মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র ।
বাংলার বিনিয়োগকারীরা মনে রাখুন আপনারা দেশের অন্য রাজ্যে নয় পশ্চিমবঙ্গে আসছেন। এখানে আপনারা আমাদের পরিবারের সদস্য হবেন। তাই বাংলাকে নিজের ঘর ভাবুন। নিজের উপর আস্থা রাখুন। বিনিয়োগ করুন। শিল্পপতিদের বললেন মমতা।
দক্ষিণ -পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির প্রবেশ দ্বার বাংলা। এ খানে ২০০টিরও বেশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক রয়েছে।
‘‘বাংলার সরকার ক্রমশ এগোচ্ছে। বাংলার সূর্যোদয় হচ্ছে। প্রতি সকালে বাংলার নতুন উদয় হচ্ছে।’’ বললেন মমতা। জানালেন পশ্চিমবঙ্গই প্রথম রাজ্য, যার সরকার কোভিড পরিস্থিতি কাটিয়ে ফের শিল্প এবং বাণিজ্যে মন দিয়েছে। বাণিজ্য সম্মেলনের আয়োজন করেছে।
সামাজিক সুরক্ষায় বাংলা দেশের মধ্যে সেরা। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে সবাই বিনামূল্য চিকিৎসা পান। একশো দিনের কাজে আমরা দেশের সেরা। গ্রামীণ আবাসন নির্মাণে আমরা এক নম্বরে। আমরা ধান উৎপাদন থেকে ই-টেন্ডারে এক নম্বরে। মমতা বললেন, রাজস্ব আয় ৪ শতাংশ বেড়েছে। একাধিক প্রতিদেশী দেশের সীমান্ত বাংলার গায়ে। অতিমারি পরিস্থিতিতেও বাংলার জিডিপি বৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য।
আমরা বিশ্বমানের পরিকাঠামো তৈরি করেছি। আমাদের দল মহিলাদের ক্ষমতায়নে বিশ্বাসী। বলেন মমতা। শিল্পপতিদের সামনে মমতা লক্ষ্মীর ভান্ডার, স্বাস্থ্যসাথী থেক কন্যাশ্রীর সাফল্যের কথা শোনান।
আমাদের সরকার ইমাম ভাতা দেয়, পুরোহিতদের আর্থিক সাহায্য দেয়।
আদানির কথার সুর ধরেই মমতা বাংলার মেয়েদের অগ্রগতির কথা জানালেন শিল্প সম্মেলনের মঞ্চে।
বাংলায় ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগের ঘোষণা আদানির। চাকরি হবে ২০ থেকে ২৫ হাজার নতুন কর্মসংস্থান।
বাংলার নারীশক্তি বরাবরই সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে এসেছে। বাংলা নারী ক্ষমতায়নের উজ্জ্বল উদাহরণ। বললেন আদানি। প্রশংসা করলেন মুখ্যমন্ত্রীর কন্যাশ্রী প্রকল্পেরও। পথ সাথী, সবুজসাথীর মতো বাংলার প্রকল্পেরও প্রশংসা আদানির মুখে।
কলকাতায় এসে গর্ববোধ করছি। কলকাতা বরাবরই আমাকে মুগ্ধ করেছে। গোপাল কৃষ্ণ গোখলে বলেছিলেন, বাংলা যা আজ ভাবে ভারত কাল ভাবে। অত্যন্ত সত্যকথা। বাংলার দেশের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা রাখে।
গোটা বিশ্ব যখন মন্দায় আক্রান্ত তখন মমতার নেতৃত্বাধীন বাংলা ৭.২ শতাংশ সার্বিক বৃদ্ধির ম্যাজিক দেখিয়েছেন। বললেন শিল্পপতি নীরঞ্জন হিরা নন্দানি। বাংলায় ১৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ করবে নীরঞ্জনের সংস্থা।
বাণিজ্য সম্মেলনের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক গৌতম আদানির।
বিদেশি প্রতিনিধিদের মধ্যে রয়েছেন ৪৯ জন ব্রিটেনের প্রতিনিধি। রয়েছেন গৌতম আদানি, আজিম প্রেমজি, নীরঞ্জন হীরা নন্দানি, হর্ষ নেওটিয়া, সজ্জন জিন্দল, সঞ্জীব গোয়েঙ্কারা।
রাজ্যে শিল্প সম্মেলন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগের প্রশংসা করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। বললেন, বাংলা পূর্ব ভারতের ইকনমিক হাব। মানব সম্পদেও বাংলা অনেক এগিয়ে। বাংলা ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতিরও কেন্দ্র। বাংলার ক্ষমতা আছে দেশের অর্থনৈতিক মানচিত্র বদলে দেওয়ার। ধনখড় বলেন, ‘‘বাংলা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে।’’
রাজ্যপাল তাঁর বক্তৃতায় কেন্দ্র এবং রাজ্যের একসঙ্গে কাজ করার পরামর্শ দিয়ে বললেন, তাতেই বাংলার উন্নতি হবে। বিজিবিএসের মঞ্চে ধনখড় জানালেন, রাজনীতি এবং উন্নয়ন পৃথক রাখা উচিত।
১৯টি দেশ থেকে বাংলার বাণিজ্য সম্মেলনে যোগ দিলেন ২৫০ জন প্রতিনিধি।
আদানি গোষ্ঠীর কর্ণধার গৌতম আদানির আসা কার্যত নিশ্চিত। এ ছাড়া হীরানন্দানি, জিন্দল, চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর কর্ণধারেরা থাকতে পারেন। আসতে পারেন উইপ্রো কর্ণধার আজিম প্রেমজি, রিলায়্যান্স গোষ্ঠীর মুকেশ অম্বানীও। বিদেশের প্রতিনিধিদল আসছে আমেরিকা, দক্ষিণ কোরিয়া, কেনিয়া, চিন, বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড, জাপান-সহ ১৪টি দেশের প্রতিনিধিদল আসছে সম্মেলনে।
প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, বিনিয়োগে বাংলা এখন আকর্ষণীয় গন্তব্য বলেই এই সম্মেলনের মঞ্চে উপস্থিত থাকবেন দেশের প্রথম সারির শিল্পপতিদের অনেকে। যোগ দিচ্ছে অনেকগুলি দেশের প্রতিনিধিদল।
করোনা-কাল পেরিয়ে দু’বছর পরে ফের আয়োজিত হতে চলেছে দু’দিনের বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন (বিজিবিএস)। বুধবার তার সূচনা রাজারহাটে বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে।