গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
তাঁর বিরুদ্ধে জনরোষ রয়েছে। বিশেষ করে মহিলাদের। তবে আদালতে আরজি কর-কাণ্ডের মূল অভিযুক্তকে বিচার পাইয়ে দেওয়ার দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছেন এক মহিলাই। নাম কবিতা সরকার। তিনি আরজি কর-কাণ্ডের মূল অভিযুক্তের আইনজীবী। ইতিমধ্যে অভিযুক্তের জামিন চেয়ে আদালতের কাছে আবেদনও করেছেন কবিতা।
আরজি করের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। আপাতত আরজি কর-কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত তিনিই। আইন অনুযায়ী অভিযোগকারীর মতো বিচার পাওয়ার সমান অধিকারী অভিযুক্ত। এমনকি, অভিযুক্ত তাঁর পক্ষে সওয়াল করার জন্য আইনজীবীও পেতে পারেন। তাঁর বিরুদ্ধে যত জঘন্য অপরাধেরই অভিযোগ থাক, নিয়মের ব্যত্যয় হওয়ার উপায় নেই। সেই নিয়মে রাজ্য সরকারের লিগাল এড কাউন্সিল সিস্টেমের তরফে ওই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কবিতাকে।
শুক্রবার শিয়ালদহ কোর্টে আরজি করের অভিযুক্তের হয়ে সওয়াল করেন তিনি। কোনও অস্বস্তি হয়নি? আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে জানতে চাওয়া হয়েছিল কবিতার কাছে। জবাবে কবিতা বলেছেন, ‘‘আমার কাছে এটা একটা কাজ। লিগাল এডের আইনজীবী হিসাবে আমি বাকি মামলায় যেমন কাজ করি, এ ক্ষেত্রেও আইন মেনে সেই কর্তব্য পালন করছি এবং করব।’’
আরজি করের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় কোনও আইনজীবী অভিযুক্তের হয়ে মামলা লড়তে চাননি। আরজি কর মামলার প্রথম শুনানির দিন আদালতে তাঁর হয়ে সওয়াল করতে উপস্থিতও হননি কেউ। যে অভিযুক্তের হয়ে কেউ আইনি লড়াইয়ে নামতে রাজি নন, তাঁর জন্য এক মহিলা আইনজীবীকে মনোনীত করা কি সচেতন সিদ্ধান্ত? আনন্দবাজার অনলাইন এই প্রশ্ন করেছিল লিগাল এড ডিফেন্স কাউন্সিল সিস্টেমের প্রধান সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কাছে আইনজীবী দেওয়ার অনুরোধ এসেছিল। আগের দিন অভিযুক্তের হয়ে সওয়াল করার জন্য কোনও আইনজীবী ছিলেন না বলে আদালত থেকেই ওই নির্দেশ আসে। আমি নিজেও ওই মামলার দায়িত্বে রয়েছি। তবে সহকারী হিসাবে বেছে নিয়েছি কবিতা সরকারকে। তিনিই শিয়ালদহে অভিযুক্তের হয়ে সওয়াল করছেন।’’
আরজি করের ঘটনার পর প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে পথে নেমেছিলেন মহিলারা। রাত দখলের ডাক দিয়েছিলেন। সর্বত্র এই ঘটনায় অপরাধীর বিরুদ্ধে ঘৃণাও উগরে দিয়েছেন তাঁরা। তাই কবিতাকে একটি ব্যক্তিগত প্রশ্ন করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, লিগাল এডের সদস্য না হলেও কি কবিতা আরজি কর-কাণ্ডের অভিযুক্তের হয়ে লড়তেন? জবাবে একটুও না ভেবে কবিতা বলেছেন, ‘‘না। তা হলে লড়তাম না।’’