Bangladesh Situation

ভারতের খরচেই ভারতে এসে প্রশিক্ষণের কথা ছিল বাংলাদেশি বিচারকদের, আটকাল ইউনূস সরকার

বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রশিক্ষণ নিতে আসার কথা ছিল সে দেশের ৫০ জন বিচারকের। ভারতের খরচেই সেই প্রশিক্ষণের কথা ছিল। প্রথমে অনুমতি দিলেও রবিবার তা বাতিল করে দিয়েছে ইউনূসের সরকার।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:২৪
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। —ফাইল চিত্র।

বাংলাদেশের ৫০ জন বিচারকের ভারতে প্রশিক্ষণ নিতে আসার কথা ছিল। প্রশিক্ষণের খরচও ভারতেরই দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই প্রশিক্ষণ নিতে আসছেন না বাংলাদেশি বিচারকেরা। প্রথমে অনুমতি দেওয়া হলেও রবিবার তা বাতিল করে দেয় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার।

Advertisement

মধ্যপ্রদেশের ভোপালে ন্যাশনাল জুডিশিয়াল অ্যাকাডেমি এবং স্টেট জুডিশিয়াল অ্যাকাডেমিতে ১০-২০ ফেব্রুয়ারি ওই প্রশিক্ষণে আসার কথা ছিল বাংলাদেশের বিচারকদের। তবে বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ জানিয়েছে, রবিবার তা বাতিল করে দিয়েছে সে দেশের আইন, বিচার এবং সংসদ বিষয়ক মন্ত্রক। প্রশিক্ষণে আসার কথা ছিল বাংলাদেশের বিভিন্ন নিম্ন আদালতের সহকারী বিচারক, সিনিয়র সহকারী বিচারক, যুগ্ম জেলা ও দায়রা বিচারক, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক, জেলা ও দায়রা বিচারক এবং অন্য সমপর্যায়ের বিচারবিভাগীয় আধিকারিকদের।

‘প্রথম আলো’ অনুসারে, বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শের ভিত্তিতে গত ৩০ ডিসেম্বর সে দেশের আইন মন্ত্রক ৫০ জন বিচারবিভাগীয় আধিকারিককে প্রশিক্ষণে আসার অনুমতি দেয়। বাংলাদেশের সরকারি সংবাদ সংস্থা ‘বাসস’-ও শনিবার এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানেও জানানো হয়, বাংলাদেশের আইন মন্ত্রক থেকে ৫০ জন বিচারককে ভারতে প্রশিক্ষণ নিতে আসার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এই মর্মে একটি বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয় মন্ত্রক থেকে। মন্ত্রকের উপসচিব (প্রশিক্ষণ) আবুল হাসানাতের সই-সহ ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রশিক্ষণের যাবতীয় খরচ ভারত সরকারই বহন করবে। বাংলাদেশ সরকারের কোনও আর্থিক যোগ নেই এই প্রশিক্ষণের সঙ্গে।

তবে ‘প্রথম আলো’ জানিয়েছে, ওই অনুমতি রবিবার বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। অনুমতি বাতিলের কথা জানিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রক, নির্বাচন কমিশনের সচিবালয়, সে দেশের সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল-সহ অন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ, সংস্থা এবং মন্ত্রককে চিঠি পাঠিয়েছে ইউনূস সরকারের আইন, বিচার এবং সংসদ বিষয়ক মন্ত্রক।

গত অগস্ট মাসে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের সরকারের পতনের পর থেকে ভারত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক ঘিরে টানাপড়েন শুরু হয়েছে। সরকার পতনের পর শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। সম্প্রতি হাসিনাকে ফেরত চেয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার একটি কূটনৈতিক বার্তা (নোট ভার্বাল) পাঠিয়েছে ভারতকে। দিল্লি থেকে সেটির প্রাপ্তিস্বীকার করা হয়েছে। তবে ভারত কী পদক্ষেপ করবে, তা এখনও সরকারি ভাবে জানানো হয়নি।

এ দিকে হাসিনার পতনের পর থেকে বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে এসেছে। তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারতও। যদিও ইউনূস সরকারের দাবি, সে দেশের সংখ্যালঘুরা সুরক্ষিতই রয়েছেন। বাংলাদেশের এক সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে সম্প্রতি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গ্রেফতার করেছে চট্টগ্রামের পুলিশ। তাঁর আইনি অধিকার যাতে অক্ষুণ্ণ থাকে, সে কথাও বলেছে ভারত। গত মাসে বাংলাদেশে গিয়ে সে দেশের পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি। মিস্রীর সফরের মূল নির্যাস হিসাবে উঠে এসেছে, কূটনৈতিক সম্পর্কে ‘কালো মেঘ’ জমলেও দু’দেশই একে অপরের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী।

Advertisement
আরও পড়ুন