Pradhan Mantri Awas Yojana in West Bengal

আবাসের টাকা নয়ছয় হয়েছে, হাই কোর্টে মেনে নিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার! বিস্মিত খোদ বিচারপতিও

আবাস যোজনার জন্য আবেদন জানিয়েও টাকা পাননি বলে জানান ক্যানিংয়ের পাঁচ বাসিন্দা। অভিযোগ, তাঁদের টাকা অন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে। অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছে রাজ্য সরকার।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:৪৩
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা নিয়ে নয়ছয়ের অভিযোগ হাই কোর্টে মেনে নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা নিয়ে নয়ছয়ের অভিযোগ হাই কোর্টে মেনে নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা নিয়ে নয়ছয় করা হয়েছে রাজ্যে। কলকাতা হাই কোর্টে সে কথা স্বীকার করে নিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। সব কিছু জেনেও এ বিষয়ে ফৌজদারি মামলা দায়ের করেনি রাজ্য, যা নিয়ে বিস্ময়প্রকাশ করেছেন উচ্চ আদালতের বিচারপতি রবি কিষাণ কপূর। সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

আবাস যোজনার জন্য আবেদন জানিয়েও টাকা পাননি, এই মর্মে অভিযোগ করেছিলেন ক্যানিংয়ের ইটখোলা পঞ্চায়েতের হেড়োভাঙা গ্রামের পাঁচ বাসিন্দা। অভিযোগ, তাঁদের টাকা অন্য কারও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে। ইচ্ছাকৃত ভাবে টাকা অন্যত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ওই পাঁচ গ্রাহক। তাঁরা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। বৃহস্পতিবার আদালতে এই মামলাটির শুনানি হয়েছে। নয়ছয়ের কথা মেনে নিয়েছে রাজ্য সরকার। তারা জানায়, অনুসন্ধান করে দেখা হয়েছে। মামলাকারীদের অভিযোগের সত্যতা রয়েছে। ওই পাঁচ জনের নামে আসা টাকা যে অন্য ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে গিয়েছে, তা সত্য। টাকা উদ্ধারের প্রক্রিয়াও শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রাজ্য। এর পরেই সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের পদক্ষেপের নির্দেশ দেন বিচারপতি।

আদালতের নির্দেশ, বিডিও এবং পঞ্চায়েত প্রধানকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে। বিডিও-র তহবিলের সঙ্গে যে যে আধিকারিক যুক্ত, তাঁদের তথ্য লিখিত আকারে আদালতে জমা দেবেন বিডিও। গ্রাম ও পঞ্চায়েত উন্নয়ন দফতরের সচিবকেও এ বিষয়ে অবগত করতে বলেছেন বিচারপতি। তাঁকেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে। অবিলম্বে ফৌজদারি মামলা দায়ের করার জন্য তাঁকে আদালত পরামর্শও দিয়েছে।

আবাসের টাকা নিয়ে নয়ছয় হয়েছে জেনেও কেন ফৌজদারি মামলা দায়ের করেনি রাজ্য? প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি কপূর। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ইচ্ছাকৃত ভাবে এক জনের টাকা অন্য জনকে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে তা-ই মনে হচ্ছে। কারণ এক বা দু’জনের ক্ষেত্রে এটা হয়নি, একসঙ্গে পাঁচ জনের ক্ষেত্রে একই ভুল কী ভাবে সম্ভব? বিচারপচির মন্তব্য, ‘‘আদালতের কাছে এটা আশ্চর্যজনক যে রাজ্য সব জেনেও এখনও ফৌজদারি মামলা দায়ের করেনি।’’

২০২১ সালে আবাসের টাকার জন্য আবেদন করেছিলেন ইটখোলার বাসিন্দা সিরাজুল মণ্ডল, সেলিম মোল্লা, আক্রম মোল্লা, সামসুল আলম মোল্লা এবং মাবুয়ালি মোল্লা। কিন্তু তাঁরা টাকা পাননি। তাঁদের টাকা চলে গিয়েছে অন্য অ্যাকাউন্টে। অভিযোগ, পঞ্চায়েত প্রধান এবং অন্যেরা প্রভাব খাটিয়ে ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট নম্বর বদলে দিয়েছিলেন। এ বিষয়ে বিডিও, এসডিও, জেলাশাসক এবং রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি পাঠানো হয়। তার পর হাই কোর্টে মামলা হয়। মামলাকারীদের হয়ে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত এবং আইনজীবী বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মামলায় নয়ছয়ের কথা স্বীকার করে নিল রাজ্য। আগামী ১৮ নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানির সম্ভাবনা।

আরও পড়ুন
Advertisement