পরস্পরের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এবং পাল্টা অভিযোগ এনেছেন তাপস এবং কুন্তল। ফাইল ছবি।
ইডির হাতে ধৃত হুগলির তৃণমূল যুবনেতা কুন্তল ঘোষের কাছে তিনি টাকা চেয়েছিলেন। মঙ্গলবার সকালে ইডি দফতর সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিতে এসে এমনটাই জানালেন নিয়োগ দুর্নীতি মামলার অন্যতম অভিযুক্ত তাপস মণ্ডল। পাশাপাশি, কুন্তলের স্ত্রী তাঁদের ফ্ল্যাটের ফ্রিজে তাপসের ইনসুলিন মিলবে বলে যে দাবি করেছেন, তাকেও ‘মিথ্যা’ বলছেন মানিক-ঘনিষ্ঠ।
সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিতে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তাপস বলেন, ‘‘আজকে আমাকে ইডি ডেকেছে। তাই হাজিরা দিতে এসেছি। আমি কখনও ওই ফ্ল্যাটে থাকিনি। আমার ইনসুলিন ওখানে পাওয়া গিয়েছে, সেটা প্রমাণ করা হোক।’’
কুন্তলের অভিযোগ, তাপস এবং তাঁর সহযোগী নীলাদ্রি ঘোষ হুমকি দিয়ে তাঁর কাছ থেকে অনেক টাকা হাতিয়েছেন এবং তাঁকে টাকা দেওয়ার জন্য ক্রমাগত ‘চাপ’ দিতেন। সেই প্রসঙ্গে তাপস জানান, সেই টাকা তিনিই চেয়েছিলেন এবং চাকরিপ্রার্থীদের ফেরত দিতেই তিনি সেই টাকা চেয়েছিলেন।
তাপসের কথায়, ‘‘নীলাদ্রি আমার কাছে আসত। আমার পরিচিত ছিল। আর কুন্তলের কাছে টাকা তো চাইবই। টাকা ওকে দেওয়া হয়েছে, সেই টাকা চাইব না! ও যে চাকরিপ্রার্থীদের থেকে টাকা নিয়েছে, সেই টাকাই ফেরত চাওয়া হয়েছিল।’’
এর আগে কুন্তলের স্ত্রী জয়শ্রী ঘোষ দাবি করেন, যে ফ্ল্যাটে ইডি আধিকারিকরা তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিলেন, সেখানে দীর্ঘদিন থেকেছেন তাপস মণ্ডল। তার প্রমাণ হিসাবে তাপসের জামাকাপড় এবং ইনসুলিন ইঞ্জেকশন ওই ফ্ল্যাটে রয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন। ইডিকে সে বিষয়ে তদন্ত করারও আর্জি জানিয়েছেন ধৃত যুবনেতার স্ত্রী। মঙ্গলবার সিজিওতে ঢোকার সময় জয়শ্রীর আনা সেই সকল অভিযোগই অস্বীকার করেছেন তাপস।
হুগলির তৃণমূল যুবনেতা কুন্তল ঘোষকে গ্রেফতারের পর এ বার তাপস মণ্ডলকেও তলব করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। মঙ্গলবার তাঁকে সিজিও কমপ্লেক্সে তলব করা হয়েছে। সিজিও-তে তাঁর এবং কুন্তলের বয়ান এবং দাবি একসঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে বলে সূত্রের খবর।
পাশাপাশি, তল্লাশি চালানো দু’টি ফ্ল্যাট থেকে কুন্তলের একটি নোটবুক এবং একাধিক নথি উদ্ধার করেছেন ইডি আধিকারিকরা। সেই নথিতে রয়েছে একাধিক সাঙ্কেতিক চিহ্নও। তদন্ত চলাকালীন তাপসের কাছ থেকেও নথিসমৃদ্ধ একটি ডায়েরি উদ্ধার করে তদন্তকারী আধিকারিকরা। মঙ্গলবার তাপস ইডি দফতরে হাজিরা দেওয়ার পর সেই সব নথি একসঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে বলে ইডি সূত্রে খবর। দু’জনের থেকে উদ্ধার হওয়া নথিতে কোনও মিল পাওয়া গিয়েছে কি না, সে দিকেও নজর থাকবে।