বাল্যবিবাহ রোধ বিষয়ে ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা। সিউড়ি মিউনিসিপ্যাল গার্লস হাই স্কুলে। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, বাল্য বিবাহের ক্ষেত্রে বীরভূম স্বাস্থ্য জেলা এবং রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার নাম উপরের সারিতে রয়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে নানা পদক্ষেপ করার ভাবনা রয়েছে জেলা প্রশাসনের। সেই ভাবনার অঙ্গ হিসাবেই সিউড়ি মহকুমার তিনটি পুরসভা এলাকায় থাকা সব হাই স্কুলে (যেখানে ছাত্রীরা রয়েছে) একটি বিশেষ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে সদর মহকুমাশাসকের দফতরের তরফ থেকে।
বাল্যবিবাহ বিরোধী বার্তার উপরে ছবি আঁকা, স্লোগান লেখা, প্রবন্ধ রচনা, এবং একাঙ্ক নাটক উপস্থাপনা থাকছে এই প্রতিযোগিতায়। আজ, বুধবার এই প্রতিযোগিতার শেষ দিন। বিভিন্ন স্কুল থেকে যে সব ছবি, স্লোগান, প্রবন্ধ ও নাটকের ভিডিয়ো জমা পড়বে, সেগুলিকে মহকুমাশাসকের তৈরি করা একটি কমিটি খতিয়ে দেখে সেরাদের পুরষ্কৃত করা হবে। সিউড়ি সদর মহকুমা বিভাগের এক আধিকারিক শান্তনু দাস জানান, বাল্যবিবাহ নিয়ে জেলা প্রশাসনের একাধিক বৈঠকে একটি বিষয় বারবার উঠে এসেছে। তা হল, স্কুল স্তরেই ছাত্রীদের বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে মতামত গড়ে তুলতে হবে। স্কুলছাত্রীদের আকর্ষণ করতে গেলে আলোচনাসভা বা দীর্ঘ বক্তৃতার তুলনায় হাতে-কলমে কাজের দায়িত্ব দেওয়ার কার্যকারিতা অনেক বেশি। সেই ভাবনা থেকেই এই উদ্যোগ।
‘বাল্য বিবাহ’ থিম নিয়ে গত ৮ জানুয়ারি থেকে এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। স্কুল স্তরে বুধবারের মধ্যে এই প্রতিযোগিতা শেষ করতে হবে। সূত্রের খবর, ২৮ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিযোগিতার মূল্যায়নের জন্য সমস্ত ছবি ও ভিডিয়ো জমা করতে হবে সদর মহকুমাশাসকের দফতরে। সব স্কুলের নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীরা এই প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়েছে। প্রতিযোগিতার পাশাপাশি কোনও স্কুলের কোনও ছাত্রী যদি বাল্যবিবাহ রোধে বিশেষ কোনও ভূমিকা পালন করে থাকে, তা হলে তাকে আলাদা করে সম্মাননা জানানোর পরিকল্পনা রয়েছে মহকুমাশাসকের।
ইতিমধ্যেই বেশ কিছু স্কুল প্রতিযোগিতা আয়োজন করে সেই সংক্রান্ত ছবি ও ভিডিয়ো পাঠিয়েও দিয়েছে। সদর মহকুমাশাসক সুপ্রতীক সিংহ বলেন, “বীরভূম জেলা বাল্যবিবাহের তালিকায় উপরের দিকে আছে, এটা আমাদের সকলের কাছেই লজ্জার বিষয়। সকলে মিলেই আমরা এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে বদ্ধপরিকর। আমাদের অনুমানের তুলনায় অনেক বেশি সংখ্যায় ছাত্রীরা এই প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়েছে। এই ধরনের কর্মসূচি পালনের ফলে সচেতনতা আরও বাড়বে বলেই আমাদের বিশ্বাস।”