নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় কুন্তল ঘোষের চিঠি কাণ্ডের তদন্তে সিবিআইয়ের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করলেন বিচারক।
সম্প্রতি সিবিআইয়ের যুগ্ম অধিকর্তা ও কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ)-কে যৌথ ভাবে তদন্ত করে ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক। কুন্তল ও তাঁর স্ত্রীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করার নির্দেশ দেন বিচারক। যদিও ইতিমধ্যেই আলিপুর আদালতে কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, এই তদন্তের বিষয়ে সিবিআই কোনও সহযোগিতা করছে না। যার প্রেক্ষিতে বিচারক ১ সেপ্টেম্বর এক নির্দেশনামায় সিবিআইয়ের গাফিলতির বিষয়টি উল্লেখ করেন। বিচারকের পর্যবেক্ষণ, ‘‘আদালতের নির্দেশ অগ্রাহ্য করছে সিবিআই। যা কোনও ভাবেই কাম্য নয়।”
সোমবার শুনানির সময়ে ওই প্রসঙ্গটি ওঠে। বিচারক সিবিআইয়ের আইনজীবীকে বলেন, “২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কুন্তল ঘোষের চিঠি কাণ্ডের রিপোর্ট জমা করতে হবে। না হলে শীর্ষ আদালত থেকে স্থগিতাদেশ নিয়ে আসতে হবে।”
সিবিআই সূত্রের দাবি, নিম্ন আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী তদন্ত করতে হবে বলে জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু, এ ক্ষেত্রে কলকাতা হাই কোর্ট না কি আলিপুরের বিশেষ আদালতের নির্দেশ মানা হবে, সে বিষয়ে তাঁরা ধন্দে বলে সিবিআই কর্তারা জানিয়েছেন। বিষয়টি সম্পর্কে স্পষ্ট নির্দেশ পেতে শীর্ষ আদালতেই আবেদন জানান তাঁরা। তার শুনানি এখনও হয়নি। তবে, শীর্ষ আদালতে এই আবেদন করা হয়েছে বলে আলিপুর বিশেষ আদালতে লিখিত ভাবে জানিয়েছে সিবিআই।
এ দিন সিবিআইয়ের আইনজীবীকে বিচারক বলেন, “শীর্ষ আদালতের কোনও নির্দেশ আপনার কাছে নেই। সেই কারণে মামলা এখন আমার আদালতেই রয়েছে। আপনি আবেদনের ক্ষেত্রে যে ধরনের ভাষা প্রয়োগ করেছেন, তা সঠিক নয়। নিম্ন আদালতকে অপমান করার কোনও অধিকার আপনার নেই।” সিবিআইয়ের আইনজীবী ক্ষমা চেয়ে বলেন, “ভাষা প্রয়োগের ক্ষেত্রে ভুল হয়েছে।” প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই চিঠি কাণ্ডে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে সিবিআই তৃণমূলের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও কুন্তলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে হাই কোর্টে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে।
সোমবার নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা-সহ সাত জনকে আলিপুর সিবিআই বিশেষ আদালতে পেশ করা হয়। ওই মামলার শুনানির সময়ে কুন্তলের চিঠির প্রসঙ্গটি ওঠে। শুনানির পরে জীবনকৃষ্ণ-সহ বাকি অভিযুক্তদের ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।