(বাঁ দিক থেকে) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। —ফাইল চিত্র।
বদলার রাজনীতি করছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকার যোগ্যতাই হারিয়ে ফেলেছেন তিনি। বুধবার তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সভার মঞ্চ থেকে করা মমতার মন্তব্যের পর তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ চেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লিখলেন পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন তিনি। অভিযোগ, রাষ্ট্রবিরোধী মন্তব্য করেছেন মমতা।
বুধবার টিএমসিপি-র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মেয়ো রোডের জনসভায় উপস্থিত ছিলেন মমতা। সেখানে আরজি কর প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি একসময় বলেন, ‘‘আমরা বলেছিলাম বদলা নয়, বদল চাই। আজ বলছি, ওই কথা নয়। আজ বলছি, যেটা করার দরকার, সেটা আপনারা ভাল বুঝে করবেন।’’ মমতার এই মন্তব্যই শাহকে লেখা চিঠিতে উদ্ধৃত করেছেন সুকান্ত। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর নির্লজ্জ মন্তব্যের প্রতি আমি আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। এর মাধ্যমে তিনি বদলার রাজনীতিকেই প্রশ্রয় দিচ্ছেন।’’ মমতার আরও একটি মন্তব্য উদ্ধৃত করেছেন সুকান্ত। বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী নির্লজ্জ ভাবে রাষ্ট্রবিরোধী মন্তব্য করেছেন এবং বলেছেন, ‘বাংলায় আগুন জ্বললে অসম, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা এবং দিল্লিও জ্বলবে।’ এই মন্তব্য আপত্তিকর। কোনও সাংবিধানিক পদে থাকা ব্যক্তি এই মন্তব্য করতে পারেন না। মানুষকে ভয় দেখানো এবং হিংসা ছড়ানোর জন্য এই মন্তব্য করেছেন তিনি।’’ এর পরেই সুকান্ত লিখেছেন, ‘‘মমতা এমন গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন। অবিলম্বে তাঁর পদত্যাগ করা উচিত।’’
সুকান্তের বক্তব্য, যে কোনও সাংবিধানিক পদে থাকা ব্যক্তির উচিত শান্তির পক্ষে কথা বলা। মমতা তা করেননি। তাঁর অবস্থান বাংলার মানুষের পক্ষে বিপজ্জনক হতে পারে বলে আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী। শাহের কাছে তাঁর আর্জি, ‘‘এই মন্তব্যকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে বাংলায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে আপনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করুন।’’
উল্লেখ্য, আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্রসমাজ’ নামের একটি সংগঠন নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল। মমতার পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান ওঠে সেই মিছিল থেকে। বিজেপি ওই কর্মসূচিকে সমর্থন করেছিল। মিছিলকে কেন্দ্র করে কলকাতা এবং হাওড়ায় দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল একাধিক এলাকা। তার পর বুধবারই মেয়ো রোডের জনসভা থেকে ‘বদলা নয়’ স্লোগান বদলের ডাক দিয়েছেন মমতা।