West Bengal Weather Update

বাংলায় বর্ষার পথে কাঁটা ঘূর্ণিঝড় আর নয়া ঘূর্ণাবর্ত! দহন-পরিস্থিতি আর কত দিন? জানাল হাওয়া অফিস

মৌসম ভবন মঙ্গলবার জানিয়েছে, আরব সাগরে দানা বাঁধা ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘বিপর্যয়’। সে কোথায় আছড়ে পড়বে, তা এখনও নিশ্চিত নয়। আবহবিদদের আশঙ্কা, বর্ষার উপরে কুপ্রভাব ফেলবে ওই ঝড়।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২৩ ০৮:৪১
Heatwave

তাপপ্রবাহের দুপুরে রেড রোডে মরীচিকা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

পারদের গণিত বা পরিভাষা মিলিয়ে তাপপ্রবাহ হোক বা না-হোক, প্রবল তাপে জ্বলছে বাংলা। তার উপরে বঙ্গের দহনযন্ত্রণায় নুন ছিটোতে দেশের পশ্চিম প্রান্তে একটি ঘূর্ণিঝড় আর দক্ষিণ-পূর্বে একটি ঘূর্ণাবর্ত হাজির হয়েছে। দহন-দুর্বিপাক কাটিয়ে আসবে বর্ষা, বাংলা যখন এই আশায় বুক বাঁধছে, তখনই সমস্যামুক্তির সম্ভাবনায় জল ঢালছে আরব সাগর এবং মায়ানমার সংলগ্ন সমুদ্র।

মৌসম ভবন মঙ্গলবার জানিয়েছে, আরব সাগরে দানা বাঁধা ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘বিপর্যয়’ (বাংলাদেশের দেওয়া)। সে কোথায় আছড়ে পড়বে, তা এখনও নিশ্চিত নয়। আবহবিদদের আশঙ্কা, বর্ষার উপরে কুপ্রভাব ফেলবে ওই ঝড়। ঠিক যেমন বাংলায় বর্ষার পথে কাঁটা বিছিয়ে দিয়েছে মায়ানমারের উপকূলে থাকা একটি ঘূর্ণাবর্ত।

Advertisement

কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল) সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘আরব সাগরের ঘূর্ণিঝড় বা মায়ানমারের ঘূর্ণাবর্ত পশ্চিমবঙ্গের পক্ষে অনুকূল কোনও পরিস্থিতি তৈরি করতে পারবে না।’’ মৌসম ভবনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান জানান, শনিবার পর্যন্ত বঙ্গে এই দহন-পরিস্থিতি চলবে। তবে শনিবার থেকে উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও ডুয়ার্সে বৃষ্টি বাড়তে পারে।

স্বাভাবিক নির্ঘণ্ট অনুযায়ী ১ জুন যার কেরলে পৌঁছনোর কথা, বিলম্বের পূর্বাভাস মিলিয়ে দিয়ে সেই বর্ষা জুনের ৬ তারিখেও সেখানে ঢোকেনি। দিন দুয়েকের মধ্যে সে ওই রাজ্যে ঢুকবে না বলে মৌসম ভবনের ইঙ্গিত। মৌসুমি বায়ু কেরলে পৌঁছনোর পরে তার পূর্ব ভারতে আসতে অন্তত এক সপ্তাহ লাগে। তাই জুনের তৃতীয় সপ্তাহেও বর্ষা বঙ্গভূমিতে পা ফেলবে কি না, সেই বিষয়ে প্রশ্ন ও সংশয় জোরদার হয়েছে। অনেক আবহবিদ অবশ্য মনে করিয়ে দিচ্ছেন, জুনে যে এ বার সারা দেশে বর্ষণের ঘাটতি হবে, মৌসম ভবনের বিজ্ঞানীরা সেটা অনেক আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন।

বর্ষা যথাসময়ে উপস্থিত না-হওয়ায় আপাতত বঙ্গে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে গরম। গাঙ্গেয় বঙ্গ এবং গৌড়বঙ্গের জেলাগুলিতে তাপপ্রবাহ চলছে। তার পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্স এবং উপকূলবর্তী বঙ্গেও গরমের তীব্রতা মারাত্মক। রোদে বেরোলে ঘামের অস্বস্তি তো আছেই, তার উপরে গরমে মাথা ধরার সমস্যায় ভুগছেন অনেকে। গরম থেকে বাঁচতে কেউ নাকমুখ কাপড়ে ঢেকে রাস্তার বেরোচ্ছেন, কেউ বা রুমাল ভিজিয়ে ফেলে রাখছেন ঘাড়ে। মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গে সব থেকে বেশি তাপমাত্রা ছিল বাঁকুড়ায়— ৪২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ক্ষীণ আশার খবর, এ দিন প্রবল গরমের মধ্যেই হুগলির আরামবাগ-সহ জেলার কিছু কিছু অঞ্চলে ঝড়বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হয়েছে কলকাতার উপকণ্ঠে সল্টলেকেও। আবহবিদেরা বলছেন, গরম আর জলীয় বাষ্পের উপস্থিতিতে স্থানীয় ভাবে কিছু এলাকায় ঝড়বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু তাতে গরম থেকে সার্বিক স্বস্তির সম্ভাবনা নেই। বড়সড় এলাকা জুড়ে ঝড়বৃষ্টি বা কালবৈশাখী হলে গরমের দাপট থেকে কিছু ক্ষণের জন্য রেহাই মিলতে পারে। কিন্তু তেমন পূর্বাভাসের তথ্য আপাতত নেই।

আরও পড়ুন
Advertisement