তৃণমূলের সাংসদ শত্রুঘ্নের কংগ্রেসের রাহুলের প্রশংসা করে টুইট! গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আসানসোল থেকে ঘাসফুল প্রতীকে জিতে সাংসদে গিয়েছেন শত্রুঘ্ন সিন্হা। তাঁর হয়ে ভোট চাইতে খোদ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জনসভা পর্যন্ত করেছিলেন আসানসোলে। সেই শত্রুঘ্নই রাহুল গান্ধীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ! রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর বলতে গিয়ে দীর্ঘ ভাষণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু সেই ভাষণকে অন্তঃসার শূন্য বলে মনে করেন শত্রুঘ্ন। বরং তাঁর কাছে অনেক বেশি ভাল ‘ইয়ুথ আইকন’ রাহুলের বক্তব্য!
অভিনেতা থেকে নেতা হওয়া শত্রুঘ্নকে নিয়ে বিড়ম্বনায় তৃণমূল। শুক্রবার, শত্রুঘ্ন টুইটারে রাহুলের জোরদার ভাষণের তারিফ করেন। পাশাপাশি শত্রুঘ্ন এই প্রসঙ্গে রাহুলের তোলা প্রশ্নের উচিত জবাব না দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী মোদীকে কটাক্ষ করেন। শত্রুঘ্ন টুইটে লেখেন, ‘‘আমরা সবাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দেড় ঘণ্টাব্যাপী ভাষণ শুনেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্য হল, ওই ভাষণটি একেবারেই অসার। তিনি ‘ইয়ুথ আইকন’ রাহুল গান্ধীর তোলা কোনও প্রশ্নেরই জবাব দিতে পারেননি। সবাই রাহুল গান্ধীর প্রশংসা করছেন।’’
We all heard the hon'ble PM @narendramodi 1.5hrs long speech in Parliament, but unfortunately it lacked substance & didn't answer any of the questions raised by the dynamic, youth icon @RahulGandhi. People are all praise for Rahul Gandhi
— Shatrughan Sinha (@ShatruganSinha) February 10, 2023
এখানেই শেষ নয়, শত্রুঘ্নের টুইটে ট্যাগ করা হয়েছে মমতার টুইটার হ্যান্ডল এবং তৃণমূলকে। এ ছাড়াও শত্রুঘ্নের টুইটে ট্যাগ হয়ে রয়েছেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক, তাঁর ভাই অভিজিৎ ঘটকদের।
কিন্তু যে তৃণমূল বিজেপি ও কংগ্রেসের সঙ্গে সমদূরত্বের লাইন নিয়ে চলছে, সে দলেরই সাংসদ রাহুল গান্ধীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ! প্রত্যাশিত ভাবেই শত্রুঘ্নের টুইট থেকে দূরত্ব তৈরি করেছে বাংলার শাসকদল। শত্রুঘ্ন রাহুল প্রশস্তির টুইটে ট্যাগ করেছেন তৃণমূলের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আনন্দবাজার অনলাইন প্রতিক্রিয়ার জন্য যোগাযোগ করেছিল কল্যাণের সঙ্গে। শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ বলেন, ‘‘এটা কারও ব্যক্তিগত ব্যাপার। এখানে আমার কী বলার থাকতে পারে! আমি মাঠেঘাটে রাজনীতি করা লোক। অত টুইট দেখার সময় হয় না। জানিই না উনি কী লিখেছেন। শত্রুঘ্ন যদি কিছু বলে থাকেন তা তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত অভিমত। দল তাঁকে এ কথা বলতে বলেনি, এটা দলের নীতিও নয়।’’
তবে এই প্রথম নয়। এর আগেও রাহুলের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন বিহারিবাবু। গত ৯ জানুয়ারি, শত্রুঘ্ন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপচারিতার সময় রাহুলকে একজন ‘ইয়ুথ আইকন’ বলে অভিহিত করে দাবি করেছিলেন, তিনি একজন ‘সিরিয়াস’ নেতা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। বিরোধীদের সমালোচনার সমুচিত জবাব দিয়েছেন রাহুল। কংগ্রেসের ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’কে বিজেপির নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণীর রথযাত্রার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। তা নিয়েও বিপাকে পড়েছিল তৃণমূল। সে যাত্রায় শত্রুঘ্নের বক্তব্যের সঙ্গে দলের যোগ নেই বলে দাবি করেছিলেন সৌগত রায়। শত্রুঘ্নকেও এ কথা জানানো হয়েছিল বলেও দাবি করেছিলেন সিনিয়র তৃণমূল সাংসদ। কিন্তু আবার রাহুল স্তুতিতেই ফিরে এলেন আসানসোলের তৃণমূল সাংসদ। বিড়ম্বনায় তৃণমূল।