গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিলেন সন্দীপ ঘোষ। কিন্তু তাঁর সেই আর্জি শুনলই না ডিভিশন বেঞ্চ। শুক্রবার হাই কোর্টের বিচারপতি হরিশ টন্ডন এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ সন্দীপকে তাঁর আর্জি নিয়ে নিয়মিত বেঞ্চে যেতে বলে। সেক্ষেত্রে আগামী মঙ্গলবার আদালত খুললে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চেই আবেদন করতে হবে সন্দীপকে।
আরজি করের আর্থিক দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত সন্দীপ। শুক্রবার সেই মামলাতেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ। কিন্তু সন্দীপের আইনজীবী সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে যান। যুক্তি হিসাবে বলেন, সন্দীপ এই মামলার অভিযুক্ত। অথচ তাঁর বক্তব্য না শুনেই মামলাটিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দ্রুত শুনানির আর্জিও জানান তিনি। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চ সেই আর্জি শোনেনি।
আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি একাধিক অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে দু’টি মামলা দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে একটি করেছেন সন্দীপের প্রাক্তন সহকর্মী তথা আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি। অন্য মামলাটি করেন আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্ত।
এর মধ্যে আখতারের মামলাটিই উঠেছিল বিচারপতি ভরদ্বাজের বেঞ্চে। আখতারের আইনজীবী আদালতকে বলেছিলেন, ‘‘‘‘সন্দীপের বহু দুর্নীতির অভিযোগ রাজ্যের দুর্নীতি দমন শাখাকে জানিয়েও লাভ হয়নি। এক বছর পরে এখন সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে সিট গঠন করছে রাজ্য। তাই সিট-এ ভরসা না করে এ বিষয়ে ইডিকে দিয়ে তদন্ত করানো হোক।’’ শুক্রবার সেই মামলারই শুনানিতে আদালত আরজি করের আর্থিক দুর্নীতির তদন্তভার দেয় সিবিআইয়ের হাতে। বিচারপতি ভরদ্বাজ তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘‘যেহেতু আরজি করের মূল ঘটনাটির তদন্ত সিবিআই তরছে, তাই আর্থিক দুর্নীতির তদন্তও তারা করুক। কারণ একাধিক সংস্থা তদন্ত করলে বিষয়টি জটিল এবং সময়সাপেক্ষ হতে পারে।’’
এই নির্দেশকেই চ্যালেঞ্জ করেছেন সন্দীপ। তাঁর আইনজীবীর বক্তব্য, তিনি ওই মামলায় অভিযুক্ত হওয়া সত্ত্বেও তাঁর বক্তব্য না শুনেই ওই নির্দেশ দিয়েছে আদালত। প্রসঙ্গত, আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার তাঁর প্রাক্তন সহকর্মী সন্দীপের বিরুদ্ধে টেন্ডারে পক্ষপাতিত্ব, চিকিৎসাজনিত জৈব বর্জ্যের বেআইনি বিক্রি, কাটমানি নেওয়া এবং অর্থের বিনিময়ে চিকিৎসকদের পাশ করানোর অভিযোগ এনেছিলেন। এ ব্যাপারে সরব হওয়ায় তাঁকে আরজি কর থেকে বদলিও করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর আইনজীবী আদালতকে বলেন, ‘‘গত বছর ১১ জানুয়ারি হাসপাতালের মর্গ থেকে দেহ উধাও হয়ে যায়। সে ব্যাপারে মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগে জানানো হয়েছিল। তারা তলবও করেছিল সন্দীপকে। পরে ‘মেডিক্যাল ওয়েস্ট’ দুর্নীতি নিয়েও সন্দীপের বিরুদ্ধে রাজ্যের দুর্নীতি দমন শাখায় অভিযোগ জানানো হয়। কিন্তু কোনও অভিযোগেই কাজ হয়নি।’’