কপালে ধারালো যন্ত্র দিয়ে খোদাই করে দেওয়া হল ‘৪২০’। নিজস্ব চিত্র।
‘চরিত্র খারাপ’ অভিযোগ তুলে স্বামীহারা এক মহিলার চুল কামিয়ে দেওয়া হল। এখানেই শেষ নয়, কপালে ধারালো যন্ত্র দিয়ে খোদাই করে দেওয়া হল ‘৪২০’। সবটাই হল সালিশি সভার নির্দেশে। ঘটনাটি মালদহের চাঁচল থানার ক্ষেমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাণ্ডারণের বেদে পাড়ার। ঘটনার ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই নড়েচড়ে বসল পুলিশ এবং প্রশাসন। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক জানিয়েছেন, পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন।
‘দিওয়ার’ সিনেমার কথা মনে পড়ে! ছোট অমিতাভকে চেপে ধরে হাতে লিখে দেওয়া হয়েছিল, ‘তেরা বাপ চোর হ্যায়’। তবে মালদহে আরও খারাপ নজির প্রকাশ্যে এসেছে। এক জন মহিলার মাথায় ৪২০ লিখে দেওয়া হয়েছে।
মহিলার নাম কাজলি বেদে। স্বামী কুরবান বেদে দু’বছর আগে মারা গিয়েছেন। তার পর থেকে দুই মেয়েকে নিয়ে কাণ্ডারণে শ্বশুরবাড়িতেই থাকতেন কাজলি। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের অভিযোগ, কয়েক মাস আগে অপরিচিত এক পুরুষের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। মাঝে মাঝেই রাতে বাড়ি থেকে বাইরে বেরিয়ে যেতেন তিনি। তাঁর শাশুড়ি বিষয়টি গ্রামবাসীকে জানিয়েছিলেন। সেই নিয়ে গ্রামে সালিশি সভাও হয়। স্থানীয়দের থেকে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি আবার তিনি বাড়ির বাইরে গেলে গ্রামবাসীরা তাঁকে ধরে ফেলেন।
ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, সালিশি সভায় তাঁর নামে একের পর এক অভিযোগ করছেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তাঁকে প্রকাশ্যে মারধরও করা হয়। তার পর মহিলার পা বেঁধে চেপে ধরেন এক ব্যক্তি। অন্য এক মহিলা মাথার চুল কামিয়ে কপালে খোদাই করে দেন ‘৪২০’। তাঁকে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। সোশ্যাল মিডিয়াতে এই ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই তদন্ত শুরু করেছে চাঁচল থানার পুলিশ। পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, ‘‘একটি ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত করা হচ্ছে।’’
মালতিপুর বিধানসভার বিধায়ক ও জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি আব্দুল রহিম বক্সি বলেন, ‘‘আমি ভাল ভাবে জানতে পারিনি। পুলিশ, প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব। এই ঘটনা কাম্য নয়। কেউ দোষ করলে পুলিশ, প্রশাসন ব্যবস্থা করবে। পুলিশ, প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’’