রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলিতে সিসি ক্যামেরা বসানো-সহ নিরাপত্তার কাজ কত দূর এগোল সুপ্রিম কোর্টে তার রিপোর্ট জমা দিল রাজ্য। ওই রিপোর্টে জানানো হয়েছে, রাজ্যের ২৮টি হাসপাতালের জন্য ৬,১৭৮টি অতিরিক্ত সিসি ক্যামেরা বসানো হবে। ওই কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। ২৬ শতাংশ কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে বসানো হচ্ছে ৫৭৫টি অতিরিক্ত সিসি ক্যামেরা। এ ছাড়া কোন হাসপাতালে কত ডিউটি রুম ও শৌচাগার তৈরি করতে হবে, আলো বসানো হবে সেই তথ্যও শীর্ষ আদালতে জমা দিয়েছে রাজ্য।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের মামলার শুনানি ছিল। রাজ্যের কাছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ জানতে চায়, সরকারি হাসপাতালগুলিতে সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ কত দূর এগিয়েছে? রাজ্যের আইনজীবী রাকেশ ত্রিবেদী জানান, কাজ শুরু হয়েছে। আর কিছু সময় লাগবে। ৩১ অক্টোবরের মধ্যে কাজ হয়ে যাবে। রাজ্য জানায়, ডাক্তারদের পক্ষ থেকে ২৮টি হাসপাতালের জন্য অতিরিক্ত ৮৯৩টি ডিউটি রুম, ৭২৪টি শৌচাগার, ৪,৩৪৮টি আলো ও ৬,১৭৮টি সিসি ক্যামেরা বসানোর দাবি করা হয়েছে। তাঁদের সব দাবিই মেনে নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালগুলিতে আলো বসানোর কাজ ৩৩ শতাংশ হয়ে গিয়েছে। ২৫ অক্টোবরের মধ্যে তা সম্পূর্ণ করার চেষ্টা করা হবে। এখনও পর্যন্ত সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ ২৬ শতাংশ হয়েছে। ৪০ ও ৪৯ শতাংশ কাজ হয়েছে শৌচাগার নির্মাণ ও ডিউটি রুম নির্মাণের। ওই কাজগুলি চলতি মাসেই শেষ করা হবে বলে আদালতে জানায় রাজ্য।
সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল নিয়ে আলাদা রিপোর্ট দিয়েছে রাজ্য। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ওই হাসপাতালে অতিরিক্ত ৭১টি ডিউটি রুম, ৪৫টি শৌচাগার, ২৫০টি আলো, ৫৭৫টি সিসি ক্যামেরা বসানোর দাবি করা হয়েছে। সব দাবিই মানা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত অতিরিক্ত ২৫৫টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। আলো বসানোর কাজ ৪০ শতাংশ শেষ হয়েছে। সিবিআই তদন্ত করছে বলে ডিউটি রুমের কাজ করা যায়নি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ছাড়পত্র মিললে সেখানে কাজ শুরু করা হবে। আরজি কর হাসপাতালেও সব কাজ ৩১ অক্টোবরের মধ্যে শেষ করার কথা জানিয়েছে রাজ্য। যদিও সুপ্রিম কোর্ট ওই কাজ শেষের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। প্রধান বিচারপতি জানান, ওই সব কাজ রাজ্যকে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে শেষ করার চেষ্টা করতে হবে। ওই দিনই এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
গত ৯ অগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ওই চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। তাঁকে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ উঠেছে। ওই দিন থেকে প্রতিবাদে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিলেন রাজ্যের জুনিয়র ডাক্তারেরা। নির্যাতনের বিচারের পাশাপাশি রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং পরিকাঠামো উন্নয়নেরও দাবি তোলেন তাঁরা। সরকারি হাসপাতালগুলিতে সিসি ক্যামেরা বসানোর পাশাপাশি মহিলাদের জন্য আলাদা বিশ্রামঘর, শৌচালয়ের দাবি ছিল অন্যতম। গত ১৭ সেপ্টেম্বরের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যকে বলেছিল, পরের দু’সপ্তাহের মধ্যে জেলাশাসক, মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ এবং সিনিয়র বা জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা করে হাসপাতালে বিশ্রামাগার, শৌচাগার এবং সিসি ক্যামেরা বসানো নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সোমবারের শুনানিতে সেই বিষয়টিই ওঠে।