সুশান্ত ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র।
দক্ষিণ কলকাতার কসবায় তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষকে খুনের বরাত দিয়েছিলেন কি স্থানীয় কেউ? প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই মনে করছেন তদন্তকারীদের একাংশ। তবে শুধু স্থানীয় নয়, পড়শি রাজ্য বিহারেরও যোগ থাকতে পারে বলে অনুমান পুলিশের।
তদন্তকারীদের একাংশের সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় কোনও ব্যক্তি এই খুনের চেষ্টার নেপথ্যে রয়েছেন। তবে তিনি সরাসরি ‘শুটার’দের ভাড়া করেননি। বিহারের বন্ধুস্থানীয় এক ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। তবে ‘শুটার’ ভাড়ার জন্য সেই সেই ব্যক্তি অন্য এক জনের সঙ্গে কথা বলেন। তিনিও বিহারের বাসিন্দা। তিনিই ঠিক করে দেন ‘শুটার’! ওই সূত্রের মতে, ‘চুক্তি’ চূড়ান্ত হওয়ার পরেই শুক্রবার সন্ধ্যায় সুশান্তকে খুনের চেষ্টা করা হয়।
কসবার গুলিকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত এক জনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, তিনি ভিন্রাজ্যের বাসিন্দা। তবে ঘটনার নেপথ্যে কী কারণ তা এখনও স্পষ্ট নয় বলেই জানিয়েছেন তদন্তকারীদের ওই সূত্র।
শুক্রবার সন্ধ্যায় কলকাতা পুরসভার ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুশান্ত নিজের বাড়ির সামনে রাস্তার পাশে বসে ছিলেন। সে সময়ই তাঁকে খুনের চেষ্টা করা হয়। ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হলেও সুশান্তের বাড়ি ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডে রাজডাঙার চক্রবর্তীপাড়া এলাকায়। বাড়ির সামনে বসে সুশান্ত যখন অন্যদের সঙ্গে কথা বলছিলেন সেই সময়েই দু’জন স্কুটারে করে আসেন, তাঁদের মধ্যে একজনই গুলি চালানোর চেষ্টা করেন। তাঁকে পুলিশ ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে।
গোটা ঘটনা ধরা পড়েছে সুশান্তের বাড়ির সামনে লাগানো সিসি ক্যামেরায়। সেই ফুটেজে দেখা গিয়েছে, স্কুটারে করে আসা দুই দুষ্কৃতীর মধ্যে এক জনই গুলি চালানোর চেষ্টা করে। এক বার নয়, দু’বার দু’টি বন্দুক থেকে গুলি চালানোর চেষ্টা হয়। পর পর দু’বার গুলি চালানোয় ব্যর্থ হওয়ায় পালানোর চেষ্টা করেন তিনি। সেই সময়েই তাঁকে ধরে ফেলা হয়। সুশান্ত এবং তাঁর অনুগামীরাই তাড়া করে আততায়ীকে ধরেন। অভিযোগ, তাঁকে মারধরও করা হয়। পরে অভিযুক্তকে পুলিশের হাতে তুলে দেন সুশান্ত।
কেন সুশান্তকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর চেষ্টা করা হল, তা নিয়ে এখনও ধন্দে তদন্তকারীরা। এ ব্যাপারে তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত বলেন, ‘‘কলকাতা পুলিশ দক্ষতার সঙ্গে কাজ করবে।’’ তিনি মনে করেন ১০৭ বা ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের কেউ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। তবে প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসছে স্থানীয়-যোগই। খবর জানাজানি হতেই ওই তৃণমূল কাউন্সিলরের সমর্থকেরা কসবায় পথ অবরোধ করেন। উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। খবর পেয়ে এলাকায় আসেন স্থানীয় বিধায়ক জাভেদ খান। শাসক দল সূত্রে খবর, গুলিকাণ্ডের পর সুশান্তকে ফোন করে খোঁজখবর নিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী।