MLA Manik Bhattacharya’s medical bill

কারাবন্দী থাকার সময়ের মেডিকেল বিল জমা দেওয়া নিয়ে বিধায়ক মানিকের সঙ্গে কথা বললেন স্পিকার

মঙ্গলবার দুপুরে বিধানসভায় ডেকে বিধায়ক মানিক সঙ্গে আলাদা করে কথা বললেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার এই সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলতে স্পিকার বিধানসভায় ডেকে পাঠিয়েছিলেন প্রেসিডেন্সি জেলের সুপারকে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:২২
(বাঁ দিকে)বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। মানিক ভট্টাচার্য (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে)বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। মানিক ভট্টাচার্য (ডান দিকে)। —ফাইল ছবি।

কারাবন্দি থাকাকালীন তাঁর মেডিকেল বিল বিধানসভায় জমা দিয়েছেন পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। যা নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। মঙ্গলবার দুপুরে বিধানসভায় ডেকে বিধায়ক মানিকের সঙ্গে আলাদা করে কথা বললেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার এই সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলতে স্পিকার বিধানসভায় ডেকে পাঠিয়েছিলেন প্রেসিডেন্সি জেলের সুপারকে। তাঁর সঙ্গে বিল সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলার পরদিনই মানিককে ডেকে আলাদা করে কথা বলেছেন তিনি। বিধানসভায় ওই বৈঠকের পর বিল বির্তক আরও ইন্ধন পেয়েছে। বন্ধ ঘরে স্পিকার-বিধায়কের দীর্ঘক্ষণ বৈঠকের পর বিল আদৌ বিধানসভায় টিএ-ডিএ সেকশন অনুমোদন করবে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।

Advertisement

বিধানসভা সূত্রের খবর, সম্প্রতি মানিক কয়েকটি মেডিক্যাল বিল বিধানসভার টিএ-ডিএ বিভাগে জমা দেন। তা খতিয়ে দেখার পর একটি বিল নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তৎক্ষণাৎ বিষয়টি জানানো হয় বিধানসভার সচিবালয়ে। বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে তা স্পিকারের কাছে পাঠানো হয়। বিধানসভা সূত্রের খবর, মানিক যে সব বিল বিধানসভায় জমা দিয়েছিলেন, তার একটি তাঁর কারাবন্দি থাকাকালীন সময়ের। নিয়মানুযায়ী, কোনও বন্দি জেলে থাকাকালীন তাঁর চিকিৎসার যাবতীয় দায়ভার জেল কর্তৃপক্ষেরই। তাই সেই সময় জেলে কোনও চিকিৎসা হলে তা বহন করার দায় অন্য কারও নেই। সেই সূত্রেই বিধানসভার অন্দরে প্রশ্ন উঠছে, কারাবন্দি থাকার সময় চিকিৎসার খরচের বিল মানিক কী ভাবে বিধানসভায় জমা দিতে পারেন? তবে বিধানসভার অন্য একটি সূত্রের বক্তব্য, মানিক যদি জেলযাত্রার আগে কোনও রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন, ধারাবাহিক ভাবে সেই রোগের চিকিৎসা চলতে থাকে এবং তিনি জেলে যাওয়ার পরেও বাইরে থেকে সেই সংক্রান্ত চিকিৎসা বা ওষুধের বন্দোবস্ত তাঁর পরিবারকে করতে হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে বিধানসভার বিধায়ক হিসেবে মানিক নিজের সেই মেডিক্যাল বিলও জমা দিতেই পারেন। প্রসঙ্গত, বিধানসভার তরফে বিলের সাপেক্ষে বিধায়কদের চিকিৎসা সংক্রান্ত খরচ বহন করা হয়। সেই জন্যেই বিল জমা দেওয়া।

বিধানসভার অন্য একটি সূত্র জানাচ্ছে, মেডিক্যাল বিলে ‘অসঙ্গতি’ ধরা পড়ার পরেই স্পিকার মানিককে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। বিল বিতর্ক প্রসঙ্গে মানিক বলেন, ‘‘বিধানসভা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কিছু বলার থাকলে স্পিকার বলবেন। তাই স্পিকারকে জিজ্ঞাসা করুন।’’ যদিও স্পিকার বলেছেন, ‘‘বিধায়ক কী বিল জমা দিয়েছেন এই বিষয়ে আমি কোনও কথা বলব না। এটি বিধানসভার অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমার কাছে অনেক বিধায়কই আসেন, এবং তাদের সমস্যার কথা বলেন। সুতরাং কোন বিধায়ক কী বিষয় নিয়ে আমার কাছে আসছেন, তা একান্ত বিধানসভার বিষয়। তাই আমি এ বিষয়ে কিছুই জানাতে পারব না।’’

উল্লেখ্য, পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক এবং পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত। ২০২২ সালের ১১ অক্টোবর এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) তাঁকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর তিনি প্রায় ২৩ মাস প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি ছিলেন। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে কলকাতা হাই কোর্ট শর্তসাপেক্ষে তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছে। ছাড়া পেয়েই মানিক বিধানসভায় নিয়মিত যাতায়াত শুরু করেছেন। অধিবেশন ছাড়াও নিয়মিত যোগ দিচ্ছেন বিধানসভার কমিটির বৈঠকে। তার মধ্যেই ওই বিল নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

Advertisement
আরও পড়ুন