গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
আদালতে ভুল তথ্য দিয়ে ক্ষমা চাইলেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সচিব। সোমবার কলকাতা হাই কোর্টে হাজিরা দিয়ে তিনি নিঃশর্ত ক্ষমা চান। ভুলের জন্য দফতরের চার কর্মীকে দায়ী করলেন তিনি। আদালত ভুল শুধরে দ্রুত পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিল পর্ষদকে। বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর নির্দেশ, আগামী ২২ জানুয়ারির মধ্যে আদালতের নির্দেশ কার্যকর করতে হবে। পর্ষদকে রিপোর্ট দিয়ে জানাতে হবে, কোথায় গাফিলতি ছিল। তার প্রেক্ষিতে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে বাঁকুড়া শালতোড়া গার্লস হাই স্কুলে চাকরির সুপারিশপত্র পেয়েছিলেন উমা প্রামাণিক। ওই বছর তাঁকে সুপারিশপত্র দেয় এসএসসি। অভিযোগ, সুপারিশপত্র পাওয়ার পরে দু’বছর কেটে গেলেও উমাকে নিয়োগপত্র দেয়নি মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। হাই কোর্টে মামলা দায়ের হলে পর্ষদ জানায়, এসএসসি কোনও সুপারিশপত্র দেয়নি। তাই চাকরি দেওয়া সম্ভব হয়নি। এর পরে এসএসসি সুপারিশপত্র দেওয়ার প্রমাণ তুলে ধরতেই মামলার মোড় ঘুরে যায়। আদালতের পর্যবেক্ষণ, পর্ষদ অসত্য তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে। তাদের গাফিলতির কারণেই এত দিনেও চাকরি পাননি মামলাকারী। পর্ষদের ভূমিকায় ক্ষোভপ্রকাশ করে সচিবকে তলব করেন বিচারপতি। আদালত জানায়, কেন তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তার কারণ জানাতে হবে।
সোমবার ওই মামলার শুনানিতে আদালতে হাজিরা দেন পর্ষদ সচিব সুব্রত ঘোষ। আদালতের কাছে ক্ষমা চেয়ে তাঁর বক্তব্য, ভুল পর্ষদেরই ছিল। আসলে দফতরের চার কর্মীর উদাসীনতার কারণেই ওই ভুল হয়েছে। এর জন্য দায়ী দফতরের এক সহকারী সচিব, পর্ষদ সভাপতির পিএ এবং দু’জন চুক্তিভিত্তিক গ্রুপ-সি কর্মী। তাঁদের প্রত্যেককে শোকজ করা হবে। আদালতে পর্ষদ সচিব নিশ্চিত করেন, ওই চার কর্মীর বিরুদ্ধে কেন বিভাগীয় পদক্ষেপ করা হবে না, তার ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। পর্ষদের সচিবের এই ভূমিকায় আস্থা রেখেছে হাই কোর্ট। বিচারপতি বসু জানান, একজন যোগ্যকে এত দিনেও চাকরি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এর জন্য যাঁরাই দায়ী প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। ওই চার জনের বিরুদ্ধে পর্ষদ সচিব কী পদক্ষেপ করেছেন, আগামী শুনানিতে আদালতে রিপোর্ট দিয়ে তা জানাতে হবে।