কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা। —ফাইল চিত্র।
ঘরে এবং বাইরে প্রবল চাপের মুখে নিজের দল থেকে পদত্যাগ করতে চলেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। সে দেশের সংবাদপত্র ‘দ্য গ্লোব অ্যান্ড মেল’-এর একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, সোমবারই নিজের সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করে দিতে পারেন ট্রুডো। তা যদি না-ও হয়, চলতি সপ্তাহে বুধবারের আগেই তিনি লিবারাল পার্টির নেতা হিসাবে পদত্যাগ করবেন, সূত্র উল্লেখ করে দাবি ওই সংবাদপত্রের। এই রিপোর্ট প্রসঙ্গে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর দফতর কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। রাজনৈতিক দলের সদস্যপদ ছাড়ার পরও তিনি প্রধানমন্ত্রী পদে থেকে যাবেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। আগামী অক্টোবরে কানাডায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
ট্রুডো যে নিজের দল থেকে বেরিয়ে আসতে চলেছেন, এই খবর জানাতে মোট তিন সূত্র উল্লেখ করেছে কানাডার সংবাদমাধ্যম। দাবি, আগামী বুধবার কানাডায় লিবারাল পার্টির একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক রয়েছে। তার আগেই ট্রুডো দল ছাড়বেন।
২০১৩ সালে লিবারাল পার্টির নেতা হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন ট্রুডো। গত ন’বছর ধরে ক্ষমতায় থাকার পরে কানাডায় তাঁর জনপ্রিয়তা এখন তলানিতে। বার বার তাঁর সিদ্ধান্ত নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ট্রুডোর আন্তর্জাতিক নীতি নিয়েও দেশের অভ্যন্তরে অসন্তোষ রয়েছে। ভারতের সঙ্গে ট্রুডোর আমলে কানাডার সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। ২০২৩ সালের নির্বাচনী সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, সে দেশের বাসিন্দারা তাঁকে আর পছন্দ করছেন না। আগামী নির্বাচনে কানাডায় কনজ়ারভেটিভ দল ক্ষমতায় আসতে চলেছে বলে দাবি করছে বিভিন্ন সমীক্ষা। এই পরিস্থিতিতে কিছু দিন আগে হঠাৎ পদত্যাগ করেন কানাডার উপমুখ্যমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড। তার পর থেকে দেশের প্রশাসনে অসন্তোষ আরও তীব্র হয়েছে। মন্ত্রিসভায় রদবদল করেও তা সামলাতে পারেননি ট্রুডো। পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য তাঁকে চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি। একাধিক সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, অন্টারিও প্রদেশের ৭৫ জনের মধ্যে অন্তত ৫১ জন এমপি ট্রুডোকে সরানোর বিষয়ে একমত হয়েছেন। লিবারাল পার্টিরই বহু এমপি তাঁর পদত্যাগের দাবিতে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন।
কানাডার প্রতিবেশী আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতায় আসতে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ২০ জানুয়ারি তাঁর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে মানিয়ে চলতে পারার মতো সরকার চায় কানাডা। তাই ট্রুডোর পদত্যাগের পর সে দেশে নির্বাচন এগিয়ে আনার দাবিও জোরালো হতে পারে। ট্রুডো প্রধানমন্ত্রী পদ ছেড়ে দিলে কাকে অভ্যন্তরীণ দায়িত্ব দেওয়া হবে, তা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে।