গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
নরেন্দ্র মোদী সরকারের নির্বাচনী বিধি সংশোধনের পদক্ষেপকে এ বার সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানাল কংগ্রেস। দলের তরফে শীর্ষ আদালতে আবেদনে বলা হয়েছে, অবাধ ও নিরপেক্ষ ভোট পরিচালনার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার নানা অভিযোগ রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে একতরফা ভাবে ১৯৬১ সালের নির্বাচন বিধি সংশোধনে তাদের হাতে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা তুলে দেওয়া যায় না।
বুথের ভিতরের সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রার্থীদের ভিডিয়ো যাতে আমজনতা দেখতে না পারেন তা নিশ্চিত করতে নির্বাচনী বিধি সংশোধন করেছে মোদী সরকার। শনিবার এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। সম্প্রতি হরিয়ানা বিধানসভা ভোটের সময়ের ভিডিয়ো, সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ও নথির প্রতিলিপি চেয়ে পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্টে আবেদন করেন আইনজীবী মাহমুদ প্রাচা। সেগুলি প্রাচাকে দিতে নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। তার জেরেই যে নির্বাচনী বিধি সংশোধন তা মেনে নিয়েছেন আইন মন্ত্রক ও নির্বাচন কমিশনের কর্তারা। কংগ্রেসের দাবি, এ থেকেই বোঝা যায় নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা দ্রুত কমছে।
সংশোধনীর আগে নির্বাচনী বিধির ৯৩(২-এ) ধারায় বলা হয়েছিল, ব্যালট পেপার-সহ কয়েকটি নথি ছাড়া নির্বাচন সংক্রান্ত বাকি সব নথি আমজনতা খতিয়ে দেখতে পারবেন। কিন্তু সংশোধিত বিধি অনুযায়ী, ওয়েবকাস্টিং, ভিডিয়ো ফুটেজ-সহ বিভিন্ন সংশোধিত নথি দেখার কোনও অধিকার থাকবে না আমজনতার! নতুন নিয়মে শুধুমাত্র ভোটের নিয়ম এবং প্রার্থীর হলফনামা সংক্রান্ত নথিগুলিই (মনোনয়ন পত্র, পোলিং এজেন্টদের নিয়োগপত্র, ভোটের ফল ও নির্বাচনের জন্য ব্যবহৃত প্রার্থীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথি ইত্যাদি) প্রকাশ্যে আনা হবে। কিন্তু নির্বাচনী প্রক্রিয়া সংক্রান্ত বৈদ্যুতিন নথির নাগাল মিলবে না!
কেন্দ্র এবং কমিশনের কর্তাদের মতে, বুথের ভিতরের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজের অপব্যবহার হতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে ভোটারদের গোপনীয়তা। সেই সঙ্গে তাঁদের ব্যাখ্যা, চাইলে ভোট প্রক্রিয়ার বৈদ্যুতিন নথি সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের প্রার্থীরা দেখতে পারবেন। সংশোধনীর পরেও তাঁরা এগুলির নাগাল পাবেন। শীর্ষ আদালতে রিট দাখিল করে কংগ্রেসের যুক্তি, ভোটের মতো সরাসরি জনসম্পর্কিত বিষয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংবিধানিক সংস্থা নির্বাচন কমিশন এ ভাবে তথ্য গোপন করতে পারে না। সে ক্ষেত্রে পুরো প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা প্রশ্নের মুখে পড়বে।