শাহজাহান নিয়ে হাই কোর্টের নির্দেশ বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
সন্দেশখালি মামলায় কলকাতা হাই কোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছিল, তাতে হস্তক্ষেপ করল না সুপ্রিম কোর্ট। শেখ শাহজাহানকে পুলিশের হেফাজত থেকে সিবিআইয়ের হেফাজতে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। সন্দেশখালিতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) আধিকারিকদের আহত হওয়ার ঘটনাতেও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। এই দুই নির্দেশই সোমবার বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। তবে হাই কোর্টের রায়ের কিছু অংশ পরিবর্তন করেছে শীর্ষ আদালত। বিচারপতি বিআর গাভাইয়ের বেঞ্চ জানিয়েছে, রায়ে পুলিশ এবং রাজ্য সম্পর্কে যে পর্যবেক্ষণ রেখেছে হাই কোর্ট, তা বাদ দিতে হবে।
গত ৫ মার্চ কলকাতা হাই কোর্ট নির্দেশ দেয়, সন্দেশখালিতে ইডি আধিকারিকদের উপর হামলার তদন্ত করবে সিবিআই। ওই দিন বিকেলের মধ্যেই শাহজাহানকে তুলে দিতে হবে সিবিআইয়ের হাতে। যে দিন কলকাতা হাই কোর্ট এই নির্দেশ দেয়, সে দিনই সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল রাজ্য। কিন্তু শুনানি হয়নি। ৬ মার্চ সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য জানায়, নিয়ম মেনে লিখিত ভাবে মামলা করা হয়েছে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, চাইলে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে যেতে পারে রাজ্য। সোমবার সু্প্রিম কোর্ট জানাল, সন্দেশখালিকাণ্ডে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশই বহাল থাকবে। অর্থাৎ সিবিআই হেফাজতেই থাকবেন শাহজাহান। এবং ইডি আধিকারিকদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনারও তদন্ত করবে সিবিআই।
গত ৫ জানুয়ারি রেশন মামলার তদন্তে সন্দেশখালির সরবেড়িয়ায় শাহজাহানের বাড়িতে গিয়ে হামলার মুখে পড়েন ইডি আধিকারিকেরা। হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তিন ইডি আধিকারিককে। পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের কাছ থেকে ফোন, ল্যাপটপ এবং নগদ টাকা কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনার পর ন্যাজাট থানার পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা রুজু করে। পরে ইডিও একটি অভিযোগ জানায় ওই থানায়। অন্য দিকে, শাহজাহানের বাড়ির কেয়ারটেকার ইডির বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করে। এর মধ্যে ইডির দায়ের করা মামলা এবং পুলিশের স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে দায়ের করা মামলার মধ্যে পরস্পরবিরোধিতা পায় কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের বেঞ্চ। নির্দেশ দেওয়া হয়, সিবিআই এবং রাজ্য পুলিশ যৌথ ভাবে সিট গঠন করে এই মামলার তদন্ত করবে। কিন্তু সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় ইডি। রাজ্যও ওই নির্দেশের বিরোধিতা করে মামলা করে। গত ৭ ফেব্রুয়ারি সিট গঠন এবং তদন্তের উপর স্থগিতাদেশ দেয় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। ৫ মার্চ হাই কোর্টের নির্দেশ ছিল, বিকেল সাড়ে ৪টের মধ্যে শাহজাহানকে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিতে হবে। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল রাজ্য। কলকাতা হাই কোর্টের সেই নির্দেশে হস্তক্ষেপ করল না সুপ্রিম কোর্ট।