সঞ্জয় রায়। —ফাইল চিত্র।
আর জি কর কাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত সঞ্জয় রায় বিচারপর্বে দাবি করেছিল, গত ৮ অগস্ট ঘটনার আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের সালুয়া থেকে ফিরেছিল সে। সেখানে ‘রক ক্লাইম্বিং’ প্রশিক্ষণে চোট পেয়েছিল বলেও জানিয়েছিল। সালুয়ার ইএফআর ক্যাম্পে অবশ্য সঞ্জয়ের প্রশিক্ষণের রেকর্ড নেই। কারণ,সিভিক-কর্মীদের সেখানে প্রশিক্ষণ হওয়ার কথাই নয়।
খড়্গপুরের সালুয়ায় রয়েছে ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার রাইফেলস (ইএফআর) ক্যাম্প। সেখানে সব মিলিয়ে তিনটি পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। শিয়ালদহ দায়রা আদালতে বিচারকের প্রশ্নের জবাব দেওয়ার মাঝেই সালুয়ার কথা তুলেছিল সঞ্জয়। তার শরীরে ক্ষতচিহ্নের সঙ্গে ধর্ষণের যোগ নেই দাবি করে বলেছিল, গত ৫ অগস্ট কলকাতা পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইনস্পেক্টর অনুপ দত্তের সঙ্গে সালুয়ায় গিয়েছিল সে। সেখানে ‘রক ক্লাইম্বিং’ প্রশিক্ষণ নেওয়ার সময় পড়ে গিয়ে শরীরের নানা জায়গায় ছড়ে যায়।
সালুয়ায় ‘ক্লাইম্বিং’ প্রশিক্ষণের সুযোগ রয়েছে ‘সাবসিডিয়ারি ট্রেনিং সেন্টার’ (এসটিসি) এবং ‘পুলিশ ট্রেনিং স্কুল’ (পিসিএস)-এ। সালুয়া পিটিএসের এক প্রশিক্ষক বলেন, “আমাদের এখানে শুধু পুলিশের প্রশিক্ষণ হয়। সিভিক-কর্মীদের প্রশিক্ষণের প্রশ্ন নেই।”
ক্যাম্প সূত্রে জানা গিয়েছে, গত অগস্টে সালুয়ায় কলকাতা পুলিশে সদ্য নিযুক্তদের প্রশিক্ষণ চলছিল। তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন ‘কলকাতা পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটি’র কয়েক জন। সম্ভবত তাঁদের সঙ্গে ছিল সঞ্জয়। এসটিসি-র এক মুখ্য প্রশিক্ষক বলেন, “অগস্টে কলকাতা পুলিশের ওই প্রশিক্ষণের পরে, আর প্রশিক্ষণ হয়নি। আর জি কর কাণ্ডের পরে অনেকে বলছিল, সঞ্জয়কে তারা দেখেছে। কিন্তু আমি চিনতে পারিনি।’’ তিনি আরও জানান, ‘‘ওয়েলফেয়ারের কাজে এসে কেউ ক্লাইম্বিং প্রশিক্ষণের অনুমতি পাবে না। সে জন্য আমাদের ডিআইজি তথা অধ্যক্ষের অনুমতি লাগে। আর কেউ পড়ে জখম হলে, জানতেই পারতাম। তেমন কিছু ঘটেনি।’’
ক্যাম্পের আবাসিকদের একাংশ জানান, অগস্ট মাস বর্ষার মরসুম হওয়ায় তখন রক ক্লাইম্বিং প্রশিক্ষণ অনেক সময়ই বন্ধ থাকে। ফলে, সঞ্জয়ের দাবি নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে ডিআইজি (সালুয়া ইএফআর) স্বপন সরকার বলেন, “বিষয়টি জানা নেই। আদালত জানতে চাইলে, খোঁজ নেব।”