ভোট দিয়ে বাড়ির পথে গোসাবা বিধানসভার ভোটাররা। নিজস্ব চিত্র।
উপ নির্বাচনের শেষ বেলায় ছাপ্পাভোটের অভিযোগ ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল খড়দহ। ওই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী জয় সাহার অভিযোগ, বন্দিপুর আইডিয়াল স্কুলে উপস্থিত ছিলেন এক ভুয়ো ভোটার। ওই বিষয়কে কেন্দ্র করে তৃণমূল এবং বিজেপি-র মধ্যে ধস্তাধস্তি বেধে যায়। জয়ের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষীরা লাঠি চার্জও করলে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে। জয়ের অভিযোগ, ‘‘অনুপ্রবেশকারীদের এনে ভুয়ো ভোট দেওয়া হয়েছে। ভুয়ো ভোটার ধরার জন্য, আমাকে তৃণমূল মারার চেষ্টা করেছে। ’’ পাল্টা ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দেন তৃণমূল কর্মীরা, তাঁদের অভিযোগ, বিজেপি শান্তিপূর্ণ জায়গাকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে। পদ্ম-প্রার্থী মিথ্যা কথা বলছেন বলেও তোপ জোড়াফুল শিবিরের। ধস্তাধস্তিতে খড়দহের প্রয়াত জয়ী তৃণমূল প্রার্থী কাজল সিংহের ছেলেও জড়িয়ে পড়েন।
খড়দহে সম্মুখসমরে তৃণমূল-বিজেপি। নিজস্ব চিত্র।
ছাপ্পা ভোট দিতে বাধা দেওয়ায় বিজেপি-র পোলিং এজেন্টকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এই ঘটনা ঘটেছে দিনহাটার বড়শাকদল গ্রাম পঞ্চায়েতের ৭/৭৬ নম্বর বুথে। আহত অবস্থায় গুরুদাস মোদক নামের ওই বিজেপি কর্মীর দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ওই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অশোক মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘এর আগে পোলিং এজেন্টদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভয় দেখানো হয়েছে। বাড়িতে বোমা ছোড়া হয়েছে। এর পর আজ ছাপ্পা ভোট দেওয়ায় বাধা দেওয়াতেই মারধর করা হয়েছে।’’ যদিও দিনহাটার তৃণমূল প্রার্থী উদয়ন গুহের বক্তব্য, ‘‘সারা দিন শুনলাম, তৃণমূল না কি বিজেপি-র পোলিং এজেন্টকে বসতে দেয়নি। অথচ ওদের পোলিং এজেন্ট মার খেয়েছে। তা হলে কোনটা ঠিক? বিষয়টি সত্যি হলে তা খতিয়ে দেখা হবে।’’ তাঁর মতে, ‘‘শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। আমরা বড় ব্যবধানে জিতব।’’
হাসপাতালে ভর্তি জখম বিজেপি কর্মী। নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যের চার কেন্দ্রে চলছে ভোটগ্রহণ। বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভোটদানের হারে এগিয়ে রয়েছে শান্তিপুর বিধানসভা কেন্দ্র। চার কেন্দ্রের মধ্যে সবথেকে কম ভোট পড়েছে খড়দহে। বিকাল ৫টা অবধি ভোটদানের হার—
শান্তিপুর: ৭৬.১৪ শতাংশ
গোসাবা: ৭৫.৯১ শতাংশ
দিনহাটা: ৬৯.৯৭ শতাংশ
খড়দহ: ৬৩.৯০ শতাংশ
গোসাবায় একটি ভোটের লাইনে দূরত্ববিধি মেনে দাঁড়িয়েছেন মহিলারা। নিজস্ব চিত্র।
চার কেন্দ্রে চলছে ভোটগ্রহণ। বিকাল ৩টে পর্যন্ত ভোটদানের হারে এগিয়ে রয়েছে গোসাবা বিধানসভা কেন্দ্র। চার কেন্দ্রের মধ্যে সবথেকে কম ভোট পড়েছে খড়দহে। বিকাল ৩টে অবধি ভোটদানের হার—
শান্তিপুর: ৬৪.১৮ শতাংশ
গোসাবা: ৬৬.০৭ শতাংশ
দিনহাটা: ৬১.৫২ শতাংশ
খড়দহ: ৫২.৩৭ শতাংশ
ভোটকেন্দ্রে ঢোকার আগে ভোটার দের দেহের তাপমাত্রা পরীক্ষা হচ্ছে গোসাবার একটি বুথে। নিজস্ব চিত্র।
ভোট দিলেন গোসাবার প্রয়াত বিধায়ক জয়ন্ত নস্করের স্ত্রী অনিতা নস্কর। শনিবার দুপুরে হরিণখালি অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২২ নম্বর বুথে ভোট দিয়েছেন তিনি। ভোটের পর তিনি বলেছেন, ‘‘গোসাবার মানুষকে যে ভাবে ভালোবেসেছিলেন জয়ন্ত নস্কর, তার প্রতিদান গোসাবার মানুষ দেবেন। তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত মণ্ডল বিপুল ভোটে জিতবেন।’’
ভোট দিতে যাচ্ছেন অনিতা নস্কর। নিজস্ব চিত্র।
সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ঢোকার অভিযোগ উঠল কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের বিরুদ্ধে। বুথে ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে ঢুকে নির্বাচনীবিধি ভঙ্গের অভিযোগ তুলেছেন দিনহাটার তৃণমূলপ্রার্থী উদয়ন গুহ। দিনহাটার ২৩২ নম্বর বুথে একাধিকবার নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে নিশীথ ঢুকেছেন বলে অভিযোগ।
নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে বুথের বাইরে নিশীথ। নিজস্ব চিত্র।
চার কেন্দ্রে চলছে ভোটগ্রহণ। বেলা ১টা পর্যন্ত ভোটদানের হারে এগিয়ে রয়েছে গোসাবা বিধানসভা কেন্দ্র। সেখানে ভোট পড়েছে ৫০ শতাংশের বেশি। চার কেন্দ্রের মধ্যে সবথেকে কম ভোট পড়েছে খড়দহে। সেখানে ভোট পড়েছে ৪০ শতাংশেরও কম। বেলা ১টা পর্যন্ত চার কেন্দ্রে ভোটের হার—
শান্তিপুর: ৪৮.০২ শতাংশ
গোসাবা: ৫২.১৯ শতাংশ
দিনহাটা: ৪৭.৮৩ শতাংশ
খড়দহ: ৩৬.৭০ শতাংশ
গোসাবায় ভোটের লাইনে মহিলারা। নিজস্ব চিত্র।
শান্তিপুর বিধানসভার গোবিন্দপুর মাহিষ্যপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪১ নম্বর বুথে ভোট দিয়েছেন শান্তিপুরের বিজেপি প্রার্থী নিরঞ্জন বিশ্বাস। ভোট দেওয়ার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ভোটারদের ভয় দেখানোর জন্য তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘‘শাসকদল গোটা বিধানসভা জুড়ে সন্ত্রাস চালাচ্ছে। আমরা সেই সন্ত্রাসের মোকাবিলা করেই প্রতি বুথে এজেন্ট দিয়েছি। ভয় উপেক্ষা করে মানুষ দু’হাত তুলে বিজেপি-কে আশীর্বাদ করবে।’’
ভোট দিয়ে বেরিয়ে শান্তিপুরের বিজেপি প্রার্থী নিরঞ্জন। নিজস্ব চিত্র।
দিনহাটার উপনির্বাচনে ভোট দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক। ভেটাগুড়ির চৌপথি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭/২৩৪ নম্বর বুথে ভোট দিয়েছেন তিনি। বিধানসভা নির্বাচনের সময় দিনহাটা কেন্দ্র থেকে ৫৭ ভোটে জিতেছিলেন নিশীথ। ভোটে জিতলেও বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে সাংসদ থেকে গিয়েছেন তিনি। সে জন্যই উপনির্বাচন হচ্ছে দিনহাটায়।
ভোট দেওয়ার পর নিশীথ। নিজস্ব চিত্র।
দিনহাটার বামনহাটে ৯০ বুথে অসুস্থ হয়ে পড়লেন ধর্মরাজ পাড়ালি নামে এক প্রিসাইডিং অফিসার। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অবশ্য ওই বুথে ভোটগ্রহণ স্বাভাবিক বলে কমিশন জানিয়েছে।
অসুস্থ প্রিসাইডিং অফিসার। নিজস্ব চিত্র।
ঘোলার একটি ভোট কেন্দ্রে জাল ভোটার ধরার দাবি করেছে বিজেপি। ওই এলাকার শশীভূষণ উচ্চ বিদ্যালয়ে জাল ভোটার ধরার দাবি করেছেন বিজেপি প্রার্থী জয় সাহা। তাঁর অভিযোগ, দু’জন জাল ভোটার উপস্থিত হয়েছিলেন ওই কেন্দ্রে। তাঁরা পালানোর চেষ্টা করলে জয় তাঁদের ধরে ফেলেন বলেও দাবি। বিষয়টি নিয়ে রিপোর্টও তলব করেছে নির্বাচন কমিশন।
‘ভুয়ো’ ভোটারকে ঘিরে ধস্তাধস্তি। নিজস্ব চিত্র।
খড়দহে আক্রান্ত হলেন সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য। তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে ইট ছোড়ার অভিযোগ। তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তন্ময়। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
আহত তন্ময় ভট্টাচার্য। নিজস্ব চিত্র।
কিছুটা ধীর লয়েই চলছে রাজ্যের চার কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ। শান্তিপুর এবং গোসাবায় বেলা ১১টা অবধি ৩০ শতাংশের বেশি ভোট পড়লেও দিনহাটা এবং খড়দহে তা ৩০ শতাংশের কম। বেলা ১১টা চার কেন্দ্রে ভোটের হার—
শান্তিপুর: ৩২.৩১ শতাংশ
গোসাবা: ৩৩.৮৭ শতাংশ
দিনহাটা: ২৮.৭৩ শতাংশ
খড়দহ: ২৩.৬০ শতাংশ
ভোট দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে। গোসাবায় শনিবার। নিজস্ব চিত্র।
শনিবার সকালে ভোট দিলেন প্রয়াত তৃণমূল নেতা কাজল সিন্হার স্ত্রী নন্দিতা সিন্হা। গত নির্বাচনে খড়দহ থেকে তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন কাজল। কিন্তু ভোটের ফলপ্রকাশের আগেই কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় কাজলের। ২ মে ফল প্রকাশের দিন দেখা যায় ওই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শীলভদ্র দত্তকে ২৮ হাজার ১৪০ ভোটে পরাজিত করেছেন কাজল। কিন্তু তিনি বেঁচে না থাকায় ফের ভোট হচ্ছে এই কেন্দ্রে। এ বারের উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।
ভোট দিলেন নন্দিতা। নিজস্ব চিত্র।
খড়়দহ বিধানসভার ৪৯ নম্বর বুথের ভিতরে ভোটারদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ সিআরপিএফ-এ বিরুদ্ধে। অভিযোগ করেছে তৃণমূল।
খড়দহের ১০৫ এবং ১০৫এ নম্বর বুথে মোবাইল নিয়ে ভোটারদের বুথে ঝুকতে সিআরপিএফ বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ তৃণমূলের
গোসাবার ৪৮এ এবং ৪৯এ বুথে সিআরপিএফ অযথা ভোটারদের বিরক্ত করছে বলে অভিযোগ তৃণমূলের।
দিনহাটার ২৯৬ নম্বর বুথেও সিআরপিএফ-এ বিরুদ্ধে ভোটারদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে রাজ্যের শাসকদল।
গোসাবায় ভোটকেন্দ্রের পথে কেন্দ্রীয় বাহিনী। নিজস্ব চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গের চারটি কেন্দ্রের উপনির্বাচনে শনিবার সকাল থেকে চলছে ভোটগ্রহণ। সকাল ৯টা পর্যন্ত ভোটদানের হিসাবে সবথেকে বেশি ভোট পড়েছে শান্তিপুরে (১৫.৪০ শতাংশ)। দিনহাটায় ভোট পড়েছে ১১.১২ শতাংশ, খড়দহে ১১.৪০ শতাংশ এবং গোসাবায় ১০.৩৭ শতাংশ। ভোটগ্হণও শান্তিপূর্ণ রয়েছে বলে জানানো হয়েছে নির্বাচন কমিশনের তরফে।
ভোট দিয়ে বেরনোর পর এক পরিবারের সদস্যদের সেলফি। নিজস্ব চিত্র।
ভোট দিলেন দিনহাটার তৃণমূলপ্রার্থী উদয়ন গুহ। দিনহাটা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে শনিবার সকালে ভোট দিয়েছেন তিনি। ভোট দেওয়ার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে উদয়ন বলেছেন, ‘‘শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হচ্ছে। কোথাও জায়গা থেকে কোনও অভিযোগ নেই।’’
ভোট দেওয়ার পর উদয়ন। নিজস্ব চিত্র।
শান্তিপুর বিধানসভার গোবিন্দপুর মাহিষ্যপাড়ার ৪০ নম্বর বুথে বিকল হয় ইভিএম। যার জেরে, সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়েও ভোট দিতে পারেননি ওই বুথের ভোটাররা। তবে ভোটকর্মীরা নতুন ইভিএম মেশিন এনে ভোট শুরু করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
দিনহাটার বিজেপি প্রার্থী অশোক মণ্ডলের পরিবার শনিবার সকালেই ভোট দিতে এসেছিলেন দিনহাটা হাইস্কুলে। অভিযোগ, তখন তাঁদের বাধা দেন তৃণমূলকর্মীরা। সে সময় অশোকও উপস্থিত ছিলেন সেখানে। যদিও তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, বহিরাগত লোক নিয়ে এসে ভোটারদের প্রভাবিত করছেন বিজেপি প্রার্থী।
বুথে ঢুকতে বাধা পেয়ে মেজাজ হারান বিজেপি প্রার্থী। নিজস্ব চিত্র।
ভোট শুরু হওয়ার ঘণ্টাখানেক কাটতে না কাটতেই তৃণমূলকর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন খড়দহের বিজেপি প্রার্থী জয় সাহা। খড়দহ বিধানসভার ১৯৪ নম্বর বুথের বাইরে শাসকদলের কর্মীদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। অভিযোগ, তাঁকে ঘিরে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দিয়েছেন তৃণমূলকর্মীরা। তৃণমূলের অভিযোগ, নির্বাচনীবিধি ভেঙে গাড়িতে লোগো লাগিয়ে ঘুরছেন জয়। ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠেছে জয়ের বিরুদ্ধে। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করে, তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোটারদের ভোটদানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি প্রার্থী জয়। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী। জয় সাহা বলেছেন, ‘‘সকাল থেকেই তৃণমূলের লোকেরা বুথের সামনে জমায়েত করছেন। ভোট দিতে বাধা দিচ্ছেন।’’ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসকদল।
খড়দহে বিক্ষোভকারীদের হঠিয়ে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। নিজস্ব চিত্র।