মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
চিকিৎসকদের সমাবেশে এ বার প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আরজি কর-কাণ্ড এবং তার পরবর্তী আন্দোলনের মাঝে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ডাক্তারদের দাবিদাওয়া পূরণের বিষয়ে সেই সময় আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি। আরজি কর-পর্বেই রাজ্য স্তরে চিকিৎসকদের জন্য তৈরি হয় একটি গ্রিভান্স রিড্রেসাল কমিটি। যেখানে চিকিৎসকেরা নিজেদের সমস্যার কথা জানাতে পারবেন বলে জানানো হয়। ওই কমিটিই আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি চিকিৎসকদের একটি সমাবেশের আয়োজন করছে। সমাবেশ হওয়ার কথা রয়েছে আলিপুরের ‘উত্তীর্ণ’ সভাগৃহে। কমিটির পক্ষ থেকে চিকিৎসক সৌরভ দত্ত জানান, সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। সেখানে বক্তৃতাও করবেন তিনি।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে এক মহিলা চিকিৎসক-পড়ুয়াকে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগের পর প্রশ্ন উঠেছিল হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিয়ে। চিকিৎসকদের নিরাপত্তা এবং হাসপাতালের পরিকাঠামোগত ক্ষেত্রে জুনিয়র ডাক্তারদের সিংহভাগ দাবিই মেনে নেন মুখ্যমন্ত্রী। অক্টোবর মাসের ওই বৈঠকে প্রায় ১২৮ মিনিট ধরে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর অনশন প্রত্যাহারেরও সিদ্ধান্ত নেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। আরজি কর-কাণ্ড ঘিরে আন্দোলন এখন দৃশ্যত স্তিমিত। এই আবহে ফেব্রুয়ারির সমাবেশে চিকিৎসক-প্রশাসন সম্পর্ককে ফের এক বার ঝালিয়ে নিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।
নতুন বছরের দ্বিতীয় দিন থেকে নিজের লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে ‘সেবাশ্রয়’ কর্মসূচি চালু করেছেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০ মার্চ পর্যন্ত চলবে এই কর্মসূচি। ১২০০ চিকিৎসক, ৫০০ ডায়াগনস্টিশিয়ান, ১৫০০ স্বেচ্ছাসেবককে নিয়ে ওই কর্মসূচিকে ‘দুয়ারে স্বাস্থ্য পরিষেবা’ হিসাবে ব্যাখ্যা করেছেন অভিষেক। এক দিকে যখন অভিষেকের এই কর্মসূচি চলছে, অন্য দিকে তখন আগামী মাসে চিকিৎসকদের সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী।
গ্রিভান্স রিড্রেসাল কমিটির আয়োজিত ওই সমাবেশে সর্ব স্তরের চিকিৎসকদের থাকার কথা রয়েছে। কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকদের আমন্ত্রণ জানানো হবে। ডাকা হবে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকদেরও। বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকদের কোথায় কী সমস্যা রয়েছে, কী ভাবে আরও উন্নত পরিষেবা দেওয়া যায়— তা জানতে চাওয়া হতে পারে সমাবেশে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে চিকিৎসকদের এই সমাবেশে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রীও। মনে করা হচ্ছে, হাসপাতালগুলিতে কিছু প্রয়োজন রয়েছে কি না, কী ভাবে আরও ভাল পরিষেবা দেওয়া যায়, সে বিষয়ে চিকিৎসকদের মতামত জেনে নিতে পারেন তিনি। পাশাপাশি, চিকিৎসকদের সঙ্গে সম্পর্ককে আরও নিবিড় করার চেষ্টাও দেখা যেতে পারে।
ঘটনাচক্রে, আরজি কর ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় একমাত্র অভিযুক্তের সাজা ঘোষণার কথা রয়েছে আগামী ১৮ জানুয়ারি। এই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় সিবিআইয়ের তদন্তে নতুন করে কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। এই অবস্থায় চিকিৎসক সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতায় কোন কোন বিষয় উঠে আসে, সে দিকে নজর থাকবে।