নবান্ন অভিযানে হস্তক্ষেপ করবে না বলে জানিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
২৭ অগস্টের নবান্ন অভিযানে হস্তক্ষেপ করল না কলকাতা হাই কোর্ট। ওই কর্মসূচি বাতিলের আবেদন জানিয়ে হাই কোর্টে মামলা করা হয়েছিল। আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে উচ্চ আদালতে। ফলে নবান্ন অভিযানে আপাতত আর বাধা রইল না। আদালত জানিয়েছে, এই ধরনের মিটিং-মিছিল নিয়ে যে নির্দেশিকা রয়েছে, তা নিয়ে একটি হলফনামা দিতে হবে রাজ্যকে। চার সপ্তাহ পরে এই মামলার আবার শুনানির সম্ভাবনা।
আগামী ২৭ অগস্ট, মঙ্গলবার একটি সংগঠনের তরফে নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে। আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার প্রতিবাদে ওই কর্মসূচির আয়োজন করা হচ্ছে। তা আটকাতে বৃহস্পতিবারই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য। শুক্রবার নতুন করে হাই কোর্টের বিচারপতি হরিশ টন্ডন এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে জনস্বার্থ মামলা করা হয়। মামলাটি করেন আইনজীবী দেবরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুনানিতে সেই মামলার আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। মামলাকারীর তরফে প্রশ্ন করা হয়, তবে কি কর্মসূচিতে সবুজ সঙ্কেত দিচ্ছে আদালত? ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, কর্মসূচির বিষয়ে তারা হস্তক্ষেপ করবে না।
রাজ্যের অভিযোগ ছিল, নবান্ন অভিযানের জন্য পুলিশের কাছ থেকে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। পুলিশের অনুমতি ছাড়া এই ধরনের কর্মসূচি কী ভাবে আয়োজন করা যায়, সেই প্রশ্নও আদালতে তোলা হয়েছিল। নবান্ন অভিযানের কর্মসূচিতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি যোগ দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল রাজ্য। ফলে কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে অশান্তির আশঙ্কাও করা হয়েছিল। কিন্তু আদালত এতে হস্তক্ষেপ করতে চায়নি।
রাজ্যের তরফে আদালতে জানানো হয়, এই ধরনের মিটিং-মিছিল কিংবা প্রতিবাদ কর্মসূচি নিয়ে রাজ্যের একটি নির্দেশিকা রয়েছে। তা পালন করা দরকার। নবান্ন, রাজভবনের মতো স্পর্শকাতর জায়গায় সাধারণত কর্মসূচির অনুমতি দেয় না পুলিশ। রাজ্যের আবেদন ছিল, পুলিশের অনুমতি নিয়ে বিকল্প জায়গায় কর্মসূচি করার নির্দেশ দিক আদালত। একই সঙ্গে আগামী ২৭ অগস্ট ইউজিসির পরীক্ষার কথাও আদালতে উল্লেখ করে রাজ্য। মামলাকারীর তরফে জানানো হয়, অতীতে নবান্নের সামনে বিভিন্ন কর্মসূচিতে বার বার অশান্তি হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে এই কর্মসূচিতেও। কিন্তু আদালত এই কর্মসূচিতে হস্তক্ষেপ করবে না বলে জানায়। প্রতিবাদ কর্মসূচি সংক্রান্ত নির্দেশিকা নিয়ে হলফনামা রাজ্যকে দিতে বলা হয়েছে। পরবর্তী শুনানির দিন হলফনামা জমা দিতে হবে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানিতে নবান্ন অভিযানের প্রসঙ্গ তুলেছিলেন রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় জানান, আইন নিজের পথে চলবে। কিন্তু শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচিতে কোনও ভাবেই বাধা দেওয়া যাবে না। যাঁরা প্রতিবাদ করবেন তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে পারবে না পুলিশ।