নবান্নে প্রবেশের ক্ষেত্রে চালু হতে চলেছে বেশিকিছু কড়া নিয়ম। —ফাইল চিত্র।
১৩ ডিসেম্বর সংসদে জঙ্গিহানার ২২তম বর্ষপূর্তিতে, নিরাপত্তায় বড়সড় গলদ ধরা পড়েছিল নতুন সংসদ ভবনে। সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে রাজ্যের সদর দফতর নবান্নে প্রবেশের ক্ষেত্রে চালু হতে চলেছে বেশিকিছু কড়া নিয়ম, প্রশাসন সূত্রে এমনটাই খবর। এ বার নবান্নে প্রবেশের জন্য চালু হচ্ছে ‘অ্যাকসেস কার্ড’। রাজ্যের প্রশাসনিক সদর দফতরে কর্মরত সকল কর্মীকেই এই কার্ড দেওয়া হবে। এই কার্ডেই পূর্বনির্ধারিত থাকবে কে কোন তলা পর্যন্ত যেতে পারবেন।
নবান্ন সূত্রের খবর, নতুন বছরের প্রথম দিন ১ জানুয়ারি থেকেই এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু হবে। চিপ-যুক্ত কার্ডগুলিতে আগে থেকেই থাকবে কর্মী ও আধিকারিকদের নাম। এই সুরক্ষা ব্যবস্থা কার্যকর করতে নবান্নের প্রতিটি করিডরে দু’টি করে সিকিউরিটি গেটও বসানো হবে। এই বিশেষ গেটের গায়েই লাগানো থাকবে কার্ড সোয়াপিং মেশিন। সেখানে কার্ড ছোঁয়ালেই পরিচিতি জানা যাবে আর তার পরেই প্রবেশ করা যাবে নবান্নে। তবে সংশ্লিষ্ট তলে নির্দিষ্ট ব্যক্তির প্রবেশাধিকার থাকলে তবে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে গেটটি খুলবে।
তবে বেশকিছু আধিকারিক এবং পুলিশকর্মীদের কাজের স্বার্থে প্রতিটি তলেই যাতায়াতের প্রয়োজন হয়। তাঁদের দেওয়া হবে ‘অল ফ্লোর অ্যাকসেস কার্ড’। এই বিশেষ কার্ড ছাড়াও, নবান্ন’র সব প্রবেশ পথে রাখা হবে ‘ফেস রেকগনিশন ক্যামেরা’। পাশাপাশি রাজ্য প্রশাসনের তরফে কলকাতা পুলিশকে বলা হয়েছে, সব গেটে নজরদারি রাখতে। যে গেট দিয়ে ভিজিটর এন্ট্রি, সেখানে নিরাপত্তারক্ষীদের আরও দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে বলা হয়েছে। সঙ্গে নবান্নে যাঁরা ভিআইপিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসবেন, তাঁদের পরিচয়পত্র খতিয়ে দেখা হবে। দিনভর নজরদারি থাকবে পার্কিং লটের গাড়িগুলিতেও। একইসঙ্গে গোয়েন্দা ইনপুটেও বাড়তি গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সংসদে অযাচিত হানার ঘটনার পর দেশের সাংবিধানিক ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলি নিরাপত্তা আরও জোরদার করার পক্ষে দাবি উঠতে শুরু করেছে। তাই রাজ্য পুলিশ চায় রাজ্যের সদর দফতর-সহ যে কোনও স্থানের নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে। নবান্নের পাশাপাশি বিধানসভার নিরাপত্তা নিয়েও কলকাতা পুলিশের তৎপরতা বেড়েছে। কারণ, নবান্নের ১৪ তলায় রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতর। ১৩ তলায় বসেন মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব-সহ রাজ্য প্রশাসনের বরিষ্ঠ আধিকারিকরা। এ ছাড়াও অন্য তলাগুলিতে রয়েছে স্বরাষ্ট্র, অর্থ, পূর্ত, ভূমিসংস্কার, কৃষি ও সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতর। ওইসব তলে কয়েকজন মন্ত্রীও বসেন। এ ছাড়াও সংশ্লিষ্ট বিভাগের সচিব ও বেশকিছু উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকদেরও বসার বন্দোবস্ত রয়েছে নবান্নে। তাই এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভবনের নিরাপত্তা নিয়ে কোনওরকম গাফিলতি বরদাস্ত করতে নারাজ রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা।