বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের সাসপেন্ড হওয়া সাত পড়ুয়া আপাতত ক্লাস করতে পারবেন। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সাত জন পড়ুয়াকে ক্লাস করার অনুমতি দিল কলকাতা হাই কোর্ট। র্যাগিংয়ের অভিযোগে তাঁদের সাসপেন্ড (নিলম্বিত) করেছিল কলেজ কাউন্সিল। শুক্রবার ওই মামলার শুনানিতে বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের অন্তর্বর্তী নির্দেশ, আপাতত ক্লাস করতে পারবেন ওই ডাক্তারি পড়ুয়ারা। তাঁরা ক্লাস করতে গিয়ে কোনও বাধার সম্মুখীন হলে থানার সাহায্য নিতে পারবেন। তবে এখনই হস্টেলে প্রবেশ করতে পারবেন না। আগামী ১১ নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
গত ১১ সেপ্টেম্বর ইশা পাল-সহ সাত জনের বিরুদ্ধে র্যাগিং করার অভিযোগ করেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের কয়েক জন ছাত্র-ছাত্রী। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে সাত জন পড়ুয়ার কলেজ এবং হস্টেলে প্রবেশ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন কর্তৃপক্ষ। ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন তাঁরা। সাসপেন্ড হওয়া পড়ুয়াদের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় শুক্রবার সওয়াল করে বলেন, ‘‘র্যাগিংয়ের চার্জ কী, তা জানানো হয়নি। একতরফা ভাবে কর্তৃপক্ষ কী ভাবে কলেজে প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে পারেন? শুধুমাত্র অভিযোগ শুনেই পদক্ষেপ?’’ এর পরেই কল্যাণ বলেন, ‘‘এটাই তো হুমকি সংস্কৃতি।’’ এর পরে কলকাতা হাই কোর্ট জানায়, আপাতত ওই পড়ুয়ারা ক্লাস করতে পারবেন।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে এক চিকিৎসক পড়ুয়ার দেহ উদ্ধার হয়। তাঁকে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ ওঠে। এই আবহে রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলিতে ‘দাদাগিরি’ চালানোর অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে। এই নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। ‘দাদাগিরি’-র অভিযোগ ওঠে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজেও। ওই মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক বিরূপাক্ষ বিশ্বাস এবং প্রাক্তন আরএমও অভীক দের বিরুদ্ধে ‘দাদাগিরি’ চালানোর অভিযোগ তোলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁদের সাসপেন্ড করে স্বাস্থ্যভবন, ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন। হুমকি সংস্কৃতি (থ্রেট কালচার)-র অভিযোগ ওঠায় আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ৫১ জন জুনিয়র ডাক্তারকেও সাসপেন্ড (নিলম্বিত) করা হয়েছিল। এই সাসপেনশন নিয়ে নবান্নে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠকে প্রশ্ন তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কী ভাবে রাজ্যকে না জানিয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ, সে প্রশ্নও তোলেন তিনি। তার পরে কলকাতা হাই কোর্ট নির্দেশ দেয়, আরজি কর কলেজ কর্তৃপক্ষ ওই জুনিয়র ডাক্তারদের সাসপেন্ড করার যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তা সঠিক নয়। এই নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য। এ বার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে র্যাগিংয়ের অভিযোগে সাসপেন্ড হওয়া সাত জনকেও ক্লাস করার অনুমতি দিল কলকাতা হাই কোর্ট।