west bengal by-election

West Bengal By-Election: লড়াই চার আসনে, তিনটিতেই জামানত জব্দ! হালফিলের সবচেয়ে খারাপ ফল বিজেপি-র

গোসাবা, খড়দহের পাশাপাশি ছ’মাস আগে জেতা দিনহাটা আসনেও জামানত খুইয়েছে বিজেপি। শুধু শান্তিপুরের পদ্ম-প্রার্থী জামানত বাঁচাতে পেরেছেন।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২১ ১৯:০৭
গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

মাত্র ছ’মাসের ব্যবধানে রাজ্যে ধস নামল বিজেপি-র ভোটব্যাঙ্কে। সোমবার গণনা হওয়া চারটি বিধানসভা আসনে এপ্রিল-মে মাসে নীলবাড়ির লড়াইয়ে পদ্মশিবিরের ভোট ছিল ৩৮.১ শতাংশ। এ বার তা নেমে এসেছে ১৪.৫ শতাংশে। গোসাবা, খড়দহের পাশাপাশি মে মাসে জেতা দিনহাটা আসনেও জামানত খুইয়েছে বিজেপি। শুধু মাত্র শান্তিপুর কেন্দ্রে পদ্মচিহ্নের প্রার্থী জামানত রক্ষা করতে পেরেছেন। ঘটনাচক্রে, নদিয়া জেলার এই কেন্দ্রেই ছ’মাসে আগের ভোট-সহযোগী বাম এবং কংগ্রেস এ বার আলাদা ভাবে লড়াইয়ে ছিল।

তবে দেশের নির্বাচনী ইতিহাস বলছে উপনির্বাচনের ক্ষেত্রে এমন উলটপুরাণ নজিরবিহীন নয়। এমনকি, মঙ্গলবারের ভোটগণনায় রাজস্থানেই এমন নজির দেখা গিয়েছে। মরুরাজ্যে ২০১৮ সালের বিধানসভা ভোটে প্রতাপগড় জেলার ধারিয়াওয়াড় আসনে প্রায় ২৫ হাজার ভোটে জিতেছিলেন বিজেপি প্রার্থী। এ বার সেখানে তৃতীয় স্থানে নেমে গিয়েছে পদ্ম-শিবির।

Advertisement

ছ’মাস আগে নদিয়া জেলার শান্তিপুর বিধানসভা কেন্দ্রে ১৫ হাজার ৮৭৮ ভোটে জিতেছিলেন রাণাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার। পরে বিধায়ক পদে ইস্তফা দেন তিনি। এ বার সেখানে উপনির্বাচনে ৬৪ হাজার ৬৭৫ ভোটে সেখানে জিতেছেন তৃণমূলের প্রার্থী ব্রজকিশোর গোস্বামী। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ১ লক্ষ ১২ হাজার ৮৭। অন্য দিকে বিজেপি প্রার্থী নিরঞ্জন বিশ্বাস পেয়েছেন ৪৭ হাজার ৪১২ ভোট। আলাদা ভাবে লড়ে সিপিএম ৩৯ হাজার ৯৫৮ এবং কংগ্রেস ২,৮৭৭ ভোট পেয়েছে। ছ’মাস আগে এই কেন্দ্রে বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থীর ঝুলিতে মাত্র ৯,৮৪৮ ভোট গিয়েছিল।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

পাশের জেলা উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহেও কার্যত বামেদের সঙ্গে দ্বিতীয় হওয়ার লড়াই লড়তে হয়েছে বিজেপি-কে। নীলবাড়ির লড়াইয়ে বিজেপি প্রার্থী ৬১ হাজার ৬৬৭ ভোট পেলেও এ বার তা কমে হয়েছে ২০ হাজার ২৫৪। অন্য দিকে, মাত্র ছ’মাসের মধ্যে বামেদের ভোট ১৬ হাজার ১১০ থেকে বেড়ে হয়েছে ২৬ হাজার ৯১৬!

উপনির্বাচনে সবচেয়ে চমকপ্রদ ফল হয়েছে কোচবিহারের দিনহাটা বিধানসভায়। সেখানে ৫৭ ভোটে জিতেছিলেন বিজেপি প্রার্থী তথা স্থানীয় সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক। কিন্তু পরে ইস্তফা দেন তিনি। এর পর অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পান। মঙ্গলবার ফল প্রকাশের পর দেখা যাচ্ছে, দিনহাটায় ৫৭ ভোটে নিশীথের কাছে হেরে যাওয়া উদয়ন গুহ জিতেছেন ১ লাখ ৬৪ হাজার ৮৯ ভোটে। নিশীথ তাঁর নিজের বুথে হেরেছেন। উদয়নের বিরুদ্ধে ভোটে-লড়া বিজেপি প্রার্থীও তাঁর বুথে হেরেছেন।

এমনকি, সেখানে জামানতটুকুও রাখতে পারেনি বিজেপি। পেয়েছে সাকুল্যে ২৫ হাজার ২৮৪ ভোট। শতাংশের হিসেবে ১১.৩৩। বস্তুত, উত্তরবঙ্গের ওই কেন্দ্রে ২০১৬-র চেয়েও খারাপ ফল করেছে বিজেপি। পাঁচ বছর আগে তৃণমূলের জেতা দিনহাটা কেন্দ্রে ১১.৫৮ শতাংশ ভোট পেয়েছিল বিজেপি। অঙ্কের হিসেবে ২৫ হাজার ৫৯৮।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা আসনে ছ’মাসে জয়ের ব্যবধান ছ’গুণ বাড়িয়ে নিয়েছে তৃণমূল। নীলবাড়ির লড়াইয়ে সেখানে তৃণমূল প্রার্থী জয়ন্ত নস্করের কাছে ২৩ হাজার ৭০৯ ভোটে হেরেছিল বিজেপি। এ বার তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত মণ্ডলের কাছে হেরেছে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৫১ ভোটে। বিজেপি-র ভোট ৮২ হাজার থেকে কমে হয়েছে ১৮ হাজার ৪২৩! ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে গোসাবায় বিজেপি প্রার্থী পেয়েছিলেন ১১ হাজার ৫০৪ ভোট।

আরও পড়ুন
Advertisement