Jiban Krishna Saha

সিবিআই হেফাজতের মেয়াদ শেষ রবিবার, তার এক দিন আগেই কোর্টে হাজির করানো হল জীবনকৃষ্ণকে

গত মঙ্গলবার সিবিআই আদালতে হাজির করানো হয়েছিল জীবনকৃষ্ণকে। বিচারক ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। রবিবার সেই হেফাজতের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৩ ১৪:৫৮
image of Jiban Krishna Saha

নিয়োগ দুর্নীতিতে জীবনকৃষ্ণ সাহাকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। — ফাইল ছবি।

রবিবার সিবিআই হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার। এক দিন আগে শনিবার তাঁকে আদালতে হাজির করানো হল। নিয়োগ দুর্নীতিতে তাঁকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। ১১ মে পর্যন্ত বিচারবিভাগীয় হেফাজতে থাকবেন বলে জানাল সিবিআই আদালত।

গত মঙ্গলবার সিবিআই আদালতে হাজির করানো হয়েছিল জীবনকৃষ্ণকে। বিচারক ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। রবিবার সেই হেফাজতের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তার আগে শনিবারই আদালতে হাজির করানো হল তাঁকে।

Advertisement

শনিবার সকালে নিজাম প্যালেস (কলকাতায় যেখানে সিবিআইয়ের দফতর রয়েছে) থেকে তাঁর শারীরিক পরীক্ষার জন্য তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। নিজাম প্যালেস থেকে বেরোনোর সময় জীবনকৃষ্ণকে সাংবাদিকরা জিজ্ঞাসা করেন, দল কি তাঁর পাশে রয়েছে? প্রশ্ন শুনে বিধায়ক বলেন, ‘‘অবশ্যই আছে।’’ পাশাপাশি জীবনকৃষ্ণ দাবি করেছেন যে, তিনি কোনও অন্যায় করেননি।

শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে গত ১৭ এপ্রিল ভোরে মুর্শিদাবাদের বড়ঞার বিধায়ক তৃণমূলের জীবনকৃষ্ণকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সিবিআইয়ের একটি সূত্র থেকে জানা যায়, তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই জীবনকৃষ্ণ শিক্ষক নিয়োগের সঙ্গে যুক্ত। মুর্শিদাবাদ, বীরভূম ও অবিভক্ত বর্ধমান জেলায় শিক্ষক নিয়োগের জাল বিস্তার করেছিলেন তিনি বলে অভিযোগ। শুধু শিক্ষক নিয়োগই নয়, বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন শংসাপত্রের পাশাপাশি ভুয়ো শিক্ষাগত যোগ্যতার নথিও ব্যবস্থা করতেন তিনি বলে অভিযোগ।

তদন্তকারীদের দাবি, বড়ঞার আন্দির বাড়িতে শিক্ষক নিয়োগের জন্য রীতিমতো একটি ‘দফতর’ খুলে ছিলেন জীবনকৃষ্ণ। অভিযোগ, একাধিক এজেন্ট বা দালাল জীবনকৃষ্ণের কাছে চাকরি প্রার্থীর তালিকা নিয়ে আসতেন। সঙ্গে মোটা টাকাও। পরে রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতা দখলের পর শাসকদলের একাধিক নেতা ও মন্ত্রীদের ‘কাছের’ মানুষ হিসাবে পরিচিত হয়ে ওঠেন জীবনকৃষ্ণ। জীবনকৃষ্ণের নিজের ব্লক বড়ঞা ছাড়াও খড়গ্রাম, বীরভূমের সাঁইথিয়া এলাকার লোহাজং গ্রামেও বহু ‘দালাল’ ছিলেন। যাঁরা সরাসরি জীবনকৃষ্ণের সঙ্গে শিক্ষক নিয়োগের সঙ্গে জড়িত বলে দাবি পুলিশের একাংশের।

২০০৪ সালে জীবনকৃষ্ণ প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি পান। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, তার পর থেকেই জীবনকৃষ্ণ বদলে যেতে শুরু করেন। অভিযোগ, তারও কয়েক বছর পরে নানুরের একটি স্কুলে শিক্ষকের কাজে যোগ দিয়ে ২০১২-২০১৩ সাল নাগাদ অনুব্রত মণ্ডলের ‘ঘনিষ্ঠ’ হয়ে ওঠেন জীবনকৃষ্ণ। অনুব্রতের বাড়িতেও তাঁর অবাধ যাতায়াত ছিল বলে বিভিন্ন সূত্রে দাবি। শাসক শিবিরে যোগ দেওয়ার এক দশক পরে বড়ঞা কেন্দ্রে ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের হয়ে দাঁড়িয়ে জেতেন। তখনই তাঁর সম্পত্তি অনেক। বিধায়ক হওয়ার পরে যা আরও দ্রুত বাড়তে থাকে বলে দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement