েক মাস আগেই নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল বিদ্রোহী জোট। চলতি মাসের গোড়ায় বৃহত্তম বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির নেতৃত্বে বিদ্রোহী জোট দখল করে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইন প্রদেশ। এ বার মণিপুর সীমান্তও তাদের দখলে গেল। জুন্টাবিরোধী নতুন জোট ‘চিন ব্রাদারহুড’-এর শরিক ‘ইয়াও ডিফেন্স ফোর্স’, সাগাইন অঞ্চলে সক্রিয় ‘ইয়াও আর্মি’ এবং ‘মনিওয়া পিপলস ডিফেন্স ফোর্স’ চিন প্রদেশ দখলের লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে বলে ‘দ্য ইরাবতী’র দাবি।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থান ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী আউং সান সু চির দল ‘ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি’র নেতৃত্বাধীন সরকারকে উৎখাত করেছিল মায়ানমার সেনা। শুরু হয়েছিল সামরিক জুন্টার শাসন। তার আড়াই বছরের মাথায়, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে সে দেশের তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী— ‘তাঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি’ (টিএনএলএ), ‘আরাকান আর্মি’ (এএ) এবং ‘মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি’ (এমএনডিএএ)-র নয়া জোট ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’ সামরিক জুন্টা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। ওই অভিযানের পোশাকি নাম ছিল ‘অপারেশন ১০২৭’।

পরবর্তী সময়ে জুন্টা-বিরোধী যুদ্ধে শামিল হয় ‘চিন ন্যাশনাল আর্মি’ (সিএনএ) এবং চায়নাল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্স (সিডিএফ), ‘কাচিন লিবারেশন ডিফেন্স ফোর্স’ (কেএলডিএফ) এবং সু চির সমর্থক স্বঘোষিত সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’-এর সশস্ত্র বাহিনী ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্স’ (পিডিএফ)। মায়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী শক্তির স্বঘোষিত সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’, জুন্টা বিরোধী রাজনৈতিক দল ‘শান স্টেট প্রোগ্রেস পার্টি’ এবং তাদের সশস্ত্র শাখা বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির প্রতি সমর্থন জানায়। বিদ্রোহীদের মদতপুষ্ট রাজনৈতিক গোষ্ঠী ‘দ্য ইউনাইটেড ওয়া স্টেট পার্টি’ (ইউডব্লিউএসপি) ইতিমধ্যেই কয়েকটি ‘মুক্ত’ এলাকায় সমান্তরাল সরকার চালানো শুরু করে দিয়েছে। তাইল্যান্ডে নির্বাসিত মায়ানমারের গণতন্ত্রপন্থীদের পরিচালিত সংবাদমাধ্যম ‘ইরাবতী’ খোলাখুলি বিদ্রোহীদের পক্ষে প্রচার চালাচ্ছে। আর নতুনজোট চিন ব্রাদারহুড’ গঠিত হয়েছে চলতি বছরের গোড়ায়। ক্ষমতা দখলের চতুর্থ বর্ষপূর্তির দু’মাস আগে এ বার বিদ্রোহী বাহিনীর ‘ঘেরাটোপে’ পড়ে গেল জুন্টা ফৌজ।

Advertisement
আরও পড়ুন