Bangladesh Unrest

‘চিন্ময় আমাদের কেউ নন’, বিশৃঙ্খলার মাঝে বিবৃতি দিল ইসকন, জানাল বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম

বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’র সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার দুপুরেই সাংবাদিক বৈঠক করে সে দেশের ইসকনের নেতারা জানিয়েছেন, চিন্ময়ের কোনও কাজের দায় ইসকন নেবে না। তাঁকে ইসকন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:০৬
বাংলাদেশের ইসকনের প্রতিনিধি তথা সংখ্যালঘু নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাস।

বাংলাদেশের ইসকনের প্রতিনিধি তথা সংখ্যালঘু নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাস। — ফাইল চিত্র।

বাংলাদেশে সম্মিলিত সনাতন জাগরণ জোটের মুখপাত্র তথা ইসকনের পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময়কৃষ্ণ প্রভুর গ্রেফতারি ঘিরে উত্তাল বাংলাদেশ। সেই আবহেই এ বার সে দেশের ইসকন জানিয়ে দিল, চিন্ময় তাদের কেউ নন। তাঁকে ইসকন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এখন থেকে তাঁর কোনও বক্তব্য কিংবা কাজকর্মের দায় নেবে না বাংলাদেশ ইসকন। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ একটি প্রতিবেদনে এ কথা জানিয়েছে।

Advertisement

‘প্রথম আলো’র ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরেই সাংবাদিক বৈঠক করে সে দেশের ইসকনের নেতারা জানিয়েছেন, চিন্ময়ের কোনও কাজের দায় ইসকন নেবে না। বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ ঢাকার স্বামীবাগে ওই সাংবাদিক বৈঠকের আয়োজন করেছিল ইসকন বাংলাদেশ। সেখানেই ইসকনের সাধারণ সম্পাদক চারুচন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী বলেন, ‘‘মাস কয়েক আগেই শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলারাজ গৌর দাস, সদস্য গৌরাঙ্গ দাস এবং চট্টগ্রামের পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে বহিষ্কার করেছে ইসকন বাংলাদেশ। তাই তাঁর কোনও রকম বক্তব্য কিংবা কার্যকলাপের দায় ইসকনের নয়।’’

সাংবাদিক বৈঠকের প্রশ্নোত্তর পর্বে ইসকন বাংলাদেশের কার্যনির্বাহী কমিটি ও শিশুসুরক্ষা দলের সদস্য হৃষীকেশ গৌরাঙ্গ দাস জানান, চিন্ময়ের বিরুদ্ধে কয়েক জন শিশু হেনস্থার অভিযোগ তুলেছিলেন। অভিযোগের ভিত্তিতে চিন্ময়কে চিঠি দিয়ে কারণ দর্শাতে বলা হয়। তদন্তের স্বার্থে তিন মাসের জন্য পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ পদ থেকেও তাঁকে সরে দাঁড়াতে বলা হয়। কিন্তু তিনি নির্দেশ মানেননি। এর পরেই গত জুলাই মাসে চিন্ময়কে বহিষ্কার করে ইসকন। গত ৩ অক্টোবর আনুষ্ঠানিক ভাবে বিবৃতি দিয়ে তা জনসমক্ষে জানিয়েও দেয় ইসকন। ইসকনের কার্যকর্তাদের আরও দাবি, বাংলাদেশে চিন্ময়ের গ্রেফতারি এবং আইনজীবীর হত্যাকে কেন্দ্র করে ইসকনের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। অনেকে বলছেন, আইনজীবীকে খুনের ওই ঘটনায় ইসকন ও তার সমর্থকদের হাত রয়েছে। কিন্তু এই ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে আদতে ইসকনের কোনও সম্পর্ক নেই।

উল্লেখ্য, ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে চেয়ে বুধবার দেশের হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেছিল মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার। কিন্তু চাপের মুখে বৃহস্পতিবারই ইসকনের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারতও। বৃহস্পতিবারই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।

গত ৫ অগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপরে নির্যাতনের একের পর এক অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতে থাকে। দেশজোড়া অশান্তির আবহে বেশ কিছু ধর্মীয় সংগঠন মিলে তৈরি করে সনাতনী জাগরণ মঞ্চ। সেই মঞ্চের মুখপাত্র নির্বাচিত হয়েছিলেন চিন্ময়। তাঁরই ডাকে ঢাকার শহিদ মিনার, চট্টগ্রাম ইত্যাদি নানা এলাকায় সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন হাজার হাজার সংখ্যালঘু। কিন্তু চট্টগ্রামে সমাবেশের পর তাঁর বিরুদ্ধে স্থানীয় এক বিএনপি নেতা দেশদ্রোহের মামলা করেন। ওই মামলাতেই সোমবার গ্রেফতার হন চিন্ময়। চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারির পর থেকেই বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। পথে নেমেছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ। মঙ্গলবার চিন্ময়কৃষ্ণকে আদালত থেকে বার করার সময় আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী এবং আইনজীবীদের সঙ্গে তাঁর অনুগামীদের সংঘর্ষ বাধে। ঘটনায় এক আইনজীবী নিহত হন।

আরও পড়ুন
Advertisement