স্পট-বিল্ড পেলিক্যান। ছবি: সবুজ ধাড়া।
জলাশয়ের পাড়ে গাছের উপর বসে থাকা বড়সড় পাখিটাকে দেখে মুহূর্তে হকচকিয়ে গিয়েছিলেন সবুজ ধাড়া। সময় নষ্ট না করে চটপট কয়েকটা ছবি তুলে ফেলেন তিনি এবং সঙ্গী চিরঞ্জিত গোলুই। আর তা পাঠিয়ে দেন তাঁদের পাখি দেখার আর এক সঙ্গী শোভন মাইতিকে। এর পর হুগলির খানাকুলের তিন প্রকৃতি-আলোকচিত্রীর চেষ্টা চলে পাখিটির পরিচয় খুঁজে বার করার। আর তাতেই উঠে এল এক চমকপ্রদ তথ্য! ১৭৯ বছর পরে পশ্চিমবঙ্গে সন্ধান মিলেছে স্পট-বিল্ড পেলিক্যানের!
সবুজ জানাচ্ছেন, গত সপ্তাহে খানাকুলের অদূরে রামনগর গ্রামের একটি জলাশয়ে পাখিটিতে ক্যামেরাবন্দি করেন তিনি। এর আগে কখনও ওই এলাকায় এমন পাখি দেখা যায়নি। তাঁর কথায়, ‘‘প্রাথমিক ভাবে বুঝেছিলাম, পাখিটি পেলিক্যানের কোনও প্রজাতি। পরে ছবি মিলিয়ে দেখে নিঃসংশয় হয়েছিলাম।’’
পাখি বিশারদ শান্তনু মান্না জানাচ্ছেন, এশিয়াটিক সোসাইটির পুরনো তথ্য অনুযায়ী ১৮৪২ সালে কলকাতার এক বাজারে বিক্রি হতে আসা স্পট-বিল্ড পেলিক্যানের একটি নমুনা সংগ্রহ করেছিলেন ব্রিটিশ পক্ষীবিদ এডওয়ার্ড ব্লাইথস। তার পরে পশ্চিমবঙ্গে এই পাখির উপস্থিতির প্রমাণ মেলেনি। ষাটের দশকে জুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার সমীক্ষকেরা পূর্ব কলকাতার জলাভূমিতে দূর থেকে একটি পেলিক্যানকে উড়ে যেতে দেখেছিলেন। প্রথমিকভাবে সেটিকে স্পট-বিল্ড পেলিক্যান মনে করেছিলেন তাঁরা।
তিনি বলেন, ‘‘ভারতে পেলিক্যানের তিনটি প্রজাতির সন্ধান মেলে। গ্রেট হোয়াইট (রোজি), ডালমেশিয়ান এবং স্পট-বিল্ড। গত দেড়শো বছরে মোট ছ’বার রোজি পেলিক্যান পশ্চিমবঙ্গে দেখা গিয়েছে। শেষ বার ২০১৩ সালে।’’ তিনি জানান, স্পট-বিল্ড পেলিক্যান মূলত শ্রীলঙ্কা দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন রাজ্য, ওড়িশার চিলিকা এবং অসমের কাজিরাঙায় বাসা বাঁধে।