গত জুলাই মাসে পরিবহণ দফতরের তরফে ব্যক্তিগত বাইকগুলিকে বাণিজ্যিকীকরণ করার কথা ঘোষণা করা হয়। — ফাইল চিত্র।
নম্বর বদল না করেই প্লেটের রং বদল করা যাবে অ্যাপ বাইকের। এক কথায় ব্যক্তিগত বাইকগুলিকে বাণিজ্যিক বাইকে রূপান্তরিত করার এই সুযোগ অ্যাপ বাইক সংস্থাগুলিকে দিয়েছিল পরিবহণ দফতর। দ্রুত এই কাজ করতে একটি নির্দেশিকাও জারি করেছিল তারা। কিন্তু পরিবহণ দফতরের সেই ফরমান মানেনি বেশির ভাগ অ্যাপ বাইক সংস্থা। তাই এ বার তাদের কড়া চিঠি পাঠানো হল পরিবহণ দফতরের তরফে। যদিও প্রশাসনিক পরিভাষায় এই চিঠিকে নোটিস হিসাবে বিবেচনা করা হয় বলেই জানাচ্ছেন পরিবহণ দফতরের একাংশ। গত জুলাই মাসে নির্দেশিকা জারি করা হলেও, তাতে কর্ণপাত করেনি কোনও সংস্থা। তাই এ বার ওলা, র্যাপিডো, উবর-সহ সুইগি, জ়োমাটো, অ্যামাজ়ন, ফ্লিপকার্টের মতো সংস্থাগুলিকে এই নোটিস পাঠানো হয়েছে। সেই নোটিসে বলা হয়েছে, তাদের সংস্থায় চলা সব অ্যাপ বাইকগুলিকে দ্রুত বাণিজ্যিকীকরণ করতে হবে।
গত জুলাই মাসে পরিবহণ দফতরের তরফে ব্যক্তিগত বাইকগুলিকে বাণিজ্যিকীকরণ করার কথা ঘোষণা করা হয়। পরিবহণ দফতরের তরফে জানানো হয়, মাত্র এক হাজার টাকা ব্যয় করে সাদা প্লেটের বদলে হলুদ নম্বর প্লেট লাগানো যাবে। ফলে বাইকটি সহজেই ব্যক্তিগত থেকে বাণিজ্যিক রূপ পেয়ে যাবে আইনি ভাবে। তাই যত দ্রুত সম্ভব অ্যাপ বাইকগুলিকে পরিবহণ দফতরের এই শর্ত পূরণ করতে হবে। কিন্তু পরিবহণ দফতর লক্ষ করে এত সুযোগ-সুবিধা দেওয়া সত্ত্বেও এই প্রক্রিয়া তেমন গতি পায়নি। তাই চলতি সেপ্টেম্বর মাসেই সংস্থাগুলিকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। সঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, দ্রুত পরিবহণ দফতরের নির্দেশ মানা না হলে তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পরিবহণ দপ্তরের এক কর্তার কথায়, “রাজ্য সরকার চেয়েছিল কম খরচে শহর জুড়ে থাকা অ্যাপ বাইক পরিষেবাকে আরও সহজ করে তোলা। যাতে বাণিজ্যিক ওই সংস্থাগুলির অধীনে কর্মরত বাইকগুলি পুলিশি হয়রানি থেকে মুক্তি পায়। এবং এই সুযোগে পরিবহণ দফতরের কিছু রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হয়। কিন্তু অ্যাপ বাইক সংস্থাগুলির উদাসীন মনোভাব দেখে বেজায় ক্ষুব্ধ পরিবহণ দফতর। তাই এই নোটিস পাওয়ার পরেও যদি কোনও ফল না হয়, তা হলে কঠিন পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও মাথায় রেখেছেন পরিবহণ দফতরের শীর্ষ কর্মকর্তারা।”
এই মুহূর্তে রাজ্য জুড়ে প্রায় ৪০ হাজার ব্যক্তিগত বাইক এই ধরনের পরিষেবা সংক্রান্ত কাজের সঙ্গে যুক্ত। যার মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশের বেশির বাণিজ্যিক অনুমোদন নেই। এই সব ব্যক্তিগত বাইকগুলিকে বাণিজ্যিক পথে আনাই আপাতত লক্ষ্য পরিবহণ দফতরের। তাই এ বার কিছুটা হলেও কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার পক্ষে তারা। যে ভাবে দিন দিন শহর এবং শহরতলির বাসিন্দারা অ্যাপ বাইক মারফত বিভিন্ন পরিষেবা পেতে অভ্যস্ত হয়ে উঠছেন তাতে এই বাইকগুলির বাণিজ্যিকীকরণ জরুরি বলেই মনে করছেন পরিবহণ দফতরের শীর্ষকর্তারা।