কে বা কারা কেন খুন করলেন তৃণমূল নেতা দুলাল সরকারকে? —ফাইল চিত্র।
মালদহের তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার ওরফে বাবলা খুনের পর চার দিন কেটে গিয়েছে। পাওয়া গিয়েছে বিহার-যোগ। ইতিমধ্যে একাধিক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কিন্তু পাঁচ দিনেও স্পষ্ট হয়নি, ঠিক কী কারণে খুন হলেন দুলাল এবং কে বা কারা তাঁকে খুন করার জন্য গুন্ডা ভাড়া করেছিলেন। মালদহ জেলা পুলিশ ঘোষণা করেছে, দুলালের খুনের সঙ্গে যুক্ত কৃষ্ণ রজক ওরফে রোহন এবং বাবলু যাদব। তাঁদের ধরিয়ে দিতে পারলে বা কোনও খোঁজ দিতে পারলে দু’লক্ষ টাকা পুরস্কার মিলবে। এই আবহে ঘটনাস্থলে গেল রাজ্যের ফরেন্সিক দল। সোমবার রাতে ইংরেজবাজার শহরের মহানন্দা পল্লি এলাকায় যেখানে গুলি করে দুলালকে খুন করা হয়েছিল, সেই জায়গাটি পরিদর্শন করেন চিত্রাক্ষ দে সরকার-সহ ফরেন্সিক দলের সদস্যেরা। ইংরেজবাজার থানার পুলিশও ঘটনাস্থলে যায়। ঘটনাস্থলের পাশে টোটোর দোকানেও খোঁজখবর করেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করেছে ফরেন্সিক দল। তদন্ত চলছে। অন্য দিকে, সোমবারই মৃত তৃণমূল নেতা দুলালের স্ত্রী চৈতালি সরকার দাবি করেছেন, তাঁর স্বামীর হত্যার পিছনে একাধিক লোক রয়েছে। পাশাপাশি, দুলালের খুন রাজনৈতিক বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘দুলাল সরকারের কাছ থেকে রাজনৈতিক ভাবে পিছিয়ে যাওয়ায় হিংসা আছে। তাই খুন।’’
সোমবার দুলালের বাড়িতে গিয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি দুলালের স্ত্রী চৈতালির সঙ্গে কথা বলেন। চৈতালি দাবি করেন, দুলালের রাজনৈতিক উত্থানে অনেকে ঈর্ষান্বিত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘এ কাজ যারা করেছে, তারা নিকৃষ্ট মনের মানুষ। ক্ষমতার লোভ এবং ভীষণ রকমের চাহিদা থেকে এটা (খুন) করেছে তারা। তবে এক জন নয়, একাধিক জন এই কাজের সঙ্গে যুক্ত।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এ নিয়ে বেশি বলতে চাইছি না। পুলিশ তদন্ত করুক। রাজনীতি করতে গেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে। কিন্তু তার মানে নৃশংস ভাবে কাউকে খুন করবে!’’
মন্ত্রী চন্দ্রিমা মনে করছেন, কাউকে ভাড়া করে স্থানীয় কোনও ব্যক্তি দুলালকে খুন করিয়েছেন। সেই ‘কেউ’টাকে খুঁজতে হবে। সেই কাজ পুলিশ করছে বলে তিনি জানান। চন্দ্রিমা বলেন, ‘‘এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী নিজে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গোষ্ঠীকোন্দল-টোন্দল জানি না, কোথাও কেউ কিছু করে থাকলে, সে যে গোষ্ঠীরই হোক না কেন, ধরা পড়বেই।’’
গত ২ জানুয়ারি ইংরেজবাজার শহরের ঝলঝলিয়ার কাছে নিজের কারখানার কাছেই খুন হন দুলাল। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, প্রাণ বাঁচাতে কারখানায় ঢুকে পড়েছিলেন তৃণমূল নেতা। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। তিন দুষ্কৃতীকে তাঁকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালায়।