(বাঁ দিক থেকে) নির্যাতিতাকে নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে বীরবাহা হাঁসদা, মমতাবালা ঠাকুর এবং শিউলি সাহা। —নিজস্ব চিত্র
নন্দীগ্রামে গিয়ে নির্যাতিতা দলীয় কর্মীকে কলকাতায় নিয়ে এল তৃণমূলের আট সদস্যের প্রতিনিধিদল। রবিবার বিকেলেই নির্যাতিতা ওই তৃণমূলকর্মীকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তৃণমূল করার ‘অপরাধে’ এক মহিলাকে বিবস্ত্র করে রাস্তায় ঘোরানোর অভিযোগ ওঠে নন্দীগ্রামে। এই ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার নন্দীগ্রামে যায় তৃণমূলের আট সদস্যের প্রতিনিধিদল। এই দলে ছিলেন শিউলি সাহা, বিরবাহা হাঁসদা, সায়নী ঘোষ, উত্তরা সিংহ, মমতাবালা ঠাকুর, দোলা সেন, দেবাংশু ভট্টাচার্য এবং কুণাল ঘোষ।
তৃণমূলের অভিযোগ, নন্দীগ্রামের ১ নম্বর ব্লকের গোকুলনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চাননতলা এলাকায় এক বধূকে রাস্তায় বিবস্ত্র করে হাঁটানো হয়। এলাকায় ওই মহিলা তৃণমূলকর্মী বলেই পরিচিত। শুক্রবার রাতে তাঁর বাড়িতে চড়াও হয় কয়েক জন দুষ্কৃতী। ওই মহিলা এবং তাঁর ১৩ বছরের মহিলাকে বাড়ি থেকে বের করে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। তার পর তাঁকে নগ্ন করে প্রায় ৩০০ মিটার পথ হাঁটতে বাধ্য করা হয়। দুষ্কৃতী দলে ২০ থেকে ৩০ জন ছিল বলেও দাবি তৃণমূলের। এই ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর বিজেপির বুথ সভাপতি তাপস দাস-সহ বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছে নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ। সেই সঙ্গে বাকি অভিযুক্তদের সন্ধানেও তল্লাশি শুরু হয়েছে।
রবিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে নন্দীগ্রাম হাসপাতালে গিয়ে নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করেন তৃণমূলের প্রতিনিধিদলের সদস্যেরা। পরে তাঁকে কলকাতায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নন্দীগ্রাম থানার আধিকারিকদের সঙ্গেও কথা বলেন শাসকদলের নেতানেত্রীরা। এই প্রসঙ্গে কুণাল ঘোষ বলেন, “আমরা নন্দীগ্রাম থানার আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করলাম। যারা দোষী, তাদের অধিকাংশকেই চিহ্নিত করা গিয়েছে। যিনি নিগৃহীতা, তিনি নিজেই বয়ান দিয়েছেন। এখন জানা যাচ্ছে মহিলার নাবালিকা কন্যার উপরেও হামলা হয়েছে। তাই এই ঘটনায় পকসো আইনেও মামলা করার আবেদন জানিয়েছি আমরা।”
কুণালের অভিযোগ, গোকুলনগরের ওই জায়গায় এখন কেউ তৃণমূল করলেই বিজেপি তাঁর ওপরে অত্যাচার চালাচ্ছে। কুণালের কথায়, “নির্যাতিতার বাড়িতে একাধিক বার ভাঙচুর করা হয়েছে, হামলা হয়েছে। তার পরেও ওই পরিবার মাথা নত করেনি। ওঁরা শিরদাঁড়া বিক্রি করেননি। তার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।” পদ্মশিবির অবশ্য আগাগোড়াই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের মতে, সম্পূর্ণ পারিবারিক বিবাদকে রাজনৈতিক রং লাগানোর চেষ্টা চলছে। রবিবার বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী এই প্রসঙ্গে বলেন, “নিন্দনীয় ঘটনা। আমি তাঁর (নির্যাতিতা) বাড়ির সঙ্গে কথা বলেছি। আমি নিন্দা করেছি। এটা পারিবারিক ঘটনা। কিন্তু এই ঘটনায় আরও কেউ যদি অভিযুক্ত থাকে, তাঁকে গ্রেফতার করুন। কেউ বাঁচাতে যাবে না।”