Nusrat Jahan

নুসরতকে তলব করল ইডি, ফ্ল্যাট দেওয়ার নাম করে প্রতারণার মামলায় হাজিরার নির্দেশ

নুসরতের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১৪-’১৫ সালে ৪০০-র বেশি প্রবীণ নাগরিক তাঁর সংস্থায় অর্থ জমা দেন। প্রত্যেকের কাছ থেকে সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা করে নেওয়া হয়েছিল। বদলে ফ্ল্যাটের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১১:১৬
TMC MP Nusrat Jahan is summoned by ED.

বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহান। —ফাইল চিত্র।

ফ্ল্যাট দেওয়ার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণার মামলায় বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহানকে তলব করল ইডি। আগামী মঙ্গলবার তাঁকে সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। নুসরতের পাশাপাশি ওই সংস্থার ডিরেক্টর রাকেশ সিংহকেও তলব করা হয়েছে বলে খবর ইডি সূত্রে। তাঁকে ইডি দফতরে হাজিরা দিতে হবে আগামী সোমবার।

Advertisement

নুসরতের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১৪-’১৫ সালে ৪০০-র বেশি প্রবীণ নাগরিক একটি সংস্থায় অর্থ জমা দেন। প্রত্যেকের কাছ থেকে সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা করে নেওয়া হয়েছিল। বদলে তাঁদের এক হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাট দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা না পেয়েছেন কোনও ফ্ল্যাট, না ফেরত পেয়েছেন টাকা। নুসরত ওই সংস্থার ‘অন্যতম ডিরেক্টর’ বলে দাবি করেছিলেন বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা।

শঙ্কুদেবের অভিযোগ, এ বিষয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। নুসরতের বিরুদ্ধে আদালতেও মামলা করা হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, আদালতের শমন পেয়েও হাজিরা দেননি সাংসদ তথা অভিনেত্রী। তাই শেষে প্রতারিতদের নিয়ে ইডি দফতরে গিয়ে অভিযোগ জানিয়ে আসেন শঙ্কুদেব। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী পরে এ-ও দাবি করেন, ‘প্রতারণার’ টাকা দিয়ে পাম অ্যাভিনিউতে নুসরত ফ্ল্যাট কিনেছেন।

অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর নুসরতের তরফে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করা হয়েছিল। সেখানে তিনি যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দেন। নুসরত স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, সংশ্লিষ্ট সংস্থাটির কাছ থেকে ঋণ নিয়ে তিনি ফ্ল্যাট কিনেছেন। সেই ঋণ সুদ-সহ ফিরিয়েও দিয়েছেন। ওই সংস্থার সঙ্গে তাঁর আর কোনও যোগাযোগ নেই। তিনি কোনও দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নন বলে দাবি করেন নুসরত। তবে সাংবাদিক সম্মেলনে এর বাইরে সাংবাদিকদের আর প্রায় কোনও প্রশ্নেরই জবাব তাঁকে দিতে শোনা যায়নি।

পরে আনন্দবাজার অনলাইনকে ওই সংস্থার আর এক ডিরেক্টর রাকেশ জানান, নুসরত তাঁদের সংস্থা থেকে কোনও ঋণ নেননি। নুসরতের ওই বক্তব্য শুনে তিনি স্তম্ভিত!

ফ্ল্যাট বিক্রি নিয়ে প্রতারণার এই মামলায় প্রথম থেকেই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন নুসরত। একটি পার্টিতে অভিনেতা যশ দাশগুপ্তের পাশে দাঁড়িয়ে জোর দিয়েই তিনি দাবি করেছিলেন, ইডি তাঁকে ডাকবে না।

বাংলায় বিভিন্ন আর্থিক দুর্নীতির মামলায় ইডি যথেষ্ট সক্রিয়। নিয়োগ মামলার একটি সূত্র ধরে শাসকদলের আর এক অভিনেত্রী সদস্য তথা যুব তৃণমূলের সভানেত্রী সায়নী ঘোষকেও কিছু দিন আগে তারা তলব করেছিল। এই পরিস্থিতিতে নুসরত কিন্তু কার্যত নিশ্চিত ছিলেন, ইডি তাঁকে তলব করবে না। কী ভাবে এত নিশ্চিত হয়েছিলেন তিনি? প্রশ্ন উঠেছিল। অনেকে এ-ও বলছিলেন, যশ এক বার বিজেপির টিকিটে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। ভোটে হেরে যাওয়ার পরে অবশ্য বিজেপির কোনও কর্মসূচিতে প্রকাশ্যে আর তাঁকে দেখা যায়নি। কিন্তু তিনি কখনও এমন ঘোষণাও করেননি যে, তিনি আর বিজেপিতে নেই। হতেই পারে, বিজেপির সঙ্গে যশের ‘যোগাযোগ’ এখনও অটুট। আর তার ভিত্তিতেই স্ত্রী নুসরতের গলায় আত্মবিশ্বাসের সুর। কিন্তু আদতে দেখা গেল, নুসরতের ‘ভবিষ্যদ্বাণী’ মিলল না। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করল কেন্দ্রীয় সংস্থা। তিনি নির্দিষ্ট দিনে ইডি দফতরে হাজিরা দেন কি না, সেটাই এখন দেখার।

আরও পড়ুন
Advertisement