মঙ্গলবার বিকাশ ভবনের সামনে বিক্ষোভে আচমকাই বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন আন্দোলনকারী শিক্ষিকারা। —নিজস্ব চিত্র।
বদলির প্রতিবাদে আত্মহত্যার চেষ্টা করা শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে পারে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার বিকাশ ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা। পুলিশ তাঁদের বাধা দিতে গেলে আচমকাই বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তাঁরা। সঙ্গে সঙ্গে অসুস্থও হয়ে পড়েন শিক্ষিকারা। পুলিশ পাঁচ জনকেই হাসপাতালে নিয়ে যায়। ওই পাঁচ জনের মধ্যে চার জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। কিন্তু দাবিদাওয়া আদায়ের ক্ষেত্রে এ ভাবে আত্মহত্যা চেষ্টা করার ঘটনা ভাল ভাবে নেয়নি শিক্ষা দফতর। সরকার যে এ বিষয়ে কঠিন পদক্ষেপ করতে চলেছে তার ইঙ্গিত মিলেছে শাসকদলের এক প্রবীণ নেতার কথায়। তিনি বলেন, ‘‘দাবি আদায়ের জন্য এমন ঘটনা ঘটানো উচিত হয়নি।’’
এ ছাড়া, প্রশাসনও যে এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ করবে তারও ইঙ্গিত মিলেছে। সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেছে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের দল।
অসুস্থ পাঁচ শিক্ষিকাই ঐক্য মঞ্চের সদস্য। মঙ্গলবার বিকাশ ভবনের সামনে বিষ খাওয়ার আগে তাঁদেরই এক জন অণিমা নাথ বলেন, ‘‘শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু আমাদের বদলি করেছেন। আমরা দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় থাকি। অথচ আমাদের বদলি করা হয়েছে কোচবিহারে।’’ ছবি চাকী নামের এক শিক্ষিকাও বিকাশ ভবনের ওই আন্দোলনে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের যা বয়স, তাতে আমাদের অত দূরে গিয়ে চাকরি করা সম্ভব নয়। তাই সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এসেছি।’’ এর পরেই পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়। এবং সঙ্গে সঙ্গেই তাঁরা বিষ খাওয়ার চেষ্টা করেন।
এই পরিস্থিতিতে সরকার কড়া পদক্ষেপ নিলে ঐক্য মঞ্চ কী পদক্ষেপ করবে? সংগঠনের নেতা মইদুল ইসলামের সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। ওই শিক্ষিকাদের তিন জন আরজি কর এবং দু’জন এনআরএস হাসপাতালে ভর্তি। এই অবস্থায় সংগঠন তাঁদের সাহায্যার্থে কী ব্যবস্থা নেবে, তা নিয়ে সন্দিহান সকলেই। ওই সংগঠনের সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করতে পারে সরকার। দিন কয়েক আগেই নবান্নের সামনে ঐক্য মঞ্চের এই সদস্যরাই এমএসকে ও এসএসকে-র শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। তার পরেই তাঁদের বদলির সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা দফতর। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বাসিন্দা ওই পাঁচ শিক্ষিকাকে বদলি করা হয়েছে কোচবিহারের দিনহাটায়। কিন্তু মঙ্গলবার বিকাশ ভবনের সামনে যে ঘটনা ঘটল, তা নজিরবিহীন বলেই মনে করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে কড়া পদক্ষেপ করে এমন ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে আর না ঘটে, তা রুখতে চাইছে রাজ্য প্রশাসন।