সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। — ফাইল চিত্র।
প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা চলছে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের। জেল কর্তৃপক্ষের তরফে তাঁর অসুস্থতার শংসাপত্র (আনফিট সার্টিফিকেট) পাঠানো হয়েছে বিচার ভবনে সিবিআই আদালতে। পাশাপাশি এ-ও জানানো হয়েছে, তাঁদের মনে হচ্ছে শুক্রবার আদালতে সশরীরে হাজির করানো যাবে তাঁকে। এর পরেই সিবিআই আদালত নির্দেশ দিয়েছে, শুক্রবার বেলা ১২টার মধ্যে হাজির করাতে হবে সুজয়কৃষ্ণকে। সিবিআই যে ‘শোন অ্যারেস্ট’-এর আবেদন করেছে, তা শুক্রবারই বিবেচনা করা হবে। ইডির পর সিবিআই-ও সুজয়কৃষ্ণের কণ্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষা করতে চেয়ে বৃহস্পতিবার আদালতে আবেদন করেছে।
প্রসঙ্গত, সিবিআই আদালতে বৃহস্পতিবারও সশরীরে হাজিরা দিতে পারেননি সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। ইডির হাতে গ্রেফতার হয়ে তিনি এখন প্রেসিডেন্সি জেলে রয়েছেন। জেল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, সুজয়কৃষ্ণ অসুস্থ।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অন্য দুই অভিযুক্তের সঙ্গে মঙ্গলবার সিবিআই আদালতে হাজির করানোর কথা ছিল সুজয়কৃষ্ণকে। কিন্তু তিনি সশরীরে আদালতে হাজির হননি। জেলের তরফে জানানো হয়, তিনি অসুস্থ থাকায় আদালতে হাজির করানো যায়নি। এর পরেই সিবিআই আদালতের বিচারক বৃহস্পতিবার সুজয়কৃষ্ণকে সশরীরে হাজির করার নির্দেশ দেন।
সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হতে পারেন মনে করে বুধবার কলকাতা হাই কোর্টে আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেন সুজয়। সেই শুনানি ছিল বৃহস্পতিবার। আবার বৃহস্পতিবারই সিবিআই আদালতে হাজির হওয়ার কথা ছিল তাঁর। যদিও তিনি সশরীরে হাজির হননি। আদালতে জেল সুপারের মাধ্যমে ‘আনফিট সার্টিফিকেট’ পাঠানো হয়েছে, যেখানে বলা ছিল সুজয়কৃষ্ণ অসুস্থ। ওই শংসাপত্র দিয়েছেন জেলের মেডিক্যাল অফিসার। সেখানে বলা হয়েছে, ডায়েরিয়া হয়েছে সুজয়কৃষ্ণের। তার ফলে ডিহাইড্রেশন হয়েছে, অর্থাৎ শরীরে জলের মাত্রা কমে গিয়েছে। পেটে খিঁচ ধরছে মাঝেমাঝে। তবে শুক্রবার তাঁকে কোর্টে হাজির করানোর মতো স্থিতিশীল করা যেতে পারে। তার পরেই শুক্রবার দুপুর ১২টার মধ্যে সুজয়কৃষ্ণকে আদালতে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
সিবিআই সুজয়কৃষ্ণকে ‘শোন অ্যারেস্ট’ দেখাতে চাইছে। বিচারক বৃহস্পতিবার জানিয়ে দেন, সশরীরে না এলে কাউকে হেফাজতে নেওয়া যাবে না। এর পরেই কেন্দ্রীয় দল জানায়, তারা ‘কাকু’র কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে চায়। কিন্তু যত ক্ষণ না তাঁকে ‘শোন অ্যারেস্ট’ দেখানো হচ্ছে, তত ক্ষণ তা করা যাবে না। তাদের বক্তব্য, নিয়োগকাণ্ডের তদন্তও এই মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ মোড় নিয়েছে। ‘কাকু’ এবং নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে আর এক অভিযুক্ত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেরা করে এই মামলায় গুরুত্বপূর্ণ সূত্র পাওয়া যেতে পারে। তাই তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্যেও হেফাজতে নেওয়া প্রয়োজন। সুজয়কৃষ্ণের পাশাপাশি রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যেয়র ‘ঘনিষ্ঠ’ এজেন্ট সন্তু গঙ্গোপাধ্যায় এবং হুগলির বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা শান্তনুরও কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে চাইছে সিবিআই। এই আবেদন নিয়ে শুক্রবার বিচার করবে আদালত।